Advertisement
২৪ মার্চ ২০২৩
HS Exam

HS Exam 2022: বাকিরা স্কুলছুট, সবেধন পরীক্ষার্থী নিয়েই উচ্চ মাধ্যমিক

শকুড়া উত্তর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক কাঞ্চন পাল বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থী একজন হলেও সরকারি নিয়ম মেনে পরীক্ষাকেন্দ্রে সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দিগন্ত মান্না
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২২ ০৫:৪০
Share: Save:

উচ্চ মাধ্যমিকে এ বার হোম সেন্টার। পাঁশকুড়ার পুলশিটা ভোলানাথ বিদ্যানিকেতনের পরীক্ষাকেন্দ্রে সেই স্কুলের একজনই উচ্চ মাধ্যমিক দিচ্ছেন। করোনা অতিমারিতে স্কুল বন্ধ থাকাকালীন অধিকাংশই স্কুলছুট হয়ে গিয়েছে। ছাত্ররা কাজে জুটেছে, আর ছাত্রীরা বসেছে বিয়ের পিঁড়িতে।

Advertisement

শিক্ষায় আগুয়ান জেলা পূর্ব মেদিনীপুর। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকে পাশের হারে এই জেলার স্থান বরাবরই প্রথম দিকে। সেখানে এই ঘটনা আলোড়ন ফেলেছে। পাঁশকুড়ার ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক চঞ্চলকুমার মাইতি বললেন, ‘‘দ্বাদশ শ্রেণিতে ১২ জন পড়ুয়া ছিল। লকডাউনে ১০ জন ছাত্র কাজে চলে যায়। একজন ছাত্র এবং একজন ছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণ করেছিল। কিন্তু কিছুদিন আগে ছাত্রীটিরও বিয়ে হয়ে গেল।’’

হাউর গ্রাম পঞ্চায়েতের পুলশিটা ভোলানাথ বিদ্যানিকেতনে ছাত্র সংখ্যা সব মিলিয়ে ৬৭২। এ বছর এই স্কুল থেকে মাধ্যমিক দিয়েছে শতাধিক পড়ুয়া। একাদশ-দ্বাদশে বিজ্ঞান বিভাগে পদার্থবিদ্যা পড়ার সুযোগ না থাকায় অনেকেই অন্য স্কুলে ভর্তি হয়। তবে ভোলানাথ বিদ্যানিকেতন থেকে বছরে গড়ে ২০-২২জন উচ্চ মাধ্যমিক দিতেন। পাঁশকুড়ার রাতুলিয়া হাইস্কুলে হত পরীক্ষাকেন্দ্র।

এ বার সংখ্যাটা একে নামল কেন?

Advertisement

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, লকডাউন শুরুর পরপরই স্কুলছুট বাড়তে থাকে। একটা বড় অংশের ছাত্র কাজে চলে যায়। বিয়ে হয়ে যায় বেশ কিছু নাবালিকা ছাত্রীর। শেষ পর্যন্ত দ্বাদশ শ্রেণিতে ১১ জন ছাত্র ও একজন ছাত্রী ছিল। তবে তাদের মধ্যেও ১০ জন ছাত্র একে একে কাজের জোগাড় করে পড়া ছাড়ে। তারা যাতে অন্তত উচ্চ মাধ্যমিকে বসে, সেই আর্জি নিয়ে পরীক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়েছিলেন শিক্ষকরা। কিন্তু অধিকাংশ ছাত্রকেই বাড়িতে পাওয়া যায়নি। রাজি করানো যায়নি অভিভাবকদেরও। শেষে উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য একজন ছাত্র এবং একমাত্র ছাত্রীটি ফর্ম পূরণ করেছিলেন। তবে সম্প্রতি ওই ছাত্রীর বিয়ে হয়ে যায়। তাঁকেও বুঝিয়ে পরীক্ষায় বসানো যায়নি বলে জানাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক।

পাঁশকুড়ার বিডিও ধেন্দুপ ভুটিয়া বলছেন, ‘‘বিষয়টি আগে নজরে এলে উদ্যোগী হতাম।’’ তিনি জানান, স্কুলছুট কমাতে সম্প্রতি প্রতি সপ্তাহে স্কুলে পড়ুয়াদের হাজিরা সংক্রান্ত রিপোর্ট সংগ্রহ শুরু হয়েছে। এই প্রক্রিয়া চলবে। ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেড মিস্ট্রেসেস’-এর তমলুক মহকুমা সম্পাদক নির্মলেন্দু ঘড়ার আবার মত, ‘‘সমস্যা সমাধানে স্কুলকেই অগ্রণী হতে হবে। অভিভাবক, ছাত্র, শিক্ষকদের সম্পর্ক গভীর করতে হবে।’’

এ দিকে, পরীক্ষার্থী একজন হলেও আয়োজনে কোনও খামতি নেই। পাঁশকুড়া থানা থেকে একটি প্রশ্ন নিয়েই সরকারি গাড়ি যাচ্ছে পরীক্ষাকেন্দ্রে। থাকছেন দু’জন পরিদর্শক,একজন বিশেষ পর্যবেক্ষক, দু'জন আশাকর্মী এবং দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ারও। পরীক্ষা শেষে পুলিশ পাহারায় সরকারি গাড়ি নিয়ে আসছে একটি উত্তরপত্রই। পাঁশকুড়া উত্তর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক কাঞ্চন পাল বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থী একজন হলেও সরকারি নিয়ম মেনে পরীক্ষাকেন্দ্রে সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.