দত্তাবাদের স্বর্ণকার খুনে রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মণের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল বিধাননগর আদালত। কলকাতা হাই কোর্টের বেঁধে দেওয়া ৭২ ঘণ্টার সময় পেরিয়ে গেলেও নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি তিনি। তাই তাঁর বিরুদ্ধে ‘আইনি ফাঁস’ আরও শক্ত করতে তৎপর হয় বিধাননগর কমিশনারেট। স্বর্ণব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যার খুনের ঘটনায় প্রশান্তের বিরুদ্ধে বিধাননগর আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল পুলিশ। আত্মসমর্পণ না-করায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানানো হয়। সেই আবেদন মঞ্জুর করল আদালত।
গত ২৯ অক্টোবর নিউ টাউনের যাত্রাগাছি থেকে উদ্ধার হয় স্বর্ণকার স্বপনের দেহ। তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে এ পর্যন্ত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই মামলায় নাম জড়ায় প্রশান্তের। তিনি এই ঘটনার ‘মূল অভিযুক্ত’। তবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ বা গ্রেফতারের আগেই প্রশান্ত বারাসত আদালতে আগাম জামিনের আর্জি জানান। সেই আর্জি মঞ্জুর করে বারাসত আদালত। তবে সেই জামিনের আর্জির বিরোধিতা করে কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন করে বিধাননগর পুলিশ।
কেন প্রশান্তকে আগাম জামিন দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে হাই কোর্ট। উচ্চ আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে বারাসত আদালত। শেষে বারাসত আদালতের নির্দেশ খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট। আগাম জামিন খারিজ করে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানান, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রশান্তকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। কিন্তু সেই সময় পেরিয়ে গেলেও আত্মসমর্পণ করেননি প্রশান্ত। তাই এ বার তাঁর বিরুদ্ধে বিধাননগর আদালতের দ্বারস্থ হল পুলিশ।
আরও পড়ুন:
আদালতে পুলিশের দাবি, স্বর্ণকার স্বপনকে অপহরণ এবং খুনের ঘটনায় ‘কিংপিন’ প্রশান্ত। তদন্ত এখন যে পর্যায়ে রয়েছে, তাতে রাজগঞ্জের বিডিও-কে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাঁকে যাতে হেফাজতে নেওয়া যায়, আদালতে সেই আবেদনই করে বিধাননগর পুলিশ। পুলিশের আবেদন মেনে প্রশান্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল আদালত।
অন্য দিকে, হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রশান্ত। তবে এখনও তাঁর মামলা শীর্ষ আদালতে শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হয়নি। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বড়দিনের ছুটি চলছে। খুলবে আগামী ৫ জানুয়ারি। যদিও অবকাশকালীন বেঞ্চ খোলা থাকবে এই সময়ে। অবকাশকালীন বেঞ্চে প্রশান্তের মামলার শুনানি হবে কি না, তা স্পষ্ট নয় এখনও।