(বাঁ দিকে) হুমায়ুন কবীর। সুব্রত বক্সী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
লাগাতার ‘দলবিরোধী’ মন্তব্য নিয়ে রুষ্ট তৃণমূল নেতৃত্ব শো-কজ় করেছেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন কবীরকে। মঙ্গলবার বিধানসভা অধিবেশনে এসে হুমায়ুন জানালেন, এই বিষয়ে সোমবার তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর।
হুমায়ুন বলেন, ‘‘আমি বক্সীদাকে ফোন করেছিলাম। উনি সংসদে অধিবেশনের জন্য প্রথমে ফোন ধরতে পারেননি। পরে আমায় ফোন করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে।’’ কী কথা হল? জবাবে ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘‘বক্সীদা বলেছেন, আমার যা জবাব তা যেন লিখিত ভাবে তৃণমূল ভবনে জয়প্রকাশ মজুমদারের কাছে পৌঁছে দিই। আমি সেটাই করব।’’
বক্সী রাজ্যসভার সাংসদ। বাদল অধিবেশনের জন্য দিল্লিতে রয়েছেন। অধিবেশন শেষ হলেই তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা। হুমায়ুন জানিয়েছেন, সেই কারণেই তাঁকে শো-কজ়ের জবাব জয়প্রকাশের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, হুমায়ুনকে ছ’টি কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। হুমায়ুন জানিয়েছেন, তাঁর যা বক্তব্য, তা তিনি দলকে লিখিত ভাবে জানাবেন।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকেই ‘বিদ্রোহী’ হয়ে উঠেছিলেন হুমায়ুন। এমন এমন সব মন্তব্য করেছিলেন যা, তখন সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই চ্যালেঞ্জ করার মতো শুনিয়েছিল। জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে খোলাখুলি সমালোচনা করেছিলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর কথায় শোনা গিয়েছিল হুমকির সুরও। গত সপ্তাহে বিধানসভা অধিবেশনে নাম না করে মমতাও সমালোচনা করেছিলেন হুমায়ুনের। আনন্দবাজার অনলাইনেই প্রথম লেখা হয়েছিল, হুমায়ুনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারে শাসকদল। দেখা যায় তার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই হুমায়ুনকে শো-কজ় করেন জোড়া ফুল নেতৃত্ব।
এর মধ্যে হুমায়ুন কিছুটা চোখ রাঙিয়েই বলেছিলেন, দল যদি বহিষ্কার করে তাহলে তিনি নতুন দল গড়বেন। হুমায়ুন এক সময়ে ছিলেন রেজিনগরের দাপুটে কংগ্রেস নেতা। জেলার রাজনীতিতে হুমায়ুনকে লোকে ‘অধীর চৌধুরীর অনুগামী’ হিসাবেই জানতেন। তার পর তৃণমূল, বিজেপি ঘুরে হুমায়ুনের ‘ঘর ওয়াপসি’ হয় তৃণমূলে। গত বিধানসভা ভোটে তাঁকে ভরতপুর থেকে প্রার্থী করে তৃণমূল। কিন্তু দু’বছর কাটতে না কাটতেই ফের ফোঁস করেন হুমায়ুন। এ বার তিনি শো-কজ়ের কী জবাব দেন, তৃণমূল তাতে সন্তুষ্ট হয় কি না, তা অবশ্য সময়ই বলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy