Advertisement
E-Paper

‘দিদি আপনাদের সম্পত্তি রক্ষা করবে, কোনও বিভাজন হবে না বাংলায়’! মুখ্যমন্ত্রী মমতার ওয়াকফ-বার্তা সংখ্যালঘুদের

ওয়াকফ বিল সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়ে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাতে সই করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ফলে বিল এখন আইনে পরিণত হয়ে গিয়েছে। মামলাও দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৩৬
I will protect the Waqf property, Mamata Banerjee gave a message to the Muslim community

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

ওয়াকফ সংশোধনী আইন সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়ে যাওয়ার পরে গত শুক্রবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পার্ক সার্কাস সাতমাথার দখল নিয়ে প্রতিবাদ করেছিল একাধিক মুসলিম সংগঠন। ক্রমে সেই আঁচ ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যের অন্যান্য সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাতেও। সেই পরিস্থিতিতেই বুধবার নেতাজি ইন্ডোরের একটি সভা থেকে ওয়াকফ নিয়ে বাংলার সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দিলেন, ‘দিদি’ হিসাবে তিনি মুসলিমদেরও পাশে থাকবেন এবং তাঁদের সম্পত্তি রক্ষা করবেন।

বৃহস্পতিবার মহাবীরজয়ন্তী। সেই উপলক্ষে জৈন সম্প্রদায়ের উদ্যোগে বুধবার উদ্‌যাপিত হচ্ছে ‘নবকার মহামন্ত্র দিবস’। তারই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই বলেন, ‘‘আমি জানি ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে সংখ্যালঘুদের মনে একটা দুঃখ আছে। আপানারা ভরসা রাখুন, বাংলায় এমন কিছু হবে না যাতে বিভাজন হয়। সবাইকে একসঙ্গে থেকে বাঁচতে হবে। জিও, জিনে দো (বাঁচুন, বাঁচতে দিন)।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘আপনারা সবাই একসঙ্গে বাঁচার কথা বলুন। কেউ কেউ রাজনৈতিক প্ররোচনা দেয়। আমি বলছি, দিদি আছে, দিদি আপনাদের রক্ষা করবে। আপনাদের সম্পত্তি রক্ষা করবে। কেউ উস্কানিতে পা দেবেন না।’’

ওয়াকফ বিল সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়ে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাতে সই করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। আইনের গেজেট নোটিফিকেশনও হয়ে গিয়েছে তার পর। নতুন আইন নিয়ে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘‘সমগ্র সমাজের স্বার্থে, মুসলিম সম্প্রদায়ের স্বার্থে এই চমৎকার আইন (ওয়াকফ আইন) প্রণয়নের জন্য আমি দেশের সংসদকে অভিনন্দন জানাই। এখন ওয়াকফের পবিত্র চেতনা সুরক্ষিত হবে। মুসলিমদের অধিকারও সুরক্ষিত হবে এই আইনের ফলে।’’ কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের বিঁধে মোদী এ-ও বলেছেন, ‘‘তোষণের রাজনীতি নতুন নয়। স্বাধীনতার সময়ই এই তোষণের বীজ বপন করা হয়েছিল। দ্বি-জাতি তত্ত্ব সাধারণ মুসলিমদের সিদ্ধান্ত ছিল না। তোষণের রাজনীতির মাধ্যমেই কংগ্রেস ক্ষমতা পেয়েছে। কিছু মৌলবাদী নেতা সম্পদ পেয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, সাধারণ মুসলিমরা কী পেয়েছেন? গরিব মুসলিমরা কী পেলেন?’’ উল্টো দিকে, ওয়াকফ আইন অসংবিধানিক, এই অভিযোগ করে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছে কংগ্রেস।

ঘটনাচক্রে, বুধবার মমতাও স্বাধীনতার সময়কার প্রসঙ্গ এনেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বিভাজন তো আমরা করিনি। সেই স্বাধীনতার সময়ে হয়েছে। কেউ কেউ আপনাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে উস্কানি দিচ্ছে। তাতে পা দেবেন না।’’ ভোটের অঙ্কে দেখতে গেলে গত ১৪ বছর ধরে বাংলায় সংখ্যালঘুদের একটচেটিয়া সমর্থন রয়েছে তৃণমূলের দিকে। ক্রমে তা মমতার দলের রাজনৈতিক পুঁজিতেও পরিণত হয়েছে। বিজেপি প্রায়ই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘সংখ্যালঘু তোষণের’ অভিযোগ তোলে। মমতা তা-ও উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এখানে (বাংলায়) ৩৩ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। আমরা কী করব, তাদের বার করে দেব?’’

ওয়াকফ নিয়ে যে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন হয়েছিল, তাতে তৃণমূল বিরোধিতা করে গিয়েছে ক্রমাগত। আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে ওয়াকফকে ‘হাতিয়ার’ করে তৃণমূল যে সংখ্যালঘুদের ‘ভরসার বার্তা’ দিতে চাইবে, তা নানা ভাবেই স্পষ্ট হচ্ছিল। বুধবার মমতাই স্বয়ং বলে দিলেন, ‘দিদি’ রক্ষা করবে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি।

CM Meeting WAQF Amendment Law Waqf property
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy