ছবি: পিটিআই
করোনা চিকিৎসার খরচ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য কমিশনের অ্যাডভাইজ়রির সংখ্যা দশ থেকে পনেরো হওয়া মাত্র বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাংশকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘দিনের শেষে কমিশন যা বলছে সবই অ্যাডভাইজ়রি। সে সকল পরামর্শ মানব কি না তা আমাদের বিষয়!’’ শুক্রবার স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অ্যাডভাইজ়রি দেওয়ার পরে তা মানা হচ্ছে না এরকম কোনও খবর পাইনি। খবর পেলে কমিশনের হাতে নানা অস্ত্র আছে। সেগুলি একে একে প্রয়োগ করা হবে!’’ কী সেই অস্ত্র? চেয়ারম্যানের কথায়, ‘‘ক্ষতিপূরণ দেওয়ানোর ক্ষমতা রয়েছে। আর লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করার এক্তিয়ার রয়েছে।’’
ঘটনাচক্রে, এ দিনই সন্ধ্যায় পূর্ব ভারতে বেসরকারি হাসপাতালের সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি আলোচনা চক্রে যোগ দেন কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি তথা কমিশনের চেয়ারম্যান। সন্ধ্যার বৈঠক প্রসঙ্গে দুপুরে চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘ওঁরা আমায় নেমন্তন্ন করেছে। ওঁদের নিমন্ত্রণে আমি যাব।’’ এই ‘নিমন্ত্রণে’র প্রেক্ষিত যে তৈরি হতে চলেছে গত শনিবার আরও পাঁচটি অ্যাডভাইজ়রি জারির পরে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। পূর্বাঞ্চলে বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনগুলির সভাপতি রূপক বড়ুয়ার বক্তব্য ছিল, বেশ কিছু অ্যাডভাইজ়রির বক্তব্য স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। সে সব নিয়েই কমিশনের সঙ্গে তাঁরা আলোচনায় বসতে চান।
এ দিন সন্ধ্যায় স্বভূমিতে প্রায় ঘণ্টাখানেকের আলোচনা শেষে কমিশনের চেয়ারম্যান জানান, গত শনিবার জারি করা দু’টি অ্যাডভাইজ়রির বদল চেয়েছে বেসরকারি হাসপাতালগুলির সংগঠন। চলতি বছরের মার্চে শয্যা ভাড়া যা ছিল তার থেকে বেশি নেওয়া যাবে না বলে অ্যাডভাইজ়রি জারি করে জানিয়েছিল কমিশন। বেসরকারি হাসপাতালগুলির বক্তব্য, মার্চের বদলে তা এপ্রিল করা হোক।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে পরীক্ষা হবে না রাজ্যে ।। পরীক্ষা না নিয়ে পাশ নয়: কোর্ট
বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া জানিয়েছেন, ডিসেম্বরের পরে এই আর্জি পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে কমিশন। এ ছাড়া ওষুধে ১০ শতাংশ এবং মাস্ক, দস্তানার মতো সামগ্রীতে ২০ শতাংশ ছাড়েও রদবদলের আর্জি রয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘ওঁরা বলেছেন, কর্পোরেট ক্লায়েন্ট এবং বিমা ক্লায়েন্টের ক্ষেত্রে এই পরামর্শ লাগু হবে না। কিছু ওষুধে ছাড় পাওয়া যায় না বলেও ওঁদের বক্তব্য।’’ এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে কমিশন কথা বলবে বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান। এ প্রসঙ্গে রূপকবাবুর বক্তব্য, ছাড় সংক্রান্ত অ্যাডভাইজ়রি নগদে চিকিৎসা করানো রোগীদের জন্য প্রযোজ্য বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান।
আরও পড়ুন: ‘ভোটের সময়ে কিন্তু কোর্ট দেখালে চলবে না!’
বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগের ঘটনাক্রমও কম তাৎপর্যপূর্ণ নয়। দুপুরে কোভিডের খরচ সংক্রান্ত দশটি মামলার শুনানি শেষে অন্তত তিনটি হাসপাতালকে রোগীর পরিজনের কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। একটি মামলায় কোভিড হাসপাতালের ভূমিকা খতিয়ে দেখার জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনকে তদন্ত করার জন্য বলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy