E-Paper

ছ’বছর আগে এক অশান্তির জেরে পুত্রকে হারিয়েছিলেন, এখন ভালবাসা বিলিয়ে বেড়ান পুত্রহারা ইমদাদুল্লাহ

ইমামসাহেবের সেই ভরসা মানুষে মানুষে ভালবাসা আর সম্প্রীতিতে। আজ, বৃহস্পতিবার আসানসোলের নুরানি মসজিদে ইদের নমাজেও সেই সম্প্রীতির বার্তাই দেবেন ইমাম ইমদাদুল্লাহ রশিদি।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:২৫

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ছ’বছর আগে এক অশান্তির ভিড়ে নিজের ছেলেটাকে চিরতরে হারিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু ভরসা হারাননি।

ইমামসাহেবের সেই ভরসা মানুষে মানুষে ভালবাসা আর সম্প্রীতিতে। আজ, বৃহস্পতিবার আসানসোলের নুরানি মসজিদে ইদের নমাজেও সেই সম্প্রীতির বার্তাই দেবেন ইমাম ইমদাদুল্লাহ রশিদি।

২০১৮-র মার্চে একটি অনুষ্ঠান ঘিরে উত্তেজনায় প্রাণ হারায় ইমদাদুল্লাহর পুত্র, দশম শ্রেণির পড়ুয়া সিবতুল্লাহ রশিদি। সে দিন ছেলের মরদেহের সামনে জানাজার নমাজ থেকে জনতাকে শান্তির বার্তা দিয়েছিলেন ইমদাদুল্লাহ। বলেছিলেন, ‘‘কোনও প্রতিহিংসা নয়। তা হলে কিন্তু আমি আসানসোল ছেড়ে চলে যাব।’’ পুত্রশোক সত্ত্বেও মানুষের প্রতি বিশ্বাস না হারিয়ে তখনই সারা দেশে সম্প্রীতির মুখ হয়ে উঠেছিলেন ইমাম রশিদি। রেলপাড় লাগোয়া নুরানি মসজিদে ইদের নমাজের পরে ভিন্‌ধর্মের মানুষেরও ভিড় লাগে। তাঁরাও আসেন রশিদি সাহেবের আশীর্বাদ নিতে। অকালে চতুর্থ সন্তানটিকে হারানো পিতা তাঁদের বলেন, ‘‘যে গিয়েছে তাকে যেতে দাও। সামনের পথ যেন সুগম থাকে, সেটা দেখো।’’

লোকসভা ভোটের হাওয়ায় ভাসে ধর্মীয় মেরুকরণের তাস। ইমদাদুল্লাহ চান, ভোটটা সবাই যেন শান্তিতেই দেন। কারণ তাঁর বিশ্বাস, ‘মহব্বত’ জিতে যাচ্ছে। হেরে যাচ্ছে ‘নফরত’ বা বিদ্বেষ। ফোনে বললেন, ‘‘ছেলেকে হারানোর দিনেও সকলকে শান্ত থাকতে বলেছিলাম। নিখাদ ভালবাসা দিয়ে সব কিছুকে জয় করা যায়। সেই কথা ইদের নমাজেও বলতে চাই।’’ তিনি মনে করিয়ে দেন, “ইসলাম মানে শান্তি। আমরা শান্তিতে থাকলে কোনও অশুভ শক্তি কিছু করতে পারবে না।”

এই মাটি-জল-ফুল-ফলে হয়তো হারানো ছেলেটার মুখ ভাসে। ইমাম বার বার দেখেন ভালবাসার বাংলার সেই মুখ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Communal harmony Eid 2024 Asansol

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy