Advertisement
E-Paper

মহরমের দিন বন্ধই বিসর্জন, হুঁশিয়ারি মমতার

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য শনিবার ফের জানিয়ে দিলেন, মহরমের দিন বিসর্জন হবে না। তাঁর কথায়, ‘‘সব ধর্মের মানুষের কথা ভেবে, সব দিকে শান্তি বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। বিসর্জন ও মহরম নির্বিঘ্নে হোক।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৫
নেত্রী: সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে শনিবার। ছবি: প্রদীপ আদক।

নেত্রী: সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে শনিবার। ছবি: প্রদীপ আদক।

মহরমের জন্য একাদশীতে দুর্গাপ্রতিমার বিসর্জন কেন বন্ধ থাকবে, আগেই এ প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার। শুক্রবার এ নিয়ে একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে মন্তব্য করেছেন, ‘‘মুম্বইতে গণেশ পুজোর শোভাযাত্রা ও অন্য ধর্মীয় মিছিল এক সঙ্গে রাস্তায় বেরোয়।’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য শনিবার ফের জানিয়ে দিলেন, মহরমের দিন বিসর্জন হবে না। তাঁর কথায়, ‘‘সব ধর্মের মানুষের কথা ভেবে, সব দিকে শান্তি বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। বিসর্জন ও মহরম নির্বিঘ্নে হোক।’’

এ বছর দশমী পড়েছে ৩০ সেপ্টেম্বর। পরের দিন, ১ অক্টোবর মহরম। নবান্নের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত ছিল, দশমীর দিন সন্ধে ৬টার পর থেকে ১ অক্টোবর পুরো দিন বিসর্জন বন্ধ থাকবে। ফের ২ থেকে ৪ অক্টোবর প্রতিমা নিরঞ্জন করা যাবে। পরে অবশ্য দশমীর দিন বিসর্জনের সময়সীমা বাড়িয়ে রাত দশটা পর্যন্ত করার কথা বলা হয়।

কিন্তু বিসর্জনে কোনও রকম নিয়ন্ত্রণের বিরোধী বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিনও অভিযোগ করেন, ‘‘বিভাজনের উদ্দেশ্যেই মুখ্যমন্ত্রী এই সব করছেন। হিন্দুদের বলছি, পরম্পরা মেনে প্রতিমা বিসর্জন দেবেন। নেতা-মন্ত্রীর কথা শুনবেন না। আর সমস্যা থাকলে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে সেনা আনিয়ে নিন। সেনা পাহারায় বিসর্জন হোক।’’

রাজ্যের ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলাও দায়ের হয়েছে। শুক্রবার তার শুনানিতে আবেদনকারী স্মরজিৎ চক্রবর্তী জানান, পঞ্জিকা মতে দশমীতে নিরঞ্জন করা যাবে রাত ১টা ২৬ মিনিট পর্যন্ত। তাঁর যুক্তি, কোনও একটি ধর্মীয় মিছিলের জন্য অন্য একটি ধর্মের আচার-অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা জারি হলে তা নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করে।

আরও পড়ুন:অস্ত্র নিয়ে মিছিল নয়, কড়া মুখ্যমন্ত্রী

রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত পাল্টা যুক্তি দেন, বিসর্জনের সময়সীমা সন্ধে ৬টার বদলে রাত ১০টা করা হয়েছে। এ ছাড়া, দশমীর দিন রাত ১২টার পরে অন্য একটি ধর্মীয় মিছিলের মহড়া শুরু হয়ে যাবে। ফলে নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি। বিচারপতি মাত্রে দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে এজি-কে নির্দেশ দেন, বিসর্জনের সময়সীমা আরও বাড়ানো যায় কি না, রাজ্য তা বিবেচনা করে কাল, সোমবার আদালতে জানাক।

এ দিনই রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে পাশে নিয়ে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেক রকম জটিলতা হচ্ছে। বিজেপি অপপ্রচার চালাচ্ছে। সবার কাছে আবেদন, কুৎসায় কান দেবেন না, প্ররোচনা বা চক্রান্তে পা দেবেন না।’’

মমতার অভিযোগ, ‘‘বিসর্জনকে কেন্দ্র করে নোংরা রাজনীতি করছে বিজেপি। বজরঙ্গ, আরএসএস বা বিজেপি মার্কা কয়েকটা লোক যদি মনে করেন আমাদের শান্তি, সংস্কৃতিতে আঘাত হানবেন, তাঁদের বলে দিচ্ছি আগুন নিয়ে খেলবেন না।’’ বিজেপি-কে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘বাংলার মানুষ এ সব মেনে নেবে না। এখানে কোনও গেম প্ল্যান বা ব্রেন প্ল্যান কাজে লাগবে না।’’

মমতা আরও বলেন, কোথাও ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে মুম্বই পুলিশ দক্ষ, বাংলার পুলিশ দক্ষ নয়। বাংলায় যে ভাবে দুর্গাপুজো হয়, অন্য কোনও রাজ্যে এত ব্যাপক ভাবে হয় না। ঠিক যেমন মুম্বইতে গণেশ পুজো অনেক বেশি হয়, এখানে হয় না। তিনি প্রশ্ন তোলেন, মুম্বইয়ে গণেশ উৎসব ও মহরম এক দিনে হলে কী হবে?

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, মহরম বা ইদের সঙ্গে পুজো— এ রকম পরিস্থিতি তাঁর সরকারের আগে কাউকে সামলাতে হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘গত পাঁচ বছর ধরে রাজ্যের পুলিশ এ সব দক্ষতার সঙ্গে সামলাচ্ছে।’’

Durga Puja 2017 Muharram 20107 Immersion Mamata Banerjee মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় State Government Kolkata High Court মহরম TMC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy