Advertisement
২১ মে ২০২৪

সঠিক ডিগ্রি ছাড়াই চিকিত্সা, ফের কাঠগড়ায় অ্যাপোলো

এক জনের অর্থোপেডিকে ডিগ্রিই নেই, কিন্তু অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ হিসেবেই হাসপাতালে ছিলেন বলে অভিযোগ। অন্য জন ট্রান্সফিউশন মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ হলেও হাসপাতালে তাঁর পরিচয় ছিল হেমাটোলজিস্ট হিসেবে।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৭ ০৪:২৫
Share: Save:

এক জনের অর্থোপেডিকে ডিগ্রিই নেই, কিন্তু অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ হিসেবেই হাসপাতালে ছিলেন বলে অভিযোগ।

অন্য জন ট্রান্সফিউশন মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ হলেও হাসপাতালে তাঁর পরিচয় ছিল হেমাটোলজিস্ট হিসেবে।

দু’টি অভিযোগই উঠেছে অ্যাপোলো হাসপাতালের বিরুদ্ধে। ডানকুনির সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর পরে একের পর এক অভিযোগের ঠেলায় জেরবার অ্যাপোলো হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ। তাই ওই দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতেই তাঁদের শোকজ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলেছেন, ‘‘কী ভাবে ওঁরা এখানে কাজ পেলেন সেটা দেখতে হাসপাতালের তরফে অভ্যন্তরীণ তদন্তও করা হবে।’’

স্বাস্থ্য দফতরের মতে, প্রয়োজনীয় ডিগ্রি না-থাকা সত্ত্বেও নিজেকে ওই বিষয়ের বিশেষজ্ঞ বলে জাহির করার অর্থ হল রোগীকে ঠকানো ও বিভ্রান্ত করা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগীকে দেখছেন বলে বাড়ির লোকের থেকে মোটা টাকা নেওয়া হয়। অথচ, ওই চিকিৎসকের প্রয়োজনীয় ডিগ্রি না থাকলে তিনি যে রোগীর যথার্থ চিকিৎসা করবেন বা রোগ ধরতে পারবেন সে সম্পর্কেও নিশ্চয়তা নেই! সঞ্জয় রায়ের মৃত্যু নিয়ে হইচই শুরু না হলে অ্যাপোলো আদৌ এমন দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিত কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

হাসপাতালের তরফে অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর জয় বসু-র বক্তব্য, ‘‘অভিযুক্ত এক চিকিৎসক অর্থোপেডিক্স-এ এমডি স্তরের পঠনপাঠন শুরু করলেও শেষ করেননি। ডিগ্রিও পাননি। কিন্তু তিনি বাইরে ‘অর্থোপেডিক্স’-এর বোর্ড লাগিয়েই চিকিৎসা করেন, এটা জানা মাত্র তাঁকে শো কজ করা হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অন্য এক চিকিৎসকের এমডি রয়েছে ট্রান্সফিউশন মেডিসিনে। কিন্তু তিনি ‘হেমাটোলজিস্ট’ হিসাবে প্র্যাকটিস করছেন। এটা আমাদের জানা ছিল না। হেমাটোলজিস্ট হতে গেলে পোস্ট ডক্টরেট করতে হয় হেমাটোলজিতে। জানা মাত্র তাঁকেও শো কজ করা হয়েছে।’’

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘‘সঞ্জয় রায় নিয়ে তদন্ত শুরু করার পরেই একাধিক চিকিৎসক আমাদের জানান, অ্যাপোলোর অনেক ডাক্তারের ডিগ্রি নিয়ে গোলমাল রয়েছে। তাঁরা বেশ কিছু নামও দেন। দেখা যায় ওঁদের অনেক অভিযোগই সত্যি।’’

স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন, শুধু অ্যাপোলো নয়, বিভিন্ন নামী বেসরকারি হাসপাতালে ইউনানি, হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদের চিকিৎসকদের নিয়োগ করা হচ্ছে। অথচ রোগীর জটিল অবস্থা হলে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া বা অস্ত্রোপচারের অধিকারই এঁদের নেই। রাতেও মূলত এঁরাই ডিউটিতে থাকছেন। তা ছাড়া, অ্যাপোলোর মতোই নির্দিষ্ট ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও বেশ কিছু অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক অন্য বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হিসেবে রোগী দেখছেন। এ ব্যাপারে দ্রুত কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Apollo Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE