Advertisement
E-Paper

বিধানসভা ভোটে বাংলার মোট ১৪১টি আসনে বিশেষ নজর বিজেপির, কোনগুলি ‘শক্ত ঘাঁটি’ আর কোন কোনটি ‘দোদুল্যমান’?

তথ্য বলছে, রাজ্যে বিজেপির ‘শক্ত ঘাঁটি’ মোটামুটি ৬০টি আসন। আরও ৪৬টি আসন ‘দোদুল্যমান’, যেখানে ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দু’টি লোকসভা ভোটে এবং একটি বিধানসভা ভোটে বিজেপি কখনও এগিয়েছে। কখনও পিছিয়েছে।

স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:০১
In the Assembly elections, BJP is keeping a special watch on a total of 141 seats in Bengal — which ones are \\\\\\\\\\\\\\\'strongholds\\\\\\\\\\\\\\\' and which ones are \\\\\\\\\\\\\\\'swing constituencies\\\\\\\\\\\\\\\'?

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে মূলত ১৪১টি আসনকে ‘পাখির চোখ’ করে এগোচ্ছে বিজেপি। এই ১৪১টি আসনে ২০১৯ সালের লোকসভা, ২০২১ সালের বিধানসভা এবং ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের কোনও না কোনওটিতে বিজেপি সবচেয়ে এগিয়ে ছিল। তারা মনে করছে, এই আসনগুলি ধরে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে এগোলে জয়ের সম্ভাবনা আছে।

ঘটনাচক্রে, আসনগুলিতে বিজেপির জনপ্রিয়তার মধ্যে পার্থক্য আছে। এগুলির মধ্যে সবচেয়ে ‘সম্ভাবনাময়’ ধরা হচ্ছে সেই ৫২টি আসন, যেখানে তারা ২০১৯, ২০২১ এবং ২০২৪— তিনটি নির্বাচনেই অন্যদের চেয়ে এগিয়ে ছিল। এ ছাড়া আছে ৭টি আসন, যেগুলিতে বিজেপি ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে পিছিয়ে থাকলেও ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট এবং ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে এগিয়ে ছিল। এই আসনগুলি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার। যা শুভেন্দু অধিকারী ২০২০ সালের শেষে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে অধিকারী পরিবারের সৌজন্যে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে ঘুরে গিয়েছে।

আরও ৪৭টি আসন রয়েছে। যেগুলি ‘দোদুল্যমান’ বলে মনে করছে বিজেপি।

রাজ্যে এমন ২৩টি আসন আছে, যেগুলি বিজেপি ২০১৯ এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এগিয়ে থাকলেও ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে হেরে গিয়েছিল। আরও ১২টি আসনে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এবং ২০২১ সালের বিধানসভা এগিয়ে থাকলেও ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে তারা পিছিয়ে পড়ে। রয়েছে ৯টি আসন, যেগুলিতে বিজেপি ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে প্রথম এগিয়ে গিয়েছে। এগুলিও মূলত পুর্ব মেদিনীপুরেরই। আবার ৩টি আসন বিজেপি ২০২১ সালে জিতলেও ২০২৪ সালে তা ধরে রাখতে পারেনি।

কিন্তু ১৪১টি আসনের তালিকায় ‘শক্ত ঘাঁটি’ এবং ‘দোদুল্যমান’ আসনগুলির বাইরে বড় অংশের আসনে দলের জয়ের সম্ভাবনা, অন্তত তথ্যের খাতিরে, তত জোরালো নয়। সেই ৩৫টি আসনে বিজেপি ২০১৯ সালে এগিয়ে থাকলেও ২০২১ এবং ২০২৪ সালে সেই সমর্থন ধরে রাখতে পারেনি।

সাফল্যের ওঠাপড়া

রাজ্যে বিজেপির সেরা সাফল্য এসেছিল ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে, যখন তারা রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে ১৮টি জিতেছিল। তারা ভোট পেয়েছিল ৪০.৬%। এগিয়ে ছিল ১২১টি বিধানসভা কেন্দ্রে।

কিন্তু দু’বছরের মধ্যে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দলের ভোট শতাংশ সামান্য কমে ৩৮.৫% হয়। কিন্তু আসনসংখ্যায় বিপুল ফারাক হয়। তার অন্যতম কারণ তৃণমূলের ভোট শতাংশ ৪৩.৭% থেকে বেড়ে ৪৮.৫% হওয়া। যার ফলে বিজেপি ৭৫টির বেশি আসনে জিততে পারেনি। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ফলাফল ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় ভাল হয়েছিল বটে। কিন্তু তা ২০১৯ সালের ফলাফলকে ছুঁতে পারেনি। ৩৯.১% ভোট নিয়ে বিজেপি জিতেছিল ১২টি আসন। এগিয়ে ছিল ৯১টি বিধানসভা কেন্দ্রে। তৃণমূলের ভোট শতাংশ ২০২১ সালের তুলনায় সামান্য কমে দাঁড়ায় ৪৬.২%। বিজেপির চেয়ে অনেকটাই বেশি। ২০২১ সালের পর থেকে ইস্তফা, দলবদল ইত্যাদির ফলে বিজেপির আসনসংখ্যা কমতে কমতে আপাতত ৬৫। সেই সংখ্যাকে বিধানসভায় গরিষ্ঠতা পাওয়ার জায়গায় নিয়ে যাওয়া , অর্থাৎ ১৪৮ আসন জেতা, বেশ দুরূহ লক্ষ্য গেরুয়া শিবিরের পক্ষে।

গত তিনটি বড় নির্বাচনের নিরিখে রাজ্যে বিজেপির ভোট শতাংশ ৩৮.৫% থেকে ৪০.৬% শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। তৃণমূলের ভোট শতাংশ থেকেছে ৪৩.৭% থেকে ৪৮.৫% পর্যন্ত। ফলে বিধানসভা ভোটে জিততে হলে বিজেপিকে ভোট শতাংশ ও আসনসংখ্যা, দুই’ই বাড়াতে হবে। রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গেরুয়া শিবিরের তেমন কোনও ‘মুখ’ নেই ঠিকই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখের ভরসায় ওড়িশা ও দিল্লির নির্বাচনে জেতাকে ‘আশার আলো’ হিসাবে দেখতে চাইছে রাজ্য বিজেপি। রাজ্য বিজেপির নেতাদের আশা, অনুপ্রবেশ এবং দুর্নীতি নিয়ে মোদী-সহ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাংলায় প্রচারে ঝড় তুলবেন।

গেরুয়া গড়

বিজেপির ‘শক্ত ঘাঁটি’র মধ্যে ২৩টিই উত্তরবঙ্গে। সেগুলি হল কোচবিহারের মাথাভাঙা, কোচবিহার উত্তর, নাটাবাড়ি ও তুফানগঞ্জ। আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম, কালচিনি, আলিপুরদুয়ার, ফালাকাটা এবং মাদারিহাট। জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি ও ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি। দার্জিলিঙের কার্শিয়ং, দার্জিলিং, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া ও শিলিগুড়ি। উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট, তপন ও গঙ্গারামপুর। মালদহের হবিবপুর, গাজোল, মালদহ ও ইংলিশবাজার। এই সব আসনে ২০১৯, ২০২১ এবং ২০২৪ সালের তিনটি নির্বাচনেই এগিয়ে থাকা বিজেপির ‘উত্তরবঙ্গীয়’ দাপটের প্রতিফলন।

দক্ষিণবঙ্গের এমন আসনগুলির মধ্যে আছে মুর্শিদাবাদ জেলার মুর্শিদাবাদ। আছে নদিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনার একগুচ্ছ আসন। এর মধ্যে নদিয়ার কৃষ্ণনগর উত্তর এবং উত্তর ২৪ পরগনার শিল্পাঞ্চলের ভাটপাড়া ছাড়া বাকিগুলিতে নমঃশূদ্র-মতুয়া সম্প্রদায়ের বড় রাজনৈতিক প্রভাব আছে, সেই আসনগুলি হল রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম, কৃষ্ণগঞ্জ, রানাঘাট উত্তর-পূর্ব, রানাঘাট দক্ষিণ, চাকদহ, কল্যাণী, হরিণঘাটা, বাগদা, বনগাঁ উত্তর, বনগাঁ দক্ষিণ এবং গাইঘাটা।

এ ছাড়াও আছে বাঁকুড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সীমান্তবর্তী হুগলির খানাকুল, গোঘাট এবং পুরশুড়া। পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর সদর। পুরুলিয়ার পারা এবং পুরুলিয়া সদর। বাঁকুড়ার ওন্দা, বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া, কোতুলপুর এবং সোনামুখী। পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর, আসানসোল দক্ষিণ এবং কুলটি।

পুর্ব মেদিনীপুরের ময়না, হলদিয়া, নন্দীগ্রাম, কাঁথি উত্তর, কাঁথি দক্ষিণ, ভগবানপুর এবং খেজুরিতেও বিজেপি ২০২১ এবং ২০২৪ সালের দু’টি ভোটেই এগিয়ে ছিল।

জোর লড়াই

‘দোদুল্যমান’ ৪৬টি আসনের মধ্যে পড়ছে ২৩টি এমন আসন, যেগুলিতে বিজেপি ২০১৯ সালে এগিয়ে ছিল। ২০২১ সালের সেগুলি জিতেছিল তৃণমূল। কিন্তু ২০২৪ সালে আবার বিজেপি এগিয়ে গিয়েছে।

সেই আসনগুলি হল জলপাইগুড়ির ধুপগুড়ি এবং জলপাইগুড়ি। দার্জিলিঙের কালিম্পং। উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি, হেমতাবাদ ও রায়গঞ্জ। মালদহের মানিকচক ও বৈষ্ণবনগর। নদিয়ার তেহট্ট, কৃষ্ণনগর দক্ষিণ ও শান্তিপুর। উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া, বিধাননগর। কলকাতার জোড়াসাঁকো ও শ্যামপুকুর। হুগলির চুঁচুড়া, সপ্তগ্রাম ও বলাগড়। পুর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া ও এগরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর। পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডি এবং বাঁকুড়ার বরজোড়া।

আবার জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা, কোচবিহারের শীতলখুচি, দিনহাটা ও কোচবিহার দক্ষিণ, পুরুলিয়ার বলরামপুর, জয়পুর, রঘুনাথপুর ও কাশীপুর, বাঁকুড়ার ইন্দাস, শালতোড়া ও ছাতনা আর বীরভুমের দুবরাজপুরে বিজেপি ২০১৯ এবং ২০২১ সালে এগিয়ে থাকলেও ২০২৪ সালে পিছিয়ে পড়েছে।

এমন ৯টি আসন আছে, যেগুলিতে বিজেপি ২০২৪ সালে প্রথম এগোতে পেরেছিল। এর মধ্যে আছে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ও বড়ঞা, উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি, পুর্ব মেদিনীপুরের তমলুক, পাঁশকুড়া পূর্ব, নন্দকুমার, মহিষাদল, চণ্ডীপুর ও রামনগর। ৩টি আসন বিজেপি ২০২১ সালে জিতেছিল। কিন্তু ২০২৪ সালে তারা পিছিয়ে পড়েছে। সেগুলি হল হুগলির আরামবাগ, মুর্শিদাবাদের বহরমপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল।

সবমিলিয়ে এই ১০৬টি আসনেই দলের জেতার সম্ভাবনা বেশি বলে বিজেপি নেতাদের একটি অংশের অনুমান। কিন্তু ২০১৯ সালে এগিয়ে থাকা ৩৫টি আসনকেও তাঁরা কম গুরুত্ব দিতে চান না। এর মধ্যে জলপাইগুড়ির মাল ও কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ ছাড়া বাকি সব আসনই দক্ষিণবঙ্গের। সেই আসনগুলি হল পশ্চিম বর্ধমানের বরাবনি, আসানসোল, জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ, দুর্গাপুর ও পাণ্ডবেশ্বর। পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা, নারায়ণগড়, দাঁতন, কেশিয়াড়ি। বীরভুমের রামপুরহাট, ময়ুরেশ্বর, সাঁইথিয়া, সিউড়ি। ঝাড়গ্রামের গড়বেতা, নয়াগ্রাম, গোপীবল্লভপুর, ঝাড়গ্রাম। বাঁকুড়ার তালড্যাংরা, রানিবাঁধ, রায়পুর। হুগলির পান্ডুয়া, সিঙ্গুর ও শ্রীরামপুর। পূর্ব বর্ধমানের গলসি ও কাটোয়া। উত্তর ২৪ পরগনার রাজারহাট-গোপালপুর, ব্যারাকপুর, জগদ্দল, নৈহাটি, বীজপুর। কলকাতার রাসবিহারী এবং পুরুলিয়ার বান্দোয়ান।

রাজ্য বিজেপির নেতাদের একাংশের বক্তব্য, ২০২১ বা ২০২৪ সালের ভোটে না পারা গেলেও হিন্দু ভোটের মেরুকরণ বাড়াতে পারলে এবং প্রতিষ্ঠানবিরোধী ভোট টানতে পারলে এই সব আসনেও জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। তবে এর মধ্যে বেশ কিছু আসনে ২০২১ ও ২০২৪ সালের ভোটে বিজেপির পিছিয়ে থাকার ব্যবধান হাজার দশেক বা আরও বেশি ভোট!

বাঁক বদল

ভোটের হিসাব অবশ্য শুধু পুরনো তথ্যের ভিত্তিতে হয় না। যেমন, ‘শক্ত ঘাঁটি’র অন্তর্গত আলিপুরদুয়ার জেলায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায়। আবার গত মে-জুন মাস থেকে দেশের বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যে ‘বাংলাদেশি’ ধরার নামে যে ভাবে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের ধরপাকড়, হেনস্থা এমনকি, গ্রেফতারিরও শিকার হতে হয়েছে, তার ‘কোপ’ গিয়ে পড়েছে রাজ্যে বিজেপির শক্তির অন্যতম উৎস নমঃশূদ্র-মতুয়া সম্প্রদায়ের উপরেও। এমনিতেই বাগদা আসনটি তৃণমূলের মধুপর্ণা ঠাকুর এবং রানাঘাট দক্ষিণ আসনটি তৃণমূলের মুকুটমণি অধিকারী ২০২৪ সালের লোকসভা-পরবর্তী বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপির কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছেন। তদুপরি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সই করা মতুয়া মহাসঙ্ঘের পরিচয়পত্রও কিছু মতুয়া পরিবারকে অন্য রাজ্যে হেনস্থার হাত থেকে বাঁচাতে পারেনি। ফলে বিজেপির উপর এই সম্প্রদায়ের মানুষের আস্থা কমার একটা আশঙ্কা বিজেপি নেতাদের একাংশের মধ্যে তৈরি হয়েছে।

পাশাপাশি, নাগরিকত্ব সংশোধন আইন বলবৎ হওয়ার ১৬ মাস পরেও খুব বেশি আবেদন জমা পড়েনি। যার প্রধান কারণ, এ জন্য প্রয়োজনীয় বাংলাদেশে বসবাসের প্রমাণের নথিপত্র অধিকাংশের কাছেই নেই। যদিও বিজেপি নেতারা বলছেন, কাগজ না থাকলেও আবেদন করে দিতে। বাকিটা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বুঝে নেবে। তবে সেই প্রতিশ্রুতিতে পূর্ববঙ্গের উদ্বাস্তু সম্প্রদায়ের মানুষ কতটা আশ্বস্ত হয়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

বিজেপির হিসাবে ‘দোদুল্যমান’ আসনগুলির মধ্যে আছে ৩০ শতাংশের বেশি মুসলিম ভোটার থাকা আসনও। এগুলিতে বিজেপি ২০১৯ বা ২০২৪ সালে এগিয়ে থাকতে পেয়েছিল তৃণমূল এবং বাম-কংগ্রেসের মধ্যে ভোট ভাগাভাগিতে। এর মধ্যে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি, হেমতাবাদ ও রায়গঞ্জ। মালদহের মানিকচক ও বৈষ্ণবনগর। মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর, বড়ঞা। নদিয়ার তেহট্টে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল এবং বাম-কংগ্রেসের মধ্যে মুসলিম ভোটের বিভাজন দেখা গিয়েছে, যা ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মূলত তৃণমূলের পক্ষেই সংঘবদ্ধ ছিল।

অনেকে মনে করছেন, সম্প্রতি বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে যে বিপর্যয় নেমে এসেছে (যার মূল ধাক্কা এসেছে মুসলিমদের উপর), তাতে মুসলিম সম্প্রদায়ের ভোট ভাগ না হয়ে ২০২১ সালের মতোই কেন্দ্রীভূত হতে পারে রাজ্যের শাসকদলের পক্ষে। তাতে এই আসনগুলিতে ২০২১ সালের ফলাফলেরই পুনরাবৃত্তি হতে পারে। আবার কলকাতা ও তার আশেপাশের শহুরে এলাকায় দুর্নীতি, কর্মসংস্থান-সহ নানা প্রশ্নে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাড়তে থাকা প্রতিষ্ঠানবিরোধী ক্ষোভের ফলে আগে কখনও এগিয়ে না-থাকা কিছু বিধানসভা আসনে অপ্রত্যাশিত ফল হবে বলে বিজেপির অনেকের আশা। শহরাঞ্চলের প্রতিষ্ঠানবিরোধী ভোট নিজেদের দিকে টানার জন্য তাঁদের যে বাম-কংগ্রেসের, বিশেষত বামেদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে হবে, তা বুঝতে পেরেই রাজ্য বিজেপির শীর্ষনেতারা বামবিরোধী আক্রমণের পারদ চড়াতে শুরু করেছেন।

Assembly Elections West Bengal Politics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy