যাত্রীদের নিয়ে কলকাতা থেকে সবে গড়াতে শুরু করেছিল বিমান। তখনই ধোঁয়া বেরোতে শুরু করে ইঞ্জিন থেকে। ঘাবড়ে গিয়ে পাইলট বিমানটি দাঁড় করিয়ে কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-কে তিন বার ‘মে ডে’, ‘মে ডে’ বলে বার্তা পাঠান। চূড়ান্ত বিপদে পড়লে তবেই কোনও পাইলট তিন বার এই ‘মে ডে’ বার্তা পাঠান। বিমানের ইমার্জেন্সি দরজা খুলে রবারের স্লিপের সাহায্যে (ইমার্জেন্সি শ্যুট) যাত্রীদের নামিয়ে আনা হয় টারম্যাকে। উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং বিমানবন্দরের কর্মীদের সহায়তায় যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। এ ভাবে রবারের স্লিপ দিয়ে নামতে গিয়ে কয়েক জন যাত্রী ও বিমানসেবিকা আহত হয়েছেন বলেও বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে।
বেসরকারি ভুটান এয়ারলাইন্সের এই বিমানটি এ দিন সকালে যাত্রীদের নিয়ে ভুটানের পারো থেকে কলকাতায় আসে। কলকাতা বিমানবন্দরের ৫৯ নম্বর অ্যরোব্রিজে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। বিমানটির কলকাতা থেকে ব্যাঙ্কক যাওয়ার কথা ছিল। ৬১ জন যাত্রীকে নিয়ে ৫ বিমানসেবিকা এবং দুই পাইলট শনিবার দুপুর বারোটা নাগাদ রওনা হন। অ্যারোব্রিজে বিমান থাকলে প্রথমে তাকে ছোট গাড়ির সাহায্যে পিছন দিকে কিছুটা টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরে বিমানটি নিজে থেকে সামনের দিকে গড়াতে শুরু করে। বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভুটান এয়ারলাইন্সের ওই বিমানটিকে তখন পিছন দিকে টেনে এফ২ ট্যাক্সিওয়েতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেই সময়ে তার ইঞ্জিনের পিছন দিক থেকে ধোঁয়া দেখতে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:সেলাম ‘র্যাঞ্চো’, এ ভাবেও বড় হওয়া যায়
কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা অতুল দীক্ষিত এ দিন জানান, সেই সময়ে কলকাতায় আসা অন্য একটি বিমানের পাইলট ওই ধোঁয়া দেখতে পান। সূত্রের খবর, ইন্ডিগোর এই বিমানটি যাত্রীদের নিয়ে ইম্ফল থেকে কলকাতায় নেমে টার্মিনালের দিকে আসছিল। ইন্ডিগোর পাইলটই প্রথম এটিসি-কে ধোঁয়ার কথা জানান। এমনকী, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি-র সাহায্যে নিজে থেকে ইন্ডিগোর ওই পাইলট ভুটান এয়ারলাইন্সের পাইলটকেও ওই কথা জানান। ইন্ডিগোর পাইলটের কাছ থেকে বার্তা পেয়ে, এবং নিজের ককপিটে বিপদ সঙ্কেত পেয়ে তখন তিন বার ‘মে ডে’ বলে এটিসি-কে বার্তা পাঠান ভুটান এয়ালাইন্সের পাইলট। পরে খালি বিমানটি পরীক্ষার জন্য ব্যাঙ্ককে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্য একটি বিমানে যাত্রীদের ব্যাঙ্ককে পাঠানো হয়।
প্রতিটি বিমানেই ইমার্জেন্সি দরজা থাকে। কখনও জরুরি অবস্থায় বিমানকে সমুদ্রে বা মাটিতে নামতে হলে সেই দরজা খুলে দেওয়া হয়। বাচ্চাদের পার্কে যেমন স্লিপ থাকে, তেমনই রবারের স্লিপ দরজা থেকে আপনা আপনিই নেমে আসে মাটিতে। সেখান থেকে বাচ্চাদের স্লিপে চড়ার মতো করেই যাত্রীরা নীচে নেমে আসেন। এ দিন পাইলটের নির্দেশ পেয়ে ওই ইমার্জেন্সি দরজা খুলে স্লিপগুলি নামিয়ে দেন বিমানসেবিকারা। কাছেই ছিলেন উপকূলরক্ষী বাহিনীর কয়েক জন অফিসার। তাঁরা বুঝতে পেরে ছুটে আসেন। তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্সও নিয়ে আসা হয়। তৎপর হয় বিমানবন্দরের দমকল ও অন্য জরুরি পরিষেবা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy