রাহুল গাঁধী
বামেদের সঙ্গে জোট ছাড়া বিকল্প পথ নেই। বাংলায় বিজেপির উত্থান মোকাবিলা করার জন্যও বাম ও কংগ্রেসের যৌথ লড়াই প্রয়োজন। এই সুরেই রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বৈঠকে সওয়াল করলেন বাংলার কংগ্রেস নেতারা। এমনকি, গত বছর লোকসভা ভোটের আগে যাঁদের আসন সংক্রান্ত দাবির জেরে বামেদের সঙ্গে সমঝোতা ভেস্তে গিয়েছিল, তাঁদেরও এখন প্রদেশ নেতৃত্বের বাকিদের সঙ্গে সুর এক।
বৈঠকের পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবু বলেন, ‘‘বামেদের সঙ্গে যৌথ আন্দোলনের পথেই আমরা চলছি। বাংলায় দলের মধ্যে অন্যে কোনও মতামত আছে কি না, কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব তা বুঝতে চেয়েছিলেন। রাজ্যে দলের সকলেই একসুরে মত দিয়েছেন। এর পরে হাইকম্যান্ডের আনুষ্ঠানিক সম্মতি এলে আমরা আসন-রফা সংক্রান্ত পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করব।’’
রাজ্যে বেশ কিছু দিন ধরে বামেদের সঙ্গে যৌথ কর্মসূচি নিয়েই এগোচ্ছে কংগ্রেস। তবু প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে অধীর চৌধুরী দায়িত্ব নেওয়ার পরে দলের অন্দরের মনোভাব বুঝে নিতে চেয়েছিলেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই লক্ষ্যেই বৈঠক ডেকেছিলেন রাহুল। বৈঠকে উপস্থিত বাংলার সব নেতাই হাত তুলে বামেদের সঙ্গে জোটের পক্ষে সায় দিয়েছেন। রাজ্য কংগ্রেসের এই মনোভাবের কথা রাহুল কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে জানাবেন।
দিল্লি থেকে শুক্রবার রাহুলের সঙ্গেই অনলাইন বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপাল, বাংলায় এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক জিতিন প্রসাদ, বি পি সিংহ এবং অধীরবাবু। দিল্লি থেকেই বৈঠকে ছিলেন দুই প্রাক্তন সাংসদ দীপা দাশমুন্সি ও অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। কলকাতা থেকে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, সন্তোষ পাঠক এবং মনোজ চক্রবর্তী, অসিত মিত্র, নেপাল মাহাতো-সহ ডজনখানেক বিধায়ক। করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে থাকায় বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং অসুস্থতার কারণে সাংসদ আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী বৈঠকে ছিলেন না।
বৈঠকে এ দিন অধীরবাবু ও প্রদীপবাবু বলেন, বাম ও কংগ্রেস একসঙ্গে রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূলের বিকল্প হয়ে ওঠার লড়াই করতে পারবে। আলাদা লড়লে বাম ও কংগ্রেস, দু’পক্ষেরই ক্ষতি এবং বিজেপির লাভ। আবার বিরোধী কংগ্রেস এখন নির্বাচনের মুখে শাসক তৃণমূলের হাত ধরতে চাইলে প্রতিষ্ঠান-বিরোধী ভোটের ফায়দা তুলে নেবে বিজেপি। উপরন্তু, কংগ্রেসের যতটুকু সাংগঠনিক অস্তিত্ব আছে, তা-ও বিপন্ন হবে। এই মত সমর্থন করেন মনোজবাবু, অসিতবাবুরা।
রাহুল জানতে চান, আসনের ব্যাপারে তাঁদের কি নির্দিষ্ট কোনও দাবি আছে নাকি বিষয়টি আলোচনা সাপেক্ষ? প্রদীপবাবুরা বলেন, ২০১৬ সালে কংগ্রেস যে ৯২টি আসনে লড়েছিল, সেই সংখ্যা কম হবে না বলেই তাঁরা আশাবাদী। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, দীপা বলেন, সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে কংগ্রেসের উচিত ‘ভাল ও ইতিবাচক’ আসনে নজর দেওয়া। সংখ্যার জন্য সংখ্যা বাড়িয়ে লাভ নেই। প্রসঙ্গত, দীপার রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে লড়ার দাবি কংগ্রেস ধরে রাখতে গিয়েই গত বছর সমঝোতা ভেস্তে গিয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy