Advertisement
E-Paper

ত্রিকোণ প্রেমেই কি পুড়িয়ে খুন 

ভূপতিনগরে যুবককে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগের ঘটনায় খানজাদাপুর গ্রামে মানুষের একাংশের দাবি, মৃত রঞ্জিত মণ্ডল ওরফে মিঠুর সঙ্গে সায়নীর সম্পর্ক ছিল। ঘটনার পর পুলিশ ইতিমধ্যেই ৬ জনকে আটক করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২৩:১৫
রঞ্জিত মণ্ডল

রঞ্জিত মণ্ডল

প্রথমে খুন, পরে খুনের কারণ অনুসন্ধানে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের সামনে উঠে এসেছে ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্ব।

ভূপতিনগরে যুবককে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগের ঘটনায় খানজাদাপুর গ্রামে মানুষের একাংশের দাবি, মৃত রঞ্জিত মণ্ডল ওরফে মিঠুর সঙ্গে সায়নীর সম্পর্ক ছিল। ঘটনার পর পুলিশ ইতিমধ্যেই ৬ জনকে আটক করেছে। এঁরা হলেন মিঠুর প্রেমিকা সায়নী মণ্ডল, তাঁর বাবা মদনমোহন মণ্ডল, মা পরি মণ্ডল ও ভাই সোমশঙ্কর মণ্ডল এবং রঞ্জিতের দুই বন্ধু খানজাদাপুর গ্রামের বাসিন্দা পবিত্র সিং ওরফে সমীর ও অসিত দাস। তবে পুলিশকে সায়নী জানিয়েছে, রঞ্জিতের সঙ্গে তাঁর কোনও প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। একই দাবি সায়নীর পরিবারেরও।

তদন্তে নেমে পুলিশ ইতিমধ্যে একটি স্টিলের বালা, রুপোর আংটি ও রঞ্জিতের মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে। সায়নীদের বাড়ি থেকেই ওই বালা ও আংটি উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। রঞ্জিতের পরিবারের দাবি, ওই বালা ও আংটি রঞ্জিত ব্যবহার করতেন। কিছুদিন আগেই স্থানীয় ভীমমেলা থেকে রঞ্জিত ওই বালা কিনেছিলেন। আংটি রঞ্জিত বাঁ হাতে ব্যবহার করতেন। এর প্রমাণ হিসাবে পুলিশকে রঞ্জিতের পরিবারের তরফে ছবিও দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার রাতে সায়নীর বাড়ির কাছেই রঞ্জিতের জ্বলন্ত দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তা হলে এই বালা ও আংটি সায়নীর বাড়িতে গেল কী ভাবে? পুলিশের দাবি, সায়নীর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই বালা ও আংটি সায়নীর ভাই ব্যবহার করত। সঠিক তথ্য কী তা থতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

রঞ্জিতের পরিবারের অভিযোগ, রঞ্জিতের শরীরে কোনও দাহ্য বস্তু দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে পুলিশেরও তাই ধারণা। তবে রঞ্জিতের পরিবারের তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছে, সায়নীর পরিবার সহ আরও কেউ রঞ্জিতকে জ্বালানোর কাজে যুক্ত থাকতে পারে। রঞ্জিতের মোবাইল ফোনটি তাঁর এক বন্ধুর কাছ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ফোনটি এক হাজার টাকার বিনিময়ে রঞ্জিত তাঁর কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে ওই যুবক। ওই মোবাইল কে ফোন করেছিল বা কাকে ফোন করা হয়েছিল তাও তদন্ত করছে পুলিশ।

ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্ব হিসাবে পুলিশের যুক্তি, ঘটনার কিছুদিন আগে রঞ্জিত খানজাদাপুর গ্রামের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য ও মোড়ল রেবতী পালের কাছে গিয়েছিলেন। রেবতী বলেন, ‘‘রঞ্জিত তাঁকে জানিয়েছিল যে সায়নীকে সে তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকার জিনিস বিভিন্ন সময়ে কিনে দিয়েছে। এমনকী বিভিন্ন সময়ে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা সে দিয়েছে। অথচ সায়নী এখন তাঁকে বিয়ে করার ক্ষেত্রে বেঁকে বসেছে। কারণ সায়নী পাশের আঙারবেড়িয়া গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্কে জড়িয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমি রঞ্জিতকে এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছিলাম। ওই ঘটনার পর সায়নীর মাও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। এমনকী রঞ্জিত সায়নীকে বিরক্ত করছে বলে আমার কাছে অভিযোগ করেন। আমি ওঁদের পুলিশে অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দিয়েছিলাম।’’

স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য মানব পড়ুয়া বলেন, “গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকেই এই ঘটনার পিছনে ত্রিকোণ প্রেম আছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। আমরা চাই পুলিশ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করুক এবং আরও কেউ যুক্ত আছে কিনা খুঁজে বের করুক।’’

জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “রবিবার কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে রঞ্জিতের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। কিন্তু ময়না তদন্তের রিপোর্ট এখনো হাতে আসেনি। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’’

Murder Deat Investigation Police love Triangle
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy