Advertisement
E-Paper

তৃণমূলের গোষ্ঠী-সংঘর্ষ, ক্যানিংয়ে প্রাণ গেল কিশোর ছাত্রের

তৃণমূলেরই একটি সূত্রের দাবি, লড়াইটা দলের মূল সংগঠনের সঙ্গে যুবর। এ দিন বিকেলে ক্যানিং-১ ব্লক এলাকায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে দলের জয়ী সদস্যদের ক্যানিং বাসস্ট্যান্ডে সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করেছিল ব্লক যুব তৃণমূল।

সামসুল হুদা

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৪৬
নিথর: ক্যানিংয়ের পড়ুয়া মিজানুর রহমান। —নিজস্ব চিত্র।

নিথর: ক্যানিংয়ের পড়ুয়া মিজানুর রহমান। —নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চায়েত ভোটের পরেও শাসক দলের গোষ্ঠী-সংঘর্ষে বারবার উত্তেজনা ছড়িয়েছে ক্যানিংয়ে। বোর্ড গঠনের পরেও সেই সংঘর্ষ থামানো যায়নি। রবিবার বিকেলে তা পৌঁছে গেল গুলি-বোমার লড়াইয়ে। গুলিতে প্রাণ গেল আঠেরো বছরের এক মাদ্রাসা ছাত্রের। জখম হন তৃণমূলের দু’জন। মৃতদেহ উদ্ধার করতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ।

তৃণমূলেরই একটি সূত্রের দাবি, লড়াইটা দলের মূল সংগঠনের সঙ্গে যুবর। এ দিন বিকেলে ক্যানিং-১ ব্লক এলাকায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে দলের জয়ী সদস্যদের ক্যানিং বাসস্ট্যান্ডে সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করেছিল ব্লক যুব তৃণমূল। তাতে যোগ দিতে আশপাশের এলাকা থেকে যুব তৃণমূল কর্মীরা মিছিল করে আসছিলেন। প্রায় সাড়ে ৪টে নাগাদ লড়াই শুরু হয় ক্যানিংয়ের গোলাবাড়ি এলাকায়। চলে ঘণ্টাখানেক।

পুলিশ জানায়, নিহতের নাম মিজানুর রহমান। দলের মূল সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর বাড়ি গোলাবাড়িতেই। বুকে গুলি লাগায় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। বাঁ হাতে গুলি লাগে আর এক তৃণমূল কর্মী মুছা শেখের। যুব তৃণমূল কর্মী সমতুল গায়েনও জখম হন। তাঁর পিঠে গুলি লাগে। তাঁকে ক্যানিং হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

এ দিন রাত আটটা পর্যন্ত পুলিশ নিহত মিজানুরের দেহ উদ্ধার করতে পারেনি। বস্তুত, গোলমালের পরে দেহ উদ্ধার করতে গিয়েই বাধা পায় পুলিশ। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে দেহ আটকে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন তৃণমূল কর্মীরা। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। উড়ে আসতে থাকে ইটও। সেই ইটের ঘায়ে এবং ভাঙা কাচের টুকরোয় জখম হন জীবনতলা থানার ওসি সুভাষ ঘোষ। এর পরে পুলিশ বাহিনী, র‌্যাফ এবং কমব্যাট ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়। কিন্তু দেহ উদ্ধার করতে যেতেই ফের বাধা আসে। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, তল্লাশি চলছে। গোলমালে জড়িত অভিযোগে চার জনকে আটক করা হয়েছে। রাত পর্যন্ত থানায় কোনও অভিযোগ হয়নি। কিন্তু কেন অশান্তি?

তৃণমূলেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে, দলের ব্লক যুব সভাপতি পরেশরাম দাসের সঙ্গে ব্লক সভাপতি শৈবাল লাহিড়ীর গোষ্ঠী-বিবাদ দীর্ঘদিনের। এ দিন পরেশরামের ডাকেই সংবর্ধনা সভা হচ্ছিল। মানতে পারেনি শৈবাল-গোষ্ঠী। শৈবাল অনুগামী, তথা দলের অঞ্চল সভাপতি খতিব সর্দারের অভিযোগ, ‘‘যুব তৃণমূলের ছেলেরাই আমাদের মিছিলে হামলা চালিয়েছে। ওদের গুলিতেই আমাদের একজন মারা গিয়েছেন।’’
অভিযোগ মানতে চাননি পরেশরাম। তাঁর দাবি, ‘‘ওই ঘটনায় যুব তৃণমূলের কেউ জড়িত নন। পুলিশ দোষীদের খুঁজে শাস্তি দিক।’’ পক্ষান্তরে, শৈবালও দাবি করেছেন, ‘‘গোলমালে আমাদের কেউ জড়িত নন। পুলিশ দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করুক।’’
দলের এই গোষ্ঠী-কাজিয়া নিয়ে জেলা তৃণমূলের ভাইস-চেয়ারম্যান শক্তি মণ্ডল জানান, দলের ঊর্ধ্বে কেউ নন। দল ওই ঘটনায় দোষীদের পাশে থাকবে না। পুলিশকে নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে বলা হয়েছে।

TMC Death Canning
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy