জল জীবন মিশনের কাজের মান ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই এ বার কঠোর অবস্থান নিল কেন্দ্র। জল জীবন মিশন (জেজেএম)-এর কাজের ক্ষেত্রে জরিমানা, কালো তালিকাভুক্তি বা অর্থ ফেরতের মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এমন ঠিকাদার ও প্রকল্প রূপায়ণে অংশগ্রহণকারী তৃতীয় পক্ষ সংস্থার বিস্তারিত তথ্য চেয়ে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিবদের কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছে জলশক্তি মন্ত্রকের অধীনস্থ পানীয় জল ও পয়ঃনিষ্কাশন দফতর (ডিডিডাবলুএস)।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হল প্রকল্পের আর্থিক স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং তৃণমূল স্তরে কাজের মান যাচাই করা। কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্যগুলিকে এমন সব ঠিকাদার ও সংস্থার নাম জানাতে হবে, যারা মিশনের কাজের অনিয়ম বা নিম্নমানের কাজের জন্য দোষী প্রমাণিত হয়েছে। একই সঙ্গে, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও যদি সাসপেনশন, চাকরিচ্যুতি বা এফআইআর দায়েরের মতো পদক্ষেপ করা হয়ে থাকে, সে বিষয়েও বিস্তারিত জানাতে হবে। দফতরের নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, যে সব ক্ষেত্রে এফআইআর দায়ের হয়েছে, প্রতিটি ঘটনার জন্য একটি এক পাতার সারসংক্ষেপ জমা দিতে হবে। পাশাপাশি তথ্য সঠিক ভাবে যাচাই করতে হবে।
উল্লেখযোগ্য ভাবে, সম্প্রতি জল জীবন মিশন নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই কেন্দ্র মিশনের সময়সীমা ২০২৮ পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্যগুলির কাছ থেকে পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহ ভবিষ্যতে দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
প্রসঙ্গত, দেশের অন্য রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মতো পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের কাছেও এই নির্দেশিকা এসে পৌঁছেছে । এমনটাই জানিয়েছেন দফতরের এক আধিকারিক। তবে জল জীবন মিশন কার্যকর করা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে গোলমাল বেধেছে রাজ্য সরকারের। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন, জল জীবন মিশনকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার জল স্বপ্ন প্রকল্প বলে চালানোর চেষ্টা করছে। পাল্টা জবাবে বিরোধী দলনেতার এমন অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী পুলক রায়। সেই প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় সরকারের চাওয়া তথ্য দেওয়া হচ্ছে বলেই জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের এক শীর্ষকর্তা। তাঁর কথায়, ‘‘এপ্রিল মাস থেকেই এই প্রকল্পের বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে । সেই নির্দেশিকা হাতে আসার পরে আমরা এই বিষয়ে যাবতীয় তথ্য সেই সময় থেকেই পাঠানো শুরু করে দিয়েছি । তাই আমাদের কাছে এই নির্দেশিকা নতুন কোনও বিষয় নয়।’’