নদী ভাঙন রুখতে একের পর এক পদক্ষেপ করলেও পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। মালদহ, মুর্শিদাবাদ জেলার পাশাপাশি হাওড়ার উলুবেড়িয়াতেও অব্যাহত নদী ভাঙন নিয়ে চরম উদ্বেগে সেচ দফতর। নদীপারের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা এখনও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এই অবস্থায় ভাঙন আটকাতে নতুন করে ‘সার্কুলার সসেজ’ পদ্ধতি প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেচ দফতর। এই প্রক্রিয়া সফল হলে ভাঙনপ্রবণ সব এলাকাতে ‘সার্কুলার সসেজ’ পদ্ধতি চালু করা হতে পারে বলেই মত সেচ দফতরের আধিকারিকদের।
নয়া এই পদ্ধতিতে লম্বা বাঁশের তৈরি বিশেষ খাঁচার ভিতরে বিপুল পরিমাণ ইট বোঝাই করে নদীর ভাঙনপ্রবণ অংশে উলম্ব ভাবে পাতা হচ্ছে। সেচ দফতরের আধিকারিকদের আশা, এর ফলে নদীর স্রোতের ধাক্কা অনেকটাই কমবে এবং পারের ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন:
এর আগে ভাঙনপ্রবণ এলাকায় ভাঙা ইটের টুকরো ফেলা, বালির বস্তা বসানো, নদীবাঁধে পলি মার্কিং শিট বিছানো, বাঁশের খাঁচা বা পরকো পাতা এবং ইটের ম্যাট্রেস বসানোর মতো একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু এত কিছুর পরেও নদী ভাঙন পুরোপুরি আটকানো যায়নি। বর্ষা ও স্রোতের তীব্রতায় বহু জায়গায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে দফতর সূত্রে খবর।
এই পরিস্থিতিতে শেষ ভরসা হিসাবেই ‘সার্কুলার সসেজ’ পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই উলুবেড়িয়ার জগদীশপুর এলাকায় এই কাজ শুরু হয়েছে। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি বাঁশের খাঁচা প্রায় ২০ মিটার লম্বা এবং তাতে প্রায় ছ’হাজারটি ইট বোঝাই করা হচ্ছে। প্রতিটি ভাঙনপ্রবণ এলাকায় এমন ন’টি করে খাঁচা পাতা হবে। সেচ দফতরের পরিকল্পনা অনুযায়ী, মোট ১১টি ভাঙনপ্রবণ এলাকায় সব মিলিয়ে ৯৯টি ‘সার্কুলার সসেজ’ বসানো হবে। এর মধ্যে উলুবেড়িয়ার দু’টি ভাঙনপ্রবণ অঞ্চলের পাঁচটি স্থানে মোট ৪৫টি খাঁচা বসানোর কথা রয়েছে। সেচ দফতরের আশা, এই বিশেষ প্রযুক্তি সফল হলে নদী ভাঙনের ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে এবং নদীপারের বাসিন্দাদের আতঙ্ক কিছুটা হলেও কমবে।