Advertisement
E-Paper

বিহারে আইসিইউয়ে গ্যাংস্টার খুনে বাংলা যোগ? পুরুলিয়ার জেলে বসে কি চন্দনকে হত্যার ছক কষেছেন ‘মূলচক্রী’ শেরু?

গত বৃহস্পতিবার সকালে পটনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে খুন হন মেডিক্যাল প্যারোলে থাকা সাজাপ্রাপ্ত কুখ্যাত বন্দি চন্দন। সাতসকালে পাঁচ জনের একটি সশস্ত্র দল হাসপাতালের আইসিইউ-তে ঢুকে চন্দনকে গুলি করে খুন করে চম্পট দেয়।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৫ ২২:০৯
তৌসিফদের সুপারি দিয়েছিলেন শেরু সিংহ?

তৌসিফদের সুপারি দিয়েছিলেন শেরু সিংহ? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বিহারে গ্যাংস্টার খুনে এ বার সরাসরি নাম জড়াল বাংলার। তদন্তকারীদের একাংশের ধারণা, গোটা ঘটনার নেপথ্যে মূলচক্রী এ রাজ্যের পুরুলিয়া জেলা সংশোধনাগারে বন্দি শেরু সিংহ। পুরনো শত্রুতার জেরেই পুলিশি নিরাপত্তায় আইসিইউ-তে ভর্তি থাকা চন্দন মিশ্রকে খুনের ষড়যন্ত্র করেছিলেন তিনি। শেরুর নির্দেশেই গোটা অপারেশনের জন্য মোটা অঙ্কের সুপারি দেওয়া হয়েছিল তৌসিফ রাজা ওরফে বাদশার দলকে। তৌসিফকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে বিহার পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর দলের আরও পাঁচ জনকে। বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গের এসটিএফ-এর যৌথ অভিযানে ওই পাঁচ জন কলকাতা সংলগ্ন নিউ টাউনের একটি আবাসন থেকে গ্রেফতার হয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার সকালে পটনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে খুন হন মেডিক্যাল প্যারোলে থাকা সাজাপ্রাপ্ত কুখ্যাত বন্দি চন্দন। সাতসকালে পাঁচ জনের একটি সশস্ত্র দল হাসপাতালের আইসিইউ-তে ঢুকে চন্দনকে গুলি করে খুন করে চম্পট দেয়। ঘটনার তদন্তে নেমে বিহার পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স বিহারের ফুলওয়ারি শরিফ থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে হামলাকারী দলের প্রধান তৌসিফ রাজা ওরফে বাদশাকে। এর পর থেকেই ওই ঘটনায় শেরুর নাম উঠে আসতে শুরু করে। তাঁকে বিহার পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

কে এই শেরু? তদন্তকারীদের একটি অংশ জানান, আপাতত পুরুলিয়া জেলা সংশোধনাগারে বন্দি শেরুর আসল নাম ওঙ্কারনাথ। বিহারের বক্সার জেলার কুখ্যাত এই দুষ্কৃতীর সঙ্গে এক সময় হৃদ্যতা গড়ে উঠেছিল চন্দনের। দু’জনের গোষ্ঠী মিলিত হয়ে এক সময়ে বক্সার-সহ বিহারে কার্যত অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিল। কমপক্ষে ডজনখানেক খুন, বেশ কয়েকটি সোনার দোকানে ডাকাতি, তোলাবাজি-সহ একাধিক ঘটনায় নাম জড়ায় চন্দন এবং শেরুর দলের।

বিহার পুলিশ সূত্রে খবর, ২০০৮ সাল থেকে ওই গ্যাং নানা দুষ্কর্ম করলেও, দলের উপর নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে বছর কয়েকের মধ্যেই চন্দন এবং শেরুর দ্বন্দ্ব শুরু হয়। পরে চন্দন নিজের দলকে শেরুর দলের থেকে পৃথক করে একক ভাবে দুষ্কর্ম করা শুরু করেন। পরে দু’জনেই গ্রেফতার হন এবং পরে আদালত দু’জনকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। বিহার পুলিশের একটি সূত্রে খবর, শেরু একবার জেল থেকে পালিয়েও গিয়েছিলেন। পরে নেপাল সীমান্ত থেকে আবার ধরা পড়েন। এর পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিহারের আরা ও বক্সার জেলে রাখা হয় শেরুকে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের ২৯ অগস্ট পুরুলিয়ার একটি নামী প্রতিষ্ঠানের সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় নাম জড়ায় শেরুর। অভিযোগ ওঠে বক্সার জেলে বসেই সেই সময় এই ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে ২০২৩ সালের ২৩ নভেম্বর পুরুলিয়া জেলা পুলিশ শেরুকে শোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে পুরুলিয়া জেলা সংশোধনাগারে নিয়ে আসে। তার পর থেকে সেখানেই বন্দি শেরু। সম্প্রতি পাটনায় চন্দন মিশ্র খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে সেই ঘটনাতেও শেরু সিং এর যোগ এর প্রাথমিক সূত্র হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা । এক্ষেত্রেও অভিযোগ উঠেছে শেরু সিং সম্ভবত পুরানো শত্রুতার জেরে পুরুলিয়া জেলা সংশোধনাগারে বসেই চন্দন মিশ্রকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল । তার নির্দেশেই চন্দন মিশ্রকে খুনের জন্য তৌসিফ রাজা ওরফে বাদশাকে মোটা অঙ্কের সুপারি দেওয়া হয়েছিল বলেও প্রাথমিক তদন্তে অনুমান তদন্তকারীদের । চন্দন মিশ্র খুনে শেরু সিং এর নাম উঠতে শুরু করায় বিহার পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স পুরুলিয়া জেলা সংশোধনাগারে বন্দী শেরু সিং কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে ।

Gangster Bihar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy