Advertisement
E-Paper

গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বই কি কারণ, রহস্য ঘনাচ্ছে দাড়িভিটে

স্কুল পরিচালন সমিতির মোট সদস্য ৮ জন। জনে জনে যোগাযোগ করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তার মধ্যে প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ কুণ্ডু, সভাপতি নিশা গণেশ, সহ-প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদাকে বাড়িতে গিয়েও পাওয়া যায়নি।

শুভঙ্কর চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:১০
ক্ষুব্ধ: গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে তৃণমূল বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবাল ও মন্ত্রী গোলাম রব্বানি। রবিবার দাড়িভিটে। নিজস্ব চিত্র।

ক্ষুব্ধ: গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে তৃণমূল বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবাল ও মন্ত্রী গোলাম রব্বানি। রবিবার দাড়িভিটে। নিজস্ব চিত্র।

মাত্র ২৪ ঘণ্টাতেই কেন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে স্কুল সিদ্ধান্ত বদলে ফেলল, চার দিনেও সেই রহস্য কাটেনি দাড়িভিটে। স্কুল পরিচালন সমিতির এক সদস্য তপনকুমার মজুমদার রবিবার ইসলামপুর থানায় গিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, ১৮ সেপ্টেম্বর পরিচালন সমিতির সভায় সিদ্ধান্ত হয়, উর্দু ও সংস্কৃতের শিক্ষককে ফেরত পাঠানোই হবে। কিন্তু এক দিন পরে পরিচালন সমিতির অধিকাংশ সদস্যকেই অন্ধকারে রেখে ওই দুই শিক্ষককে স্কুলে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে তাঁর দাবি। তপনবাবু বলেন, ‘‘সে কারণে স্কুলের প্রধান শিক্ষক, সহ-প্রধান শিক্ষক ও জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের বিরুদ্ধে আমি এফআইআর করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ইসলামপুর থানা আমার সেই অভিযোগ নেয়নি।’’ পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ মুখ খুলতে চায়নি ইসলামপুর থানাও।

তপনবাবুর সঙ্গে থানায় গিয়েছিলেন স্থানীয় পণ্ডিতপোতা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সুবোধ মজুমদার। সুবোধবাবু ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবালের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। আবার স্কুলের সহ-প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদা গোয়ালপোখরের তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী গোলাম রব্বানির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

রব্বানি ও কানাইয়ালাল এ দিন এক সঙ্গেই এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু কংগ্রেসের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের দাবি, ‘‘লোকসভা ভোটের টিকিট নিয়ে কানাইয়ালাল ও রব্বানির গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বেই দাড়িভিটে গন্ডগোল লেগেছে।’’ বিরোধীদের বক্তব্য, রব্বানি চেয়েছিলেন ওই দুই শিক্ষক স্কুলে যোগ দিন, কানাইয়ালাল তা চাননি। সব গোলমালের মূল এখানেই। চাকুলিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান রাম্‌জেরও (ভিক্টর) অভিযোগ, রব্বানির নির্দেশের জেরেই এমন ঘটনা ঘটেছে।

যদিও জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ও মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী দুই বিধায়কের টানাপড়েনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কানাইয়ালাল ইসলামপুরের দায়িত্বে। রব্বানির দায়িত্ব গোয়ালপোখর, সেই সঙ্গে অতিরিক্ত চাকুলিয়া। কেউ কারও কাজে হস্তক্ষেপ করেন না। এ সব কথার কোনও ভিত্তি নেই!’’ রব্বানিও বলেন ‘‘স্কুলে নিয়োগ নিয়ে পরিচালন সমিতির কয়েক জন সদস্য ও শিক্ষক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। আমি কোনও মত জানাইনি। স্কুল কর্তৃপক্ষ কেন এক রকম সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বদলে ফেললেন, তা তাঁদেরই বলতে হবে।’’ কানাইয়ালালও বলছেন, ‘‘দলে কোনও গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব নেই। কিন্তু কেন স্কুল কর্তৃপক্ষ মাত্র এক দিনে সিদ্ধান্ত পুরো বদলে ফেললেন, তার তদন্ত আমি দাবি করেছি।’’ সুবোধবাবুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে অবশ্য কানাইয়ালাল মুখ খুলতে চাননি।

আরও পড়ুন: পুলিশকে গাছে বেঁধে মারুন, হুমকি দিয়ে ধৃত বিজেপি নেতা

স্কুল পরিচালন সমিতির মোট সদস্য ৮ জন। জনে জনে যোগাযোগ করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তার মধ্যে প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ কুণ্ডু, সভাপতি নিশা গণেশ, সহ-প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদাকে বাড়িতে গিয়েও পাওয়া যায়নি। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক নারায়ণচন্দ্র মণ্ডলের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁকে সাসপেন্ড করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর। সহ বিদ্যালয় পরিদর্শক (ইসলামপুর) প্রবালরঞ্জন সাঁতরার দাবি, ‘‘ওই স্কুলের বিষয়ে কিছুই জানি না। যা হয়েছে, নারায়ণবাবুর সঙ্গে সরাসরি কথা বলে হয়েছে।’’

এ সবের প্রেক্ষিতে নিহত রাজেশের বাবা নীলকমল সরকারের বক্তব্য, ‘‘কেউই কিছু জানেন না, তবু এত বড় ঘটনা ঘটে গেল! সেই জন্যই আমরা চাই সিবিআই তদন্ত হোক।’’

Darivit Islampur Shooting দাড়িভিট ইসলামপুর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy