জঙ্গপানা চা-বাগান খুলছে। সেই খবর পেয়ে খুশি শ্রমিকেরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
শেষ পর্যন্ত জঙ্গিপনা কল্কে পেল না জঙ্গপানায়।
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নিয়ন্ত্রণাধীন চা শ্রমিক সংগঠনের হুমকির মুখে গত ৩১ জুলাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল শতবর্ষ প্রাচীন জঙ্গপানা চা বাগান। মঙ্গলবার অবশ্য মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে যুগ্ম শ্রম কমিশনারের দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে শ্রমিক নেতারা মালিকপক্ষের সব শর্ত মেনে নেওয়ায় আজ, বুধবার থেকে ফের খুলছে ওই বাগান। মালিকপক্ষের দাবি মেনে এ ভাবে বাগান খোলা বেনজির।
দার্জিলিং টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা সন্দীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাগান খোলার জন্য যে শর্তগুলি দেওয়া হয়েছিল, সবই মানা হয়েছে। তাই বাগান খুলতে আর বাধা নেই।”
জঙ্গপানা বাগানের মালিক শান্তনু কেজরীবাল বলেন, “সমস্যা মিটে যাওয়ায় আমরা খুশি। আগে বাগানে কোনও দিন সমস্যা হয়নি। এই প্রথম হল এবং এত দিন বাগান বন্ধ রাখতে হল। আশা করব, বাগান বন্ধের ঘটনা এটাই শেষ।” তাঁর দাবি, বাগান এত দিন বন্ধ থাকায় এখনই পুরো মাত্রায় চা পাতা মিলবে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে তিন সপ্তাহ সময় লাগবে। তাই সব মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার কেজি চা কম তৈরি হবে। ফের গোলমাল না হলে স্বল্পমেয়াদী এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
এক কর্মী নিয়োগকে ঘিরে শ্রমিক সংগঠন হুমকি দিয়ে ভয় দেখিয়েছে, এই অভিযোগ তুলে জুলাইয়ের শেষ দিনে বাগানে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্কের’ নোটিস ঝুলিয়ে দেয় মালিকপক্ষ। বেশ কয়েকটি বৈঠকেও সমাধান সূত্র মেলেনি। এ দিন অবশ্য শিলিগুড়ির বৈঠকে মোর্চা প্রভাবিত দার্জিলিং তরাই ডুয়ার্স প্ল্যান্টেশন লেবার ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা মালিকপক্ষের শর্ত মেনে নেয়। সেই মতো চুক্তিও হয়েছে। শ্রম দফতর জানিয়েছে, চুক্তিপত্রে বাগান পরিচালার কাজে শ্রমিক সংগঠন হস্তক্ষেপ করবে না বলে লেখা হয়েছে। কোনও দাবি থাকলে এক সঙ্গে অনেক শ্রমিক ভিড় না করে সংগঠনের প্রতিনিধিরা ম্যানেজারকে লিখিত প্রস্তাব দেবেন। মতানৈক্য তৈরি হলে সরাসরি শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
শিলিগুড়ির যুগ্ম শ্রম কমিশনার মহম্মদ রিজওয়ান বলেন, “কার শর্ত মানা হল বা হল না, বিষয়টি এ ভাবে দেখা ঠিক নয়। দু’পক্ষের সম্মতিতেই বাগান খুলছে।” তিনি জানান, বাগানের পরিচালনার কাজে শ্রমিক সংগঠন যেমন হস্তক্ষেপ করবে না বলেছে, তেমনই শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়েও মালিকপক্ষ আলোচনায় বসবে বলে স্থির হয়েছে।
শ্রমিক সংগঠনের অভিযোগ ছিল অভিজ্ঞতার মাপকাঠি এড়িয়ে মালিকপক্ষ ইচ্ছে মতো কর্মী নিয়োগ করেছে। এ দিন বৈঠকের পরে সেই বির্তকিত কর্মী নিয়োগে শ্রমিক সংগঠন সম্মতি দিয়েছে বলে মালিকপক্ষ দাবি করলেও, শ্রমিক সংগঠনের তরফে পাল্টা জানানো হয়েছে, বিষয়টির এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। আলোচনা চলছে। সংগঠনের আইনি পরামর্শদাতা তিলকচন্দ্র রোকা বলেন, “শ্রমিকদের স্বার্থই অগ্রাধিকার পাচ্ছে। সে জন্য সব কিছুই আমরা মানতে রাজি।” তাঁর দাবি, বাগানের সমস্যা নিয়ে আলোচনা চালানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy