Advertisement
E-Paper

স্ত্রী চাকুরিরতা হলেও বেকার স্বামীকে দিতে হবে ভরণপোষণ! চাকরি খুঁজে নিতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট

বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, বিবাহবিচ্ছেদের পর স্ত্রীর ভরণপোষণ যে কোনও স্বামীর সামাজিক, আইনি এবং নৈতিক দায়িত্ব। তা তিনি কোনও অজুহাতে এড়িয়ে যেতে পারেন না।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:৫৯

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

স্ত্রী মাসে ১২ হাজার টাকা আয় করেন। স্বামী বেকার। কিন্তু বেকারত্বকে তিনি দায়িত্ব এড়ানোর ‘ঢাল’ হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন না। স্ত্রীকে মাসে মাসে চার হাজার টাকা করে তাঁকে দিতেই হবে। একটি মামলায় এমনটাই নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। পারিবারিক আদালত স্বামীর আবেদন মেনে ভরণপোষণের বিরুদ্ধে নির্দেশ দিয়েছিল। তা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন স্ত্রী। পারিবারিক আদালতের নির্দেশ হাই কোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে বেকার স্বামীকে চাকরি খুঁজে নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অজয়কুমার মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, বিবাহবিচ্ছেদের পর স্ত্রীর ভরণপোষণ যে কোনও স্বামীর সামাজিক, আইনি এবং নৈতিক দায়িত্ব। তা তিনি কোনও অজুহাতে এড়িয়ে যেতে পারেন না। বিচারপতি আরও বলেছেন, ‘‘কোনও সক্ষম পুরুষ যদি বেকার হয়ে থেকে যান, তবে তা তাঁর ইচ্ছাকৃত ভাবে নেওয়া একটি সিদ্ধান্ত। আইনি বাধ্যবাধকতা এড়াতে তা তিনি ঢাল হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন না।’’

২০১২ সালের ৪ অগস্ট বিশেষ বিবাহ আইনে (স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্ট) ওই দম্পতির বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু সামাজিক বিবাহ না-হওয়ায় মহিলা শ্বশুরবাড়ি যাননি। অভিযোগ, নানা সময়ে স্বামী তাঁর বাড়িতে এসে থাকলেও তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে যেতে দেওয়া হয়নি। মহিলা তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এক বছরের মাথায়। তার পর স্বামী বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন। ভরণপোষণ বাবদ ওই মহিলা মাসে ১০ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন। কিন্তু পারিবারিক আদালতে স্বামী তার বিরোধিতা করেন এবং জানান, মহিলার নিজের রোজগার রয়েছে। কিন্তু স্বামী বেকার। পারিবারিক আদালত এই মামলায় স্বামীর পক্ষেই রায় দিয়েছিল। তা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে যান মহিলা।

পারিবারিক আদালত স্বামীকে ‘গরিব বেকার অসহায়’ বলে ব্যাখ্যা করেছিল। জানিয়েছিল, যত দিন না তাঁর স্বামী চাকরি পাচ্ছেন, তত দিন নিজের উপার্জনের মাধ্যমেই দিনযাপন করতে হবে মহিলাকে। কিন্তু হাই কোর্ট এই নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে। জানিয়েছে, মহিলার আয় সামান্য। বিচারপতি মুখোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, ‘‘স্বামী উপার্জনে সক্ষম, এতে কোনও সন্দেহ নেই। স্ত্রীর প্রতি আইনি দায়িত্ব তিনি অস্বীকার করতে পারেন না। মামলাকারী নিজের পেট চালানোর জন্য সামান্য কিছু রোজগার করছেন বটে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তিনি ভরণপোষণ পাবেন না।’’

আদালত জানতে পেরেছে, মামলাকারীর স্বামীকে অনিয়মের জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। চাইলেই তিনি অন্য চাকরি করতে পারেন। তিনি বেকার থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটা স্ত্রীর প্রতি দায়িত্ব এড়াতে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে না। প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে স্ত্রীকে চার হাজার টাকা করে ভরণপোষণ বাবদ দিতে হবে ওই যুবককে। এ ছাড়া ২০২৬ সালের অক্টোবরের মধ্যে স্ত্রীর ১২টি ইএমআই-এর খরচ দিতে হবে। তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের মামলা পারিবারিক আদালতে যেমন চলছে, তেমনই চলবে।

Divorce Case Calcutta High Court Maintenance Husband Wife
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy