মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের পরেও পুলিশি জুলুম তো কমেইনি, উল্টে বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুণ। এই অভিযোগ তুলে ৯ এবং ১০ জুলাই কলকাতা ও শহরতলিতে বাস ধর্মঘটের ডাক দিল ‘জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটস’। অন্যান্য বাস-মিনিবাস সংগঠনের পাশাপাশি ওই ধর্মঘটকে সমর্থন করেছে ‘বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট’, যেটি তৃণমূলপন্থী বাস সংগঠন হিসেবেই পরিচিত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে ধর্মঘটের বিরোধী, সেখানে প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের ওই সংগঠন কী ভাবে সরকারের বিরোধিতায় পথে নামছে।
শনিবার জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেট্সের কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন সংগঠনের সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি ঘোষণা করেন, ৯ ও ১০ জুলাই কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বাস-মিনিবাস ধর্মঘট করা হবে। সেখানেই তিনি ঘোষণা করেন, ওই ধর্মঘটকে সমর্থন করেছে বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট, মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি, অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতি। তপনবাবু বলেন, ‘‘অপরাধ না করলেও পুলিশ কেস দেয়। যত দিন যাচ্ছে, তার মাত্রাও বাড়ছে। ফলে এ ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না।’’
বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক দীপক সরকারকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘গত বছর অক্টোবরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে বৈঠক হয়েছিল। সেখানে এক টাকা ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হওয়ার পরে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছিলাম, পুলিশের জুলুম বন্ধ করতে হবে। কিন্তু দেখা গেল, জুলুম তো কমলই না, উল্টে বেড়ে গেল। এখন বাস চালানো দুষ্কর হয়ে পড়েছে।’’ তাঁর দাবি, এই সমস্যা নিয়ে বহু বার পরিবহণ সচিবকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও সদুত্তর মেলেনি।
একই সুর মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অবশেষ দাঁর। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি বাসগুলি তো স্টপ থেকেও ঠিকমতো যাত্রী তোলে না। আর আমরা যাত্রী তুললেই পুলিশ মিথ্যে কেস দেয়। সরকারকে বহু বার জানিয়েও লাভ হয়নি।’’
পুলিশের জুলুমের বিরুদ্ধে গত বছর অগস্টে ট্যাক্সি ধর্মঘটের পথে হেঁটেছিল ট্যাক্সি সংগঠনগুলি। ২২ জন ট্যাক্সিচালককে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে জামিন পেলেও এখনও সেই মামলা থেকে রেহাই পাননি ওই ট্যাক্সিচালকেরা। তার পরে দফায় দফায় ধর্মঘট দেখেছেন শহরবাসী। প্রতিনিয়ত ভুগতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। এ বার বাস ধর্মঘটের ধাক্কায় শহরবাসীর ফের ভোগান্তির আশঙ্কা রয়েই গেল। এ ব্যাপারে পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধর্মঘট হলে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হয়। আলোচনায় সমস্ত কিছুরই সমাধান হতে পারে। আমি বাস-মালিকদের আহ্বান করব, তাঁরা যেন সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান করেন।’’ তবে জয়েন্ট কাউন্সিলের তপনবাবু বলেন, ‘‘বহু বার আলাপনবাবুর সঙ্গে কথা হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি। যে কারণে বাধ্য হয়েই ধর্মঘটের পথে যেতে হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy