Advertisement
১৯ মে ২০২৪

মাওবাদী মোকাবিলায় জোর সমন্বয় আর যৌথ অভিযানেই

রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তাদের বরাবরের দাবি, এখন এ রাজ্যে মাওবাদীরা কোণঠাসা। কিন্তু, পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডে সেই সমস্যা থেকে গিয়েছে। এই আবহে মাও-আতঙ্ক মোকাবিলায় সমন্বয় বৈঠকে বসলেন দুই রাজ্যের পুলিশ কর্তারা।

পুরুলিয়ায় বৈঠকে দুই রাজ্যের পুলিশ কর্তারা। —নিজস্ব চিত্র

পুরুলিয়ায় বৈঠকে দুই রাজ্যের পুলিশ কর্তারা। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৩৪
Share: Save:

রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তাদের বরাবরের দাবি, এখন এ রাজ্যে মাওবাদীরা কোণঠাসা। কিন্তু, পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডে সেই সমস্যা থেকে গিয়েছে। এই আবহে মাও-আতঙ্ক মোকাবিলায় সমন্বয় বৈঠকে বসলেন দুই রাজ্যের পুলিশ কর্তারা। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া জেলা পুলিশ লাইনে ওই বৈঠক হয়। পুলিশেরই একটি সূত্রের খবর, ঘণ্টা দু’য়েকের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের মূল আলোচ্যই ছিল মাওবাদী সমস্যা। দুই রাজ্যের সীমান্ত সংলগ্ন জায়গায় থানাস্তরে সমন্বয় বাড়ানো, যৌথ টাস্কফোর্স গঠন-সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়।

এ দিনের বৈঠক শেষে আইজি (অপারেশন) ঝাড়খণ্ড এমএস ভাটিয়া বলেন, ‘‘আমাদের কাছে খবর আছে পূর্ব সিংভূম-ঝাড়গ্রাম সীমানায় নকশালদের কিছু সংগঠন ফের পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে। যৌথ ভাবে অপারেশন কী ভাবে করা যেতে পারে, সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কী ভাবে সমন্বয় জারি রাখা যেতে পারে, আলোচনা হয়েছে তা নিয়েও।’’ এ দিনের বৈঠকে দুই রাজ্যের যৌথ টাস্কফোর্সের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে এসেছে। এমএস ভাটিয়া মনে করেন, টাস্কফোর্স থাকলে সমস্যার মোকাবিলা করা অনেকটা সহজ হবে। দুই রাজ্যের সীমানা এলাকার থানাগুলির ম্যাপ মনিটরে রেখে এলাকা ধরে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।

এ দিনের এই হাই-প্রোফাইল বৈঠকে কে ছিলেন না? এ রাজ্যের তরফে উপস্থিত ছিলেন আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) রাজীব মিশ্র, আইজি (বর্ধমান রেঞ্জ) রাজেশ সিংহ, আইজি কাউন্টার ইন্সার্জেন্সি ফোর্স অজয় নন্দ, ডিআইজি (মেদিনীপুর রেঞ্জ) বাস্তব বৈদ্য ছাড়াও পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার, বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা, বীরভূমের পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার।

এই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা ছিল পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষেরও। কিন্তু পুরুলিয়ায় আসার পথে বিষ্ণুপুরের কাছে দুর্ঘটনায় জখম হন তিনি। ফলে বৈঠকে আর
আসতে পারেননি।

এ ছাড়াও ঝাড়খণ্ডের বোকারোর ডিআইজি শম্ভু ঠাকুর, ডিআইজি রাঁচি আর কে ধবন, ডিআইজি দুমকা অখিলেশ কুমার ঝা এবং দুমকা, বোকারো, সরাইকেলা-খরসঁওয়া, পূর্ব সিংভূম, রাঁচি, রামগড়, ধানবাদ, জামতাড়া ও পাকুড়ের পুলিশ সুপারেরা উপস্থিত ছিলেন। শুধু তাই নয় সিআরপিএফ-এর কর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

গত অগস্টের শেষে পূর্ব সিংভূম জেলার বুড়িবীরের জঙ্গলে মাওবাদীদের একটি শিবির রয়েছে, এই খবর পেয়ে যৌথবাহিনী ওই জঙ্গলে অভিযান চালায়। দু’পক্ষের গুলি বিনিময়ও হয়। মাওবাদীরা শিবির ছেড়ে জঙ্গলে গা ঢাকা দেয়। গত অগস্টের শেষ দিকে বেলপাহাড়ি ও ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার চেকাম জঙ্গলে যৌথবাহিনীর সঙ্গে ফের মাওবাদীদের গুলি বিনিময় হয়। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেও বান্দোয়ানের সিরকা ও পূর্ব সিংভূমের জোড়সা জঙ্গলে মাওবাদী-যৌথবাহিনী, দু’পক্ষের গুলি বিনিময় হয়। শেষমেষ চলতি সপ্তাহে ঝাড়গ্রামের কুশবনি জঙ্গল থেকে ল্যান্ডমাইন উদ্ধার করে যৌথবাহিনী।

বৈঠক শেষে আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) রাজীব মিশ্র বলেন, ‘‘এ দিন ঝাড়খণ্ড পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক হয়েছে। বেশ কিছু তথ্য আদান প্রদান হয়েছে।’’ এই রাজ্যের সীমানায় মাওবাদী সমস্যা সম্পর্কে তাঁর কাছে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘এখানকার পরিস্থিতি ঠিক আছে। তবে পরিস্থিতি যাতে ধরে রাখা যায় সেই চেষ্টাই করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

maoist
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE