টিএমসিপি নেতা আসাদুল শেখ
ডোমকলে ভোটের দু’দিন আগেই তৃণমূলের ছাত্রনেতা খুন নিয়ে তেতে উঠল মুর্শিদাবাদের রাজনীতি।
বহরমপুরের ভাকুড়িতে আসাদুল শেখ নামে ওই টিএমসিপি নেতা খুন হওয়ার পরেই জেলা পরিষদের সদস্য তথা প্রাক্তন সভাধিপতি শিলাদিত্য চৌধুরী-সহ কংগ্রেসের তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি দু’জন বহরমপুরের কাউন্সিলর তথা জেলা কংগ্রেস তফসিলি সেলের সম্পাদক হিরু হালদার ও শ্যামল হাজরা নামে এক কর্মী। শুক্রবার দুপুরে দিল্লি যাওয়ার জন্য কলকাতা বিমানবন্দরে ঢোকার সময়ে সন্তু সিংহ নামে আর এক জনকে ধরেছে পুলিশ। দুপুরেই বহরমপুর থানার আইসি শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাসকে ‘ক্লোজ’ করা হয়েছে।
ঘটনাটি সরাসরি ডোমকলের না হলেও সেই প্রসঙ্গই এখন বড় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ‘‘ডোমকলে প্রচারে যাওয়ার কারণেই দক্ষ সংগঠক আসাদুলকে খুন করা হয়েছে। গত রাতেই বিষয়টি আমি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। তিনিও উদ্বিগ্ন।’’ প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী পাল্টা বলেন, ‘‘ও কী এমন নেতা যে খুনের ছক কষতে যাবে কংগ্রেস! আমাদের লোকেদের মিথ্যে ফাঁসানো হচ্ছে।’’
বৃহস্পতিবার রাতে মোটরবাইকে বাড়ির দিকে যাওয়ার সময়ে হামলা চালানো হয় টিএমসিপি-র বহরমপুর (পূর্ব) ব্লক সভাপতি আসাদুল শেখের উপরে। বাবলু শেখ নামে এক জন বাইক চালাচ্ছিলেন, পিছনে ছিলেন আসাদুল। বাবলু মোটরবাইক ঘুরিয়ে পালাতে পারলেও আসাদুলকে টেনে নামিয়ে নেওয়া হয়। পরে রাস্তা থেকে যখন আসাদুলের দেহ মেলে। খুব কাছ থেকে পাঁচটা গুলি করা হয়েছিল তাঁকে। বাবলু মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
আসাদুলের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী সেলিনা বিবির দাবি, অধীর চৌধুরী তাঁকে খুন করার জন্য ভাড়াটে লোক লাগিয়েছেন বলে দিন দুই আগে স্বামী তাঁকে জানান। ডোমকলে যুব তৃণমূল নেতা সৌমিক হোসেনের হয়ে প্রচার চালানোয় কংগ্রেসের লোকজন তাঁকে খুনের হুমকিও দেয়। ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবারই ডোমকলে কংগ্রেস-সিপিএম জোটের হয়ে প্রচার করতে গিয়েছিলেন শিলাদিত্য। তিনি তো বটেই, হিরু এবং সন্তুও অধীরের খুবই ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
এ দিন আসাদুলের মরদেহে মালা দিতে এসে শুভেন্দু দাবি করেন, ‘‘এই সংস্কৃতি অধীর চৌধুরীরা অনেক দিন ধরেই মুর্শিদাবাদ জেলায়, বিশেষ করে বহরমপুরে চালিয়ে আসছেন। সম্প্রতি বহরমপুর-সহ সাতটা পুরসভায় বদল ঘটেছে। পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাওয়ায় খুনের রাজনীতি করা ছাড়া অধীরবাবুদের অন্য রাস্তা নেই।’’
ডোমকলে রাজনৈতিক ভাবে এঁটে উঠতে না পেরে বিরোধীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে শায়েস্তা করার চেষ্টা করছে বলে অনেক আগে থেকেই অভিযোগ করে আসছে জোট। অধীর এ দিন বলেন, ‘‘আমরা যখন মার খাই, পার্টি অফিসে হামলা হয়, তা পুলিশের চোখে পড়ে না। কিন্তু এখন তৃণমূল নেতাদের তৈরি করে দেওয়া তালিকা ধরে পুলিশ কংগ্রেস কর্মীদের গ্রেফতার করছে।’’
কী কারণে আইসি-কে ‘ক্লোজ’ করা হল, তা স্পষ্ট নয়। জেলা পুলিশ সূত্রের খব়র, তাঁর বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ আনা হয়েছে। যদিও পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy