Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Justice Abhijit Gangopadhyay

মেয়েদের জন্য আইন থাকলেও সবাই তার কাছে পৌঁছতে পারে না, আক্ষেপ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

সোমবার রাজা রামমোহন রায়ের ২৫১ বছরের জন্মদিন। তার প্রাক্কালে ভারতীয় সংবিধান ও মেয়েদের অধিকার নিয়ে বলতে ওঠেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

An image of Justice Abhijit Gangopadhyay

রামমোহন গ্রন্থাগার ঘুরে দেখলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শনিবার। ছবি: সুমন বল্লভ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৩ ০৭:৩২
Share: Save:

মেয়েদের জন্য আইন আছে। তবে সব মেয়ে সে আইনের কাছে পৌঁছতে পারেন না বলে শনিবার উত্তর কলকাতার রামমোহন গ্রন্থাগারে রামমোহন রায় স্মারক বক্তৃতায় আক্ষেপ করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

আগামিকাল, সোমবার রাজা রামমোহন রায়ের ২৫১ বছরের জন্মদিন। তার প্রাক্কালে ভারতীয় সংবিধান ও মেয়েদের অধিকার নিয়ে বলতে ওঠেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গেই ১৯৬১-র মাতৃত্ব কল্যাণ আইন কার্যকর করা প্রসঙ্গে আক্ষেপ করেছেন তিনি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘১৯৫০-এ সংবিধান চালু হলেও গর্ভাবস্থার ছুটির কথা ভাবা শুরু করতেই আমাদের দেশে আরও ১১ বছর লেগেছিল। কিন্তু সবাই এ ছুটি পান না। কারণ দারিদ্র। নীচের মহলে এই অন্যায় চলতেই থাকে।’’ তবে বিচারপতির কথায়, ‘‘আইনকে সব মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়াই বিচার বিভাগের পরীক্ষা।’’

একই রকম ভাবে বিচারপতি মনে করান, গৃহহিংসা সুরক্ষা আইন চালু হতে এ দেশে ২০০৫ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এবং কর্মক্ষেত্রে হেনস্থা প্রতিরোধ আইন চালু হতে ২০১৩ গড়িয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশে মেয়েদের মর্যাদার বিষয়টি অনেকেই বোঝেন না। মানসিক নির্যাতন নিয়েও সচেতনতার অভাব। কোনও মেয়েকে ব্যক্তিগত বিষয়ে খোঁটা দিয়ে কথা বলা বা হুমকি দেওয়াও নির্যাতনের শামিল। এ সব ক্ষেত্রে মেয়েরা পুলিশের মাধ্যমে নারী সুরক্ষা অফিসারের কাছে যেতে পারেন।’’ ইউরোপ, আমেরিকায় মেয়েদের মানসিক নির্যাতন নিয়ে আইন প্রয়োগের কার্যকারিতা কিছুটা বেশি বলে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিমত। কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার বিষয়টিতে সব অফিসেরই অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি গড়ার দায়িত্ব রয়েছে। তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘কর্মক্ষেত্রে মুখ খুলতে অনেকেই ইতস্তত করেন। আবার কিছুক্ষেত্রে মেয়েরা আইনের অপপ্রয়োগও করে থাকেন।’’

এ দেশের সংবিধান সবার জন্য সমানাধিকারের কথা বলেও মেয়ে বা শিশুদের বিশেষ আইন প্রণয়নের ব্যবস্থা রেখেছিল। এই ধরনের বিশেষ আইন তৈরি হতে দেরি হলেও বাস্তবে এমন আইনের বিস্তর উপযোগিতা রয়েছে বলে মনে করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। উনিশ শতকে বিলেতে ব্যারিস্টারি পড়তে গিয়ে এ দেশের মেয়ে কর্নেলিয়া সোরাবজির হেনস্থার কথাও এ দিন শুনিয়েছেন বিচারপতি। পুরুষদের বাধার ফলেই ব্যারিস্টারি পাশ করতে দশ বছর লাগে সেই ভারত-কন্যার। নানা ধরনের বৈষম্যের বাধা কাটিয়ে মেয়েদের এগিয়ে চলার কথাই এ দিন বিচারপতি তুলে ধরেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE