Advertisement
E-Paper

আরও ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের আর্জি হাই কোর্টে, শুনবেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

এই শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয়েছিল ২০২০ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায়। এঁদের যে ব্রিজ কোর্স করানো হয়নি, তা স্বীকার করেছেন স্বয়ং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি, দাবি মামলাকারীদের।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৪:৪২
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

প্রাথমিক স্কুলের আরও ১০ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের আর্জি জমা পড়ল কলকাতা হাই কোর্টে। অভিযোগ, এঁরা চাকরির শর্তপূরণ না করেই এত দিন ‘অস্থায়ী শিক্ষক’ হিসাবে চাকরি করে এসেছেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি যে নির্দেশ দিয়েছে, তাতে তাঁদের সেই অস্থায়ী চাকরিও থাকার কথা নয়। এই মর্মেই ওই দশ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল চেয়ে মঙ্গলবার মামলা দায়ের হয়েছে হাই কোর্টে। আগামী বুধবার এই মামলাটি শুনবেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

মামলাকারীরা জানিয়েছেন, এই প্রাথমিক শিক্ষকেরা প্রত্যেকেই বিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। প্রাথমিকের শিক্ষক হওয়ার জন্য যে ডিএলএড ডিগ্রি লাগে, তা এঁদের নেই। সাধারণত উচ্চপ্রাথমিক বা তার উপরের স্তরের স্কুলে চাকরির জন্য লাগে বিএড প্রশিক্ষণ। কিন্তু ২০১৮ সালে জাতীয় শিক্ষণ পর্ষদ একটি নতুন নিয়ম তৈরি করে। তারা জানায়, বিএড প্রশিক্ষিতরাও প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন। কিন্তু চাকরি পাওয়ার এক বছরের মধ্যে তাঁদের একটি ছ’মাসের ব্রিজ কোর্স করতে হবে। মামলাকারীদের অভিযোগ, এই ১০ হাজার প্রাথমিকের শিক্ষক প্রত্যেকেই বিএড প্রশিক্ষিত হলেও নিয়ম মোতাবেক ব্রিজ কোর্সটি করেননি। ফলে জাতীয় শিক্ষণ পর্ষদের নিয়মানুসারে এঁরা প্রাথমিকের শিক্ষক হওয়ার যোগ্য নন।

মিতালি রায়-সহ ৩৩৩ জন প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থী মঙ্গলবার এই মর্মে একটি মামলা করেছেন কলকাতা হাই কোর্টে। তাঁরা জানিয়েছেন, এই শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয়েছিল ২০২০ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায়। এঁদের যে ব্রিজ কোর্স হয়নি, তা স্বীকার করেছেন স্বয়ং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসেই দায়ের হওয়া একটি মামলায় তিনি জানিয়েছিলেন, ‘‘২০১৫ সালের পর থেকে রাজ্যে শিক্ষকদের কোনও ব্রিজ কোর্স করানো হয়নি।’’ মামলাকারীরা আদালতকে জানিয়েছেন, ব্রিজ কোর্স না হওয়ায় এই শিক্ষকেরাও স্থায়ী চাকরি পাননি। তাঁরা এখনও অস্থায়ী শিক্ষক হিসাবেই রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে বেতন পেয়ে চলেছেন। কিন্তু সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়ে যে নির্দেশ দিয়েছে, তাতে এই অস্থায়ী পদেও আর থাকতে পারবেন না ওই দশ হাজার শিক্ষক।

গত ১১ অগস্ট প্রাথমিক শিক্ষক সংক্রান্ত একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষক হতে গেলে ডিএলএড প্রশিক্ষণ থাকতেই হবে। বিএড প্রশিক্ষিতরা আর প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসের আগে যে নিয়োগ প্রক্রিয়া হয়েছে, তা আলাদা। কিন্তু তার পর থেকে আর কোনও বিএড প্রশিক্ষিতের প্রাথমিক শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ বৈধ নয়।

মামলাকারীরা জানিয়েছেন, যে ১০ হাজার শিক্ষকের চাকরি নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছিল ২০২০ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায়। কিন্তু এঁরা যে হেতু এখনও অস্থায়ী, তাই স্থায়ী চাকরি পেতে হলে এঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে। আর যে হেতু সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, বিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না, তাই এঁরাও প্রাথমিক স্কুলে চাকরির জন্য আবেদন করতে পারেন না। এই মর্মে অবিলম্বে এঁদের চাকরি বাতিল করার আর্জি জানিয়েছেন মামলাকারীরা। আগামী বুধবার সেই আবেদনই শুনবেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

Justice Abhijit Gangopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy