Advertisement
E-Paper

জয়েন্টের র‌্যাঙ্ক জাল করে উল্টো নালিশ হাই কোর্টে, এজলাসে বসেই পড়ুয়ার ‘কীর্তি’ ধরলেন বিচারপতি

বুধবার এই মামলা ওঠে বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চে। জয়েন্ট পরীক্ষার্থী আদালতকে জানান, জয়েন্ট পরীক্ষার রেজাল্ট বেরোনোর পর তিনি নিজের যে র‌্যাঙ্ক দেখেছিলেন, তা দিন কয়েক পরে হঠাৎ বদলে যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৩ ১৪:১৩
student\\\'s Fraud for changing his WBJEE rank

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

জয়েন্ট এন্ট্রান্সের র‌্যাঙ্ক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনই অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন এক জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার্থী। সেই মামলার শুনানির পর সিবিআই তদন্তের কথা বলেও ফেলেছিলেন বিচারপতি। হঠাৎই পরিস্থিতি বদলায়। দেখা যায় সর্ষের মধ্যেই ভূত। শেষে এজলাসে বসে বসেই রহস্যের সমাধান করেন হাই কোর্টের বিচারপতি।

বুধবার এই মামলা ওঠে বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চে। জয়েন্ট পরীক্ষার্থী অজয় (নাম পরিবর্তিত) আদালতকে জানান, তিনি চলতি বছরেই জয়েন্টে বসেছিলেন। কিন্তু রেজাল্ট বেরোনোর পর কিউআর কোড স্ক্যান করে তিনি প্রথমে নিজের যে র‌্যাঙ্ক দেখেছিলেন, তা দিন কয়েক পরে হঠাৎ বদলে যায়। অজয় আদালতে দাবি করেন, তিনি যখন প্রথমে ওয়েবসাইটে নিজের র‌্যাঙ্ক দেখেন তখন তার জিএমআর বা জেনারেল মেরিট র‌্যাঙ্ক ছিল ১৬ এবং পিএমআর বা ফার্মাসি মেরিট র‌্যাঙ্ক ছিল ২৪। কিন্তু পরে তিনি যখন আবার নিজের র‌্যাঙ্ক পরীক্ষা করেন তখন দেখা যায় তার জিএমআর হয়েছে ১৪৩৯ এবং পিএমআর ৩২৮৫। এই বদল কী করে হল, তা জানতে চেয়েই রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন অজয়। কিন্তু শুনানি এগোতেই দেখা গেল মামলার গোড়ায় গলদ। সর্ষের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভূত।

রাজ্যে এই মুহূর্তে একের পর এক নিয়োগের পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগে মামলা চলছে আদালতে। সেই পরীক্ষাতেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে র‌্যাঙ্ক পিছিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মতো বড় পরীক্ষাতেও র‌্যাঙ্ক পিছিয়ে যাওয়ার অভিযোগে তাই বাড়তি গুরুত্ব দেন বিচারপতি চন্দ। তিনি জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের আইনজীবী অমিতাভ চৌধুরীর কাছে জানতে চান, কেন এই মামলায় সিবিআই তদন্ত দেওয়া হবে না? এর পরই বোর্ডের আইনজীবী অমিতাভ পাল্টা আদালতকে জানান, পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্রে থাকা কিউ আর কোড স্ক্যান করে তাঁর র‌্যাঙ্ক দেখতে। কারণ উত্তরপত্রে পরীক্ষার্থীর হস্তাক্ষর রয়েছে। সেটি নকল হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

এজলাসে বসেই নিজেই স্মার্টফোনে কিউআর কোড স্ক্যান করেন বিচারপতি চন্দ। শুধু নিজের নয়, আইনজীবীর ফোন থেকেও স্ক্যান করানো হয় কিউআর কোড। আর তার ফল দেখে বিস্মিত হয়ে যান বিচারপতি চন্দ। দেখা যায়, দ্বিতীয় বার যে র‌্যাঙ্ক পরীক্ষার্থী দেখেছিলেন, সেটাই ঠিক। যার পর পরীক্ষার্থীকেই পাল্টা প্রশ্ন করতে শুরু করেন বিচারপতি। আদালতে বিচারপতির প্রশ্নের মুখে ভেঙে পড়েন ওই পরীক্ষার্থী।

অজয় বিচারপতির কাছে স্বীকার করে নেন, তিনিই র‌্যাঙ্ক সংক্রান্ত ডাউনলোডেড নথি জালিয়াতি করেছিলেন এবং আদালতে মিথ্যা নালিশ করেছেন। যা শুনে মামলাটি খারিজ করে দেন বিচারপতি চন্দ। তবে মামলা খারিজ করলেও ওই মিথ্যা মামলাকারী ছাত্রের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা হয়নি। যে হেতু অজয় এখনও ছাত্র, তাই তাঁর বিরুদ্ধে বিরূপ পদক্ষেপ না করতে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডকেও অনুরোধ করেছেন বিচারপতি।

WBJEE Calcutta High Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy