Advertisement
E-Paper

দৃষ্টান্ত হরিয়ানা, বঙ্গবিজয়ে ভয় নেই কৈলাসের

পুরভোটে শোচনীয় হারের এক বছরের মধ্যেই রাজ্যে বিজেপি-র সরকার গড়ার চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন দলের নতুন পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়! তাঁর ভরসা হরিয়ানা!

রোশনী মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৫ ০৩:৪৯

পুরভোটে শোচনীয় হারের এক বছরের মধ্যেই রাজ্যে বিজেপি-র সরকার গড়ার চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন দলের নতুন পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়! তাঁর ভরসা হরিয়ানা!

জুলাই মাসে বঙ্গ বিজেপি-র দায়িত্ব নিয়েই কড়া মাস্টারমশাইয়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি। এ রাজ্যে দলের নড়ব়ড়ে সংগঠনকে চাঙ্গা করতে নির্দিষ্ট কাজ বেঁধে দিয়েছেন নেতাদের জন্য। কাজে গাফলতির জন্য ধমকও দিয়েছেন কয়েক জন নেতাকে। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের কলকাতা সফরের সময়ে শহরে এসে কৈলাস জানিয়ে দিলেন, ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে এ রাজ্যে সরকার দখল করেই ছাড়বেন! দক্ষিণ কলকাতার একটি হোটেলে মঙ্গলবার রাতে শুধু সব্জি দিয়ে নৈশভোজ সারতে সারতে কৈলাস বলেন, ‘‘কী মনে হয়? আমি কি সব্জি খেতে সুদূর ইনদওর থেকে কলকাতায় এসেছি?’’ এর পরেই তাঁর প্রত্যয়ী সংযোজন, ‘‘২০১৬-তেই বাংলা জয় করব। ১০০%! আমি যখন হরিয়ানায় গিয়ে বলেছিলাম, দলকে জেতাতে এসেছি, তখন লোকে আমায় জিজ্ঞাসা করেছিল, আপনার হাতে কি জাদুদণ্ড আছে? আমি কিন্তু তিন মাস সময় পেয়েই হরিয়ানায় দলকে জিতিয়েছি। পশ্চিমবঙ্গে তো ভোটের এখনও ৬ মাসের বেশি বাকি!’’

বিরোধীরা অবশ্য বলছেন, হরিয়ানার বিজেপি-র ভিত অনেকটাই তৈরি ছিল। বাংলা আর হরিয়ানা তো এক নয়! খিদিরপুরের জামাই কৈলাস অবশ্য তাতে ডরাচ্ছেন না! এ বার থেকে ২০১৬-কে ‘পাখির চোখ’ করে মাঝে মাঝেই তিনি শহরে আসবেন এবং রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াবেন। আর ভোট-ব্যস্ততার ফাঁকে সেরে নেবেন ‘শত্রু শিবিরের বন্ধু’ সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে আড্ডা। যে তৃণমূলকে উৎখাত করতে তাঁর আসা, সেই দলেরই নেতা তথা মন্ত্রী সুব্রতবাবু তাঁর বন্ধু! আর সিপিএম নেতা এবং শিলিগুড়ির মেয়র অশোকবাবুর সঙ্গেই বা বন্ধুত্ব কীসের সুবাদে? কৈলাস জানাচ্ছেন, সুব্রতবাবু কলকাতার মেয়র এবং অশোকবাবু রাজ্যের পুরমন্ত্রী থাকাকালীন ওঁদের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব হয়। কারণ, তখন তিনি সর্বভারতীয় মেয়র কাউন্সিলের চেয়ারম্যান।

তবে কৈলাস যখন বঙ্গ বিজয়ের চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন, ঠিক তখনই শক্ত ঘাঁটি হয়ে উঠতে গিয়েও বীরভূমের পাড়ুইয়ে বিজেপি-র পায়ের তলার মাটি খসে যাচ্ছে! লোকসভা ভোটের পর থেকে সেখানে তৃণমূলকে টক্কর দেওয়ার মতো সংগঠন গড়ে তুলতে পেরেছিল বিজেপি। কিন্তু যাঁদের জোরে তা গড়ে উঠেছিল, সেই হৃদয় ঘোষ, নিমাই দাস-সহ এক ঝাঁক কর্মী ফের তৃণমূলে ফিরে যাচ্ছেন। সাগর ঘোষ হত্যার সিবিআই তদন্তের দাবি থেকে সরে এসেছেন তাঁর পুত্র হৃদয়বাবু। ‘হৃদয় পরিবর্তন’ হওয়ায় নিমাইবাবু এবং হৃদয়বাবুকে ৬ বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিজেপি। সাত্তোরের সেই নির্যাতিতাও হৃদয় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তাঁর শিবির বদল আটকাতেই কৈলাসের সঙ্গে তাঁর কথা বলিয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার অমিতের কলকাতা সফরের দিন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিবপ্রকাশের সঙ্গে দেখা করে দলের বর্তমান পাডুই-সঙ্কটের কথা বিস্তারিত জানিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলার উপায় জানতে চেয়েছেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ও। শিবপ্রকাশ অবশ্য হাতে-গরম কোনও সমাধান বাতলাতে পারেননি।

কিন্তু পাড়ুইয়ে বিজেপি-র এই দুর্দশার কারণ কী? দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘ওখানে যাঁরা অন্য দল থেকে আমাদের দলে এসেছিলেন, তাঁরা তো দেশের কাজ করতে আসেননি! প্রত্যেকেরই নিজস্ব স্বার্থ ছিল। এখন অন্য কোথাও স্বার্থসিদ্ধির বেশি সুযোগ পাচ্ছেন বলে সেখানে চলে যাচ্ছেন!’’

Trinamool Bengal Kailash Vijayvargiya BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy