ইভিএমের সামনে দাঁড়িয়ে কোথায় ভোট দিতে হবে, তা স্ত্রীকে দেখিয়ে দিচ্ছেন বিজেপি প্রার্থী স্বামী— সোমবার বেলা ১১টা থেকে এমনই ভিডিয়ো ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদ চ্যানেলগুলিতেও। এর জেরে নির্বাচনী বিধিভঙ্গে অভিযুক্ত হয়েছেন কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী কমলচন্দ্র সরকার। সরিয়ে দেওয়া হয় ওই বুথের প্রিজ়াইডিং অফিসার শিশিররঞ্জন শিকারিকে। শিশির এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক অরবিন্দকুমার মিনার বক্তব্য, ‘‘ভোটকক্ষের ভিতরে ভোটার ছাড়া কারও ঢোকা বেআইনি। স্ত্রীর ভোট দেওয়ার সময়ে কেন কমলবাবু ভিতরে ছিলেন, তা জানতে চেয়ে কালিয়াগঞ্জের রিটার্নিং অফিসার তাঁকে শো-কজ় করেছেন। তিনি জবাব দিলে কমিশন পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ করবে। ঘটনাটি জানার পরেই কমিশন ওই বুথের প্রিজ়াইডিং অফিসারকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে। প্রিজ়াইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে কমিশন ও প্রশাসন তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।’’
কমলের বাড়ি ধনকৈল পঞ্চায়েতের বালাস এলাকায়। তিনি ও তাঁর স্ত্রী ভারতী এ দিন সকালে বালাস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮৬ নম্বর বুথে ভোট দিতে যান। তিনি প্রথমে ভোট দেন। ভিডিয়োটিতে দেখা যায়, কমল যখন ভোট দিচ্ছেন, ভারতী বাইরে অপেক্ষা করছেন। তার পরে কমল ভোটকক্ষে থাকাকালীনই ভারতী সেখানে ঢোকেন। তাঁরা দু’জনেই কিছু ক্ষণ ইভিএমের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। এর পরে বিপ শব্দ বেজে উঠতেই ভারতীকে ইভিএমের উপরে ঝুঁকে পড়তে দেখা যায়। এবং কমলকে ইভিএমের উপরে সামান্য ঝুঁকে ডান হাত দিয়ে স্ত্রীকে ইভিএমের বোতাম দেখিয়ে দিতে দেখা যায়। আনন্দবাজার অবশ্য এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। তবে পরে বাইরে এসে কমল স্বীকার করেন, তাঁরা একসঙ্গে ভোট দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আগেও বিভিন্ন নির্বাচনে একসঙ্গে ভোট দিয়েছি। তবে কোথায় ভোট দিতে হবে, তা আমি স্ত্রীকে বলিনি। ভোট দেওয়ার সময়ে ভোটকক্ষে এক জনের বেশি থাকা যায় না বলে জানা ছিল না। প্রিজ়াইডিং অফিসার আমাকে নিষেধ করলে স্ত্রীর ভোট দেওয়ার সময়ে কখওনই ভোটকক্ষে থাকতাম না।’’
বিজেপি নেতা মুকুল রায় এই নিয়ে বলেন, ‘‘দু’দিন আগে কমলবাবুর মেয়ের বিয়ে ছিল। তাই তাঁর স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। বোকার মতো ভুল (সিলি মিসটেক) হয়ে গিয়েছে। ওই শো-কজ়ের জবাব দেওয়া হবে।’’