টু-ইন-ওয়ান কল্কেতে ফুঁ কল্কেবাবার। —নিজস্ব চিত্র।
ডুগডুগির আওয়াজ। খঞ্জনির তালে তাল। করতালের টুংটাং। এরই মাঝে আখড়া জমিয়ে বসেছেন নাগা সন্ন্যাসীরা।
ছাইমাখা গায়ে কেউ দোলনায় দুলছেন। কেউ রাগী মুখে তাকিয়ে। কেউ বা আবার দর্শণার্থীদের আর্শীবাদ করতে হাত তুলেছেন। আশপাশ থেকে ভেসে আসছে গাঁজার তীব্র গন্ধ। অনেকে ব্যস্ত আখড়ার স্মৃতি মোবাইলে বন্দি করতে। ভিড়ের মাঝেই এক পাশে চড়েছে দুপুরের রান্না। শহরের আউট্রাম ঘাটের কাছে এখন গঙ্গাসাগরমুখী মানুষের ভিড়। শেষ মুহূর্তের বাঁধাছাঁদা শেষ। এ বার রওনা দিতে হবে কপিলমুনির আশ্রমের কাছে গঙ্গাসাগর মেলায়। রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে তো বটেই, ভিড় জমিয়েছেন ভিন্ রাজ্যের ভক্তরাও। জমায়েতের ফাঁকেই চোখ ফেরালে নজরে পড়ে ইতিউতি পসরা ছড়িয়ে বসেছেন দোকানিরা। তার মাঝেই চোখ টানে কল্কেবাবার পসরায়। হরেক কিসিমের কল্কে সাজিয়ে বসেছেন তিনি। কী নেই সেখানে? একমুখী কল্কে, দু’মুখী কল্কে থেকে শুরু করে রয়েছে তিনমুখী বা পঞ্চমুখী কল্কে। মিলছে নানা দেবদেবী-সাপ জড়ানো কল্কেও। সবই দেবতাকে উত্সর্গের জন্য।
অদ্ভুত দেখতে সে সব কল্কেতে ভাং চড়িয়ে নাকি বাবা ভোলানাথের পুজো দেওয়া হয়— দাবি কল্কেবাবার। তিনি বলেন, “পঞ্চমুখী কল্কেতে ভাং ভরে তা পঞ্চানন ঠাকুরের পুজো দেওয়া হয়। আর তিনমুখী দিয়ে তৃনাথের পুজো করা হয়।” সেই সঙ্গে আক্ষেপ, এ বারে বাজার নাকি তেমন জমেনি। তাতে কী! কল্কেবাবার পসরা দেখতেও ভিড় উপচে প়ড়ছে। দরদাম করে অবশ্য অনেকেই নিরাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে শুধুমাত্র এসেছেন শখের ফোটোগ্রাফির স্বাদ মেটাতে। কল্কেবাবার পসরার মধ্যেই দেখা মিলল টু-ইন-ওয়ান কল্কেরও। সেটা কী? বিশাল শিঙার আকারের একটি টু-ইন-ওয়ান কল্কে তুলে ধরে একমুখ হেসে কল্কেবাবা বলেন, “এতে সাধুরা ভাং ভরে নেশাও করেন। আবার বাঁশিও বাজান।”
চলছে বিকিকিনি।
কল্কেবাবার মতোই মৃদু অভিযোগ তুললেন আর এক মহিলা। রকমারি জিনিসপত্র সাজিয়ে বসলেও মিলছে না কেনাকাটার মানুষজন। তবে কীসের টানে এসেছেন তিনি? সরল মুখে তাঁর উত্তর, “ভালবাসার টানেই মেলায় ছুটে আসা! তাই টাকাপয়সা না মিললেও আসবই।” এই ভালবাসা-ভক্তির টানেই ফি বছর ভিড় জমাচ্ছেন এঁরা সকলে।
দেখুন ভিডিও
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy