কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন স্বামী প্রদীপ্তানন্দ মহারাজ ওরফে কার্তিক মহারাজ। মঙ্গলবার তাঁকে থানায় হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিস পাঠিয়েছিল মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার পুলিশ। ধর্ষণ, জোর করে গর্ভপাত করানোর অভিযোগে নাম জড়িয়েছে কার্তিক মহারাজের! মঙ্গলবার থানায় হাজিরা না-দেওয়ায় আবার তাঁকে নোটিস পাঠাতে পারে পুলিশ।
কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস, প্রতারণা এবং জোর করে গর্ভপাত করানোর অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। সোমবার নবগ্রাম থানার পুলিশ বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সংঘের অফিসে গিয়ে হাজিরার নোটিস দিয়ে আসে। বলা হয়, এই অভিযোগের ভিত্তিতে কার্তিক মহারাজকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। সেই কারণেই মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ থানায় তাঁকে আসতে বলা হয়।
যদিও মঙ্গলবার সময় পেরিয়ে গেলেও থানায় হাজিরা দেননি কার্তিক মহারাজ। পরে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। কার্তিক মহারাজের আবেদন, তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর খারিজ করা হোক! বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চে আবেদন করেন তিনি। মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি। বুধবার অর্থাৎ ২ জুলাই এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। কার্তিক মহারাজের হয়ে হাই কোর্টে মামলা করেন আইনজীবী তথা বিজেপি কৌস্তুভ বাগচী। তিনি বলেন, "কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। রাজ্যের ওই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।"
গত ২৮ জুন কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে নবগ্রাম থানায় অভিযোগ করেন এক মহিলা। অভিযোগকারিণীর দাবি অনুযায়ী, ২০১৩ সালে কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কার্তিক মহারাজ তাঁকে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানা এলাকার চাণক্য এলাকায় এক আশ্রমের প্রাইমারি স্কুলে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে শিক্ষিকার পদে নিয়োগ করা হয়। স্কুলে থাকার জন্য তাঁকে একটি ঘরও দেওয়া হয়েছিল। সেখানে নাকি এক রাতে আচমকাই মহারাজ হাজির হয়েছিলেন। তাঁকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। বাধ্য হয়ে তা মেনে নিতে হয় বলে জানান অভিযোগকারিণী। তাঁর আরও অভিযোগ, তার পর দিনের পর দিন তাঁর উপর শারীরিক অত্যাচার চালানো হয়েছে। এমনকি, তিনি সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়লে জোর করে তাঁর গর্ভপাত করানো হয়।
আরও পড়ুন:
কার্তিক মহারাজের হাজিরা এড়ানোর বিষয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (লালবাগ) রসপ্রীত সিংহ আনন্দবাজার ডট কমকে বলেন, ‘‘প্রদীপ্তনন্দজির বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ধর্ষণ-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ওঁকে আজ হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু উনি আসেননি। তদন্ত সহযোগিতার জন্য ফের তাঁকে ডেকে পাঠানো হবে।’’ তবে প্রথম থেকেই নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করছেন কার্তিক মহারাজ। তাঁর দাবি, তিনি সন্ন্যাসী। আর সন্ন্যাসীদের জীবনে অনেক বাধাবিপত্তি আসে। এমনটা অপ্রত্যাশিত নয়।