Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মাতৃদিবসে মায়ের দেহ লোপাট, ছেলে গ্রেফতার

ঘুমন্ত মায়ের মুখে কাঁথা চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করা হয়ে গিয়েছিল আগের রাতে। রবিবার, মাতৃদিবসে দেহ পুঁতে দেওয়া হয়েছিল শ্মশানে, যাতে ‘ডেথ সার্টিফিকেট’-এর ‘ঝামেলা’ এড়ানো যায়। তার পরেও হাতকড়া এড়াতে পারল না উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার খোকন দাস। অসুস্থ মা কিনিবালা দাসকে (৮০) খুন ও প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগে সোমবার তাকে ধরেছে পুলিশ। খুনে খোকনকে সহযোগিতা করার অভিযোগে তার স্ত্রী রেণুবালাও গ্রেফতার হয়েছে।

ধৃত খোকন দাস।—নিজস্ব চিত্র।

ধৃত খোকন দাস।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাগদা শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৫ ০৩:১৯
Share: Save:

ঘুমন্ত মায়ের মুখে কাঁথা চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করা হয়ে গিয়েছিল আগের রাতে। রবিবার, মাতৃদিবসে দেহ পুঁতে দেওয়া হয়েছিল শ্মশানে, যাতে ‘ডেথ সার্টিফিকেট’-এর ‘ঝামেলা’ এড়ানো যায়। তার পরেও হাতকড়া এড়াতে পারল না উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার খোকন দাস। অসুস্থ মা কিনিবালা দাসকে (৮০) খুন ও প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগে সোমবার তাকে ধরেছে পুলিশ। খুনে খোকনকে সহযোগিতা করার অভিযোগে তার স্ত্রী রেণুবালাও গ্রেফতার হয়েছে।

সোমবার পুলিশ-প্রশাসনের উপস্থিতিতে কোদলা নদীর ধারে বাগদার হাজরাতলা শ্মশানে মাটি খুঁড়ে কিনিবালার দেহ উদ্ধার করা হয়। ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয় বনগাঁ হাসপাতালে। শ্মশানে দাঁড়িয়ে খোকন বলে, ‘‘ভাড়াবাড়িতে মাকে নিয়ে থাকতে অসুবিধা হচ্ছিল। বাড়িওয়ালা ঘর ছাড়তে বলেছিলেন। মা যতটা অসুস্থ ছিলেন, ওঁকে নিয়ে গেলে কেউ ভাড়া দিত না। দাদাও মাকে রাখতে চায়নি। আমার আর কোনও উপায় ছিল না!’’

বছর পঞ্চাশের খোকন মাছ-বিক্রেতা। স্ত্রী এবং মাকে নিয়ে পার-কৃষ্ণচন্দ্রপুরে ভাড়া থাকত। পুলিশ সূত্রের দাবি, জেরায় খোকন তাদের জানিয়েছে, বয়সজনিত কারণে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন কিনিবালাদেবী। প্রায়ই বিছানা এবং কাপড়চোপড় নোংরা করে ফেলতেন। তা নিয়ে অশান্তি করত রেণুবালা। পুলিশের কাছে খোকন দাবি করেছে, অশান্তি থেকে বাঁচতে সে কিছু দিন আগে বনগাঁর আরামডাঙায় নিজের দাদার কাছে মাকে রাখতে গিয়েছিল। কিন্তু তিনি রাজি হননি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, নিয়মিত ভিক্ষা করতে বেরোতেন কিনিবালা। এলাকাবাসীর সঙ্গে টুকটাক গল্পও করতেন। রবি ও সোমবার তাঁকে দেখতে না পেয়ে পড়শিরা খোঁজ নিতে গেলে খোকন বলে ফেলে, ‘‘মা শনিবার রাতে মারা গিয়েছেন। তাঁকে পুড়িয়ে দিয়েছি।’’ কাউকে কেন সে কথা জানায়নি জানতে চেয়ে পড়শিরা চেপে ধরায়, সে তাঁদের কাছে খুনের কথা স্বীকার করে।

মন্মথ বিশ্বাস নামে এক পড়শি থানায় অভিযোগ জানান। তাঁর দাবি, ‘‘মাসিমা পড়শিদের কাছে অনেক সময় খাবার চাইতেন। বলতেন, ‘অভাবের সংসারে নিজেদেরই খাবার জোটে না। ছেলে-বৌমা আমাকে ভাল রাখবে কোথা থেকে?’ সেই মাকেই কি না..!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE