সিবিআইকে ‘সেটিং’ করার প্রতিশ্রুতি, রোজভ্যালি থেকে ২ কোটি নিয়েছিল ধৃত ব্যবসায়ী

প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল সিবিআইয়ের মামলা ‘সেটিং’ করে দেওয়া হবে। আর তার বিনিময়ে রোজভ্যালি গোষ্ঠীর মিডিয়া সংস্থা ব্র্যান্ড ভ্যালু কমিউনিকেশনের এক কর্তার কাছ থেকে দু’কোটি টাকা নিয়েছিল ব্যবসায়ী সুদীপ্ত রায়চৌধুরী। রোজভ্যালির টাকা পাচারের জন্য এই ব্যবসায়ীকেই গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট(ইডি)।

সিবিআই জেরার মুখে এই তথ্যই জানিয়েছিলেন রোজভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডু। ইডি সূত্রে খবর, গৌতম কুণ্ডু সিবিআই আধিকারিকদের জানিয়েছিলেন, এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বর সূত্র ধরে গৌতম কুণ্ডুকে বার্তা পাঠিয়েছিলেন ওই ব্যবসায়ী। জানিয়েছিলেন, সিবিআইয়ের মামলা সামলে দেবেন তিনি। তার জন্য সিবিআইয়ের শীর্ষ কর্তাদের দিতে হবে মোটা নজরানা। সেই টাকার অঙ্ক ছিল দু’কোটি। সেই টাকা নিজের মিডিয়া সংস্থার এক পদস্থ কর্মী রুপাল কবিরাজ মারফৎ সুদীপ্তকে দিয়েছিলেন গৌতম কুণ্ডু, এমনটাই দাবি।

ইডি সূত্রের খবর, রোজভ্যালি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির যোগ পেয়েছে সিবিআই। ওই সমস্ত ব্যাক্তি রোজভ্যালি থেকে বিভিন্ন ভাবে লাভবান হয়েছেন। সেই তদন্ত করতে গিয়েই উঠে আসে এই সুদীপ্ত রায়চৌধুরীর নাম। তাঁকে সমন করা হয়েছিল জেরার জন্য। ইডি সূত্রে খবর জেরার সময় তাঁর বক্তব্যে প্রচুর অসঙ্গতি পাওয়া যায়। এর পরই ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দেন ইডি আধিকারিকরা। তল্লাশিতে পাওয়া যায় বিপুল সম্পত্তির হদিশ। সেই সম্পত্তি কোন আয় থেকে কেনা হয়েছে, তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি সুদীপ্ত। রবিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র বলেন, “ প্রাথমিক তদন্তের পর আমরা নিশ্চিত যে অভিযুক্ত দু’কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। টাকা পাচারের সঙ্গে তার সরাসরি যোগ পাওয়া গিয়েছে। তাঁকে জেরা করা প্রয়োজন।” আদালত ১২ নভেম্বর পর্যন্ত ওই ব্যবসায়ীর জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: রোজভ্যালির টাকা পাচার, গ্রেফতার বাঙালি ব্যবসায়ী, হদিশ বিপুল বেহিসেবি সম্পত্তির

ইডি তদন্তকারীদের সন্দেহ, এই ব্যবসায়ীর মাধ্যমে রোজভ্যালির টাকা পাচার হয়েছে। সেই টাকা পাচারে আরও অনেকের ভূমিকা আছে বলে ধারণা ইডি আধিকারিকদের। সেই গোটা চক্রের হদিশ সুদীপ্তকে জেরা করে পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে ওই ব্যবসায়ী রোজভ্যালি কর্তার কাছ থেকে সিনেমা প্রযোজনার জন্য দফায় দফায় টাকা নিয়েছেন। সেই টাকার একটা বড় অংশ বিদেশেও পাচার হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। তাঁরা বলেন, ওই ব্যবসায়ীর একাধিক কোম্পানি রয়েছে যেগুলো কার্যত লোক দেখানো। সেই কোম্পানিগুলির কোনও ব্যবসা নেই। পাশাপাশি গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছেন, ইডি বা সিবিআইয়ের কোনও অংশ গোটা ঘটনায় জড়িত আছে কি না।

আরও পড়ুন: ১০ মাসের শিশুকে রেখে মারা গেলেন নবান্নের সামনে অগ্নিদগ্ধ যুবক

বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া - পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।