Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ফের চালু হল বিমান,আশা দেখছে কোচবিহার

ফের বাণিজ্যিকভাবে কলকাতা-কোচবিহার বিমান চলাচল শুরু হল। সোমবার কলকাতা থেকে বেসরকারি সংস্থা পিনাকল এয়ারের নয় আসনের বিমানটি বেলা ১টা নাগাদ কোচবিহারে পৌঁছয়। এই বিমান নিয়ে জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে উন্মাদনা ছিল। অনেকেই ভিড় করেছিলেন বিমানবন্দর লাগোয়া এলাকায়। বিমান মাটি ছুঁতেই খুশি ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। তবে এই খুশির মধ্যেই খানিকটা আশঙ্কাও ছিল। বিমান সংস্থার তরফে জানানো হয়, এ দিন থেকেই বিমান নিয়মিত নয়।

অবতরণ। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

অবতরণ। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৫ ০৩:৫২
Share: Save:

ফের বাণিজ্যিকভাবে কলকাতা-কোচবিহার বিমান চলাচল শুরু হল। সোমবার কলকাতা থেকে বেসরকারি সংস্থা পিনাকল এয়ারের নয় আসনের বিমানটি বেলা ১টা নাগাদ কোচবিহারে পৌঁছয়।
এই বিমান নিয়ে জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে উন্মাদনা ছিল। অনেকেই ভিড় করেছিলেন বিমানবন্দর লাগোয়া এলাকায়। বিমান মাটি ছুঁতেই খুশি ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। তবে এই খুশির মধ্যেই খানিকটা আশঙ্কাও ছিল। বিমান সংস্থার তরফে জানানো হয়, এ দিন থেকেই বিমান নিয়মিত নয়। তিন সপ্তাহের মধ্যে বিমান নিয়মিত চলাচল শুরু করবে। কলকাতা-অন্ডাল-বাগডোগরা হয়ে বিমান কোচবিহারে পৌঁছবে। ওই বিমান সংস্থার কর্তা বীরেন্দ্র সিংহ জানান, আপাতত ন’আসনের বিমানটি সপ্তাহে সোমবার, বুধবার, শনি ও রবিবার চলাচল করবে। সরাসরি কলকাতা-কোচবিহার যাত্রায় ভাড়া লাগবে ছ’হাজার টাকা। কলকাতা থেকে অন্ডাল যাতায়াতে ভাড়া ১৫০০ টাকা, অন্ডাল থেকে বাগডোগরা ২৫০০ টাকা এবং বাগডোগরা থেকে কোচবিহার পর্যন্ত ভাড়া হল দেড় হাজার টাকা। তিনি বলেন, “যাত্রীর সংখ্যার উপরে সব নির্ভর করছে। দুই মাসের মধ্যে উনিশ আসনের বিমান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। যাত্রী সঠিক ভাবে পাওয়া যায় তাহলে ভাড়া পরবর্তীতে অনেকটা কমে যাবে। সপ্তাহে সাতদিন বিমান চালানো হবে।”

২০১১ সালে কলকাতা-কোচবিহার বিমান চলাচল শুরু হয়েও বন্ধ হয়ে যায়। কম যাত্রী সংখ্যায় বিমান সংস্থা লাভের মুখ না দেখাতেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর পরেই কোচবিহারে বড় বিমান চলাচলের জন্য সওয়াল করেন অনেকে। কিন্তু রানওয়ের দৈর্ঘ্য ছোট হওয়ায় বড় বিমান চলাচল করানো কোচবিহারে সম্ভব হয়নি। তাই আঠারো আসন বিমান চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এ বারে বিমান নিয়ে অবশ্য আশার আলো দেখছেন ব্যাবসায়ী থেকে শুরু করে জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকরা। কোলকাতা-কোচবিহার যাত্রী নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না বলে তাঁরা দাবি করেন।

কোচবিহার চেম্বার অ্যান্ড কমার্সের দুই কর্তা রাজেন বৈদ এবং ভূষণ সিংহ এ দিন ওই বিমানেই কলকাতা থেকে কোচবিহারে ফেরেন। ভূষণবাবু বলেন, “উনিশ আসনের বিমান চলাচল শুরু হলে যাত্রী নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না বলে আশা করছি। আর যদি দেখা যায় দুই-একটি আসন ফাঁকা রয়েছে সে ভাড়া আমরা দেব।” রাজেনবাবু বলেন, “বহুদিন থেকেই আমরা দাবি করে আসছি বিমান চলাচল শুরু করার। এবারে সে আশা পূর্ণ হল। আমরা আশাবাদী এবারে যাত্রী নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না।” জেলা প্রশাসনের এক কর্তা দাবি করেন, কোচবিহারে এখন প্রশাসনিক কাজকর্ম অনেক বেড়ে গিয়েছে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হচ্ছে। আগামীতে মেডিক্যাল কলেজ হবে। সবমিলিয়ে বিমান সংস্থা এবারে লাভের মুখ দেখবে বলেই তিনি আশাবাদী।

এ দিন বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। তিনি ওই বিমানে চেপেই কলকাতা যান। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্ন ছিল এই বিমান চলাচল শুরু করা। তা শুরু হল। তাতে কোচবিহারে প্রশাসনিক কাজকর্ম সহজ হবে। শিল্পস্থাপন ও পর্যটনের ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে। চিকিৎসা ব্যবস্থাতেও অনেক উন্নতি হবে বলে আমরা মনে করছি।” এ দিন ওই বিমানের যাত্রী ছিলেন ডিজি রাজ কানোজিয়া। তিনি বলেন, “কোচবিহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জেলা। বিভিন্ন সময় জেলার সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনেক সমস্যা হয়। আমাদের বাগডোগরা হয়ে কোচবিহারে পৌঁছতে হয়। এ বারে সে সমস্যা দূর হল। প্রশাসনিক কাজে কলকাতার সঙ্গে কোচবিহারের যোগাযোগ বেড়ে গেল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE