Advertisement
E-Paper

হারের হ্যাটট্রিক রুখে বড়দিনে মুখরক্ষা শীতের

আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, এ দিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এই সময়ের স্বাভাবিক। বীরভূম, বাঁকুড়ার মতো জেলাগুলিতে রাতের তাপমাত্রা আরও কিছুটা কম।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:০৫
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

পরপর দু’বছর উষ্ণতার লাগাতার বাউন্সারে বড়দিনে গোহারান হেরে গিয়েছিল শীত। ২০১৫ এবং ২০১৬ সালের পরে চলতি বছরে এসে কোনও মতে হারের হ্যাটট্রিকটা এড়িয়ে টায়েটুয়ে ম্যাচ বাঁচাল সে। আবহাওয়ার ভেল্কিতেই সোমবার, বড়দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা নেমে স্বাভাবিকের কোঠায় ঠেকেছে।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, এ দিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এই সময়ের স্বাভাবিক। বীরভূম, বাঁকুড়ার মতো জেলাগুলিতে রাতের তাপমাত্রা আরও কিছুটা কম। ওই সব অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১-১২ ডিগ্রির কাছাকাছি রয়েছে। ‘‘আগামী দিন দুয়েক কলকাতার রাতের তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রির কাছেপিঠে থাকবে। সপ্তাহান্তে শীত আরও কিছুটা বাড়তে পারে,’’ আশ্বাস আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাসের। মৌসম ভবনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, রাজস্থান, পঞ্জাব ও হরিয়ানায় তাপমাত্রা নামতে শুরু করেছে। সেখান থেকে উত্তুরে হাওয়ায় ভর করে আসা ঠান্ডাই বর্ষশেষে ছড়িয়ে পড়তে পারে পূর্ব ভারতের দিকে।

নিম্নচাপ, ঘূর্ণাবর্তের ধাক্কায় এ বছর ডিসেম্বরে মুখ থুবড়ে পড়েছিল শীত। তবে প্রাথমিক ধাক্কার পরে আবহবিদদের আশা ছিল, বড়দিনে ঘুরে দাঁড়াতে পারে শীত। সেই পূর্বাভাস খুব জোরালো ভাবে মেলেনি ঠিকই। তবে শীতপ্রেমীদের একেবারে নিরাশও করেনি সান্তা ক্লজের ঝোলা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নীচে থাকাটাই দস্তুর। এ দিন মহানগরীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অন্তত সময়ের সেই স্বাভাবিকত্বটুকু বজায় রেখেছে। জব্বর ঠান্ডা না-পড়ুক, উষ্ণতার বাউন্সারে বোল্ড না-হয়ে খুচরো রান নিতে কসুর করেনি বড়দিনের শীত।

গত দু’বছরের তুলনায় এটা যে কম কিছু নয়, সেটা মনে করিয়ে দিচ্ছেন আবহবিদদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, গত দু’বছর উষ্ণতায় রেকর্ড গড়েছিল বড়দিন। ২০১৬ সালে বড়দিনে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি বেশি। ২০১৫-য় বড়দিনে রাতের তাপমাত্রা ছিল ১৮.১ ডিগ্রি, স্বাভাবিকের থেকে চার ডিগ্রি বেশি। বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু বদলের জেরে ঋতুচক্রের অস্বাভাবিকতা নিয়ে বিশ্ব জুড়ে যে-চর্চা চলছে, তাতে জোরালো প্রমাণ জুগিয়েছিল সেই তথ্য। চলতি বছরে মরসুমের শুরু থেকে শীতের মুখ থুবড়ে পড়া দেখে পরিবেশবিজ্ঞানীদের অনেকে বলছিলেন, এ বারেও বড়দিনে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি থাকতে পারে। শেষ পর্যন্ত স্বাভাবিকের কোঠায় পৌঁছে সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুখরক্ষা করেছে শীত।

হাওয়া অফিসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বাংলাদেশ ও লাগোয়া গাঙ্গেয় বঙ্গের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্তের জেরেই শীত কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছিল। ঘূর্ণাবর্তটি দুর্বল হয়ে মিলিয়ে যেতেই উত্তুরে হাওয়ার পথে বাধা সরেছে। জোলো হাওয়ার জোগান কমায় পরিষ্কার হয়েছে আকাশ। তার ফলে পারদ নেমেছে। কিন্তু উত্তুরে হাওয়ার জোর তেমন নেই। তার উপরে ঘূর্ণাবর্তের জেরে পরিস্থিতি এতটাই বিগড়ে গিয়েছে যে, তাপমাত্রা আচমকা খুব বেশি নামতে পারেনি। উত্তর-পশ্চিম ভারতে তাপমাত্রা নামছে ঠিকই। তবে সেই উত্তুরে হাওয়া এ রাজ্যে পৌঁছতে দিন দুয়েক সময় লাগবে। সেই হিসেব করেই বর্ষশেষে আরও একটু বেশি পারদ পতনের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।

বারবার শীত উধাও হতে থাকায় হতাশ আমবাঙালি এই আশ্বাসে খুব বেশি ভরসা রাখতে পারছে না। আবহাওয়ার যা তুঘলকি খামখেয়াল, তাতে শীত ফের মুখ থুবড়ে পড়বে না তো, প্রশ্ন তুলছে তারা।

Weather Winter শীত
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy