Advertisement
২৪ মার্চ ২০২৩
ED

তোলাবাজি, দুর্নীতি মামলায় রোজভ্যালি-কাণ্ডের তদন্তকারীর বিরুদ্ধে চার্জশিট কলকাতা পুলিশের

পুলিশ সূত্রে খবর, যে যে ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল সেই ধারাতেই চার্জশিট পেশ করেছেন তদন্তকারী আধিকারিক।

প্রাক্তন ইডি আধিকারিক মনোজ কুমার। ফাইল চিত্র।

প্রাক্তন ইডি আধিকারিক মনোজ কুমার। ফাইল চিত্র।

সিজার মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৮:৪৫
Share: Save:

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর প্রাক্তন সহকারি অধিকর্তা মনোজ কুমারের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিল কলকাতা পুলিশ।তিনি রোজভ্যালি-কাণ্ডের তদন্তকারী আধিকারিক ছিলেন।

Advertisement

সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা তোলা আদায়ের অভিযোগে মনোজকে ২০১৭-য় গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৮৪(তোলাবাজি) এবং ১২০বি(ষড়যন্ত্র)-র ধারায় মামলা রুজু করেছিল শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ। পরবর্তীতে ওই মামলায় মনোজ কুমারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনও যুক্ত করা হয়।গত সপ্তাহে নগর দায়রা আদালতে ওই চার্জশিট পেশ করেন মামলার তদন্তকারী আধিকারিক সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, যে যে ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল সেই ধারাতেই চার্জশিট পেশ করেছেন তদন্তকারী আধিকারিক।

২০১৭-র২৮ ফেব্রুয়ারি কমল সোমানি নামে এক চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট শেক্সপিয়র সরণি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি জানিয়েছিলেন, প্রদীপ হিরাওয়াত নামে এক ব্যবসায়ী তাঁর কাছে ৭৫ লাখ টাকা চেয়ে চাপ দিচ্ছেন। ২০১৬-য়সোমানির অফিসে ইডি অভিযান চালিয়েছিল। অভিযোগে তিনি জানিয়েছিলেন, ইডির ভয় দেখিয়েই তাঁর কাছে ওই টাকা চাওয়া হয়। ভয় পেয়ে তিনি প্রদীপকে ৪০ লাখ টাকা দিয়েও দিয়েছেন।

কমল সোমানির অভিযোগ পেয়ে শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ মামলা দায়ের করে। প্রদীপ হিরাওয়াতকে গ্রেফতারও করা হয়। পুলিশ দাবি করে, জেরায় প্রদীপ তাদের জানিয়েছেন যে, তিনি ইডি আধিকারিক মনোজ কুমারের হয়ে টাকা চেয়েছিলেন সোমানির কাছে। মনোজের নাম উঠে আসার পরেই শেক্সপিয়র সরণি থানাতে বেশ কয়েক দফা জেরা করা হয় মনোজকে। শেষ পর্যন্ত গ্রেফতারি এড়াতে মনোজ কুমার হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে যান। সেখানে তাঁর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গেলে তিনি ২০১৭-র ৩ মে বিচারভবনের বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তার পর পুলিশ তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: সিবিআই বনাম রাজীব কুমার: মুখোমুখি হওয়ার আগে কোমর বেঁধে তৈরি হচ্ছে দু’পক্ষই

গ্রেফতার হওয়ার অনেক আগেই মনোজ কুমারকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছিল একটি ভিডিয়ো ফুটেজকে কেন্দ্র করে। কলকাতা বিমানবন্দর এবং দিল্লির একটি হোটেলে মনোজ কুমারকে রোজভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডুর স্ত্রী শুভ্রা কুণ্ডুর সঙ্গে দেখা যায় সেই ফুটেজে। এর কয়েক দিন পরেই কলকাতা পুলিশ ম্যাঙ্গো লেনের একটি অফিসে হানা দিয়ে নোটবন্দিতে বাতিল হওয়া ১ কোটি ৪২ লাখ টাকা উদ্ধার করে। সঙ্গে বাজেয়াপ্ত করেকয়েকটি কম্পিউটারও। সেই কম্পিউটারে ম্যাডাম রোজভ্যালি নামে একটি ফোল্ডার পাওয়া যায়। কলকাতা পুলিশ পরবর্তীতে দাবি করে, তদন্তে জানা গিয়েছে ম্যাডাম রোজভ্যালি হলেন শুভ্রা কুণ্ডু এবং ওই টাকা রোজভ্যালির।

দিল্লির হোটেলে এক সঙ্গে মনোজ কুমার ও শুভ্রা কুণ্ডু। এই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয় বিতর্ক। ফাইল চিত্র।

বুধবার কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘‘সেই সময় থেকেই আমরা ইডিকে মনোজ কুমার সম্পর্কে নানা তথ্য চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলাম। মনোজ কুমার যে শুভ্রা কুণ্ডুর সঙ্গে মিলিত হয়ে তদন্ত প্রভাবিত করছেন, আমাদের সেই সন্দেহের কথাও জানিয়েছিলাম ইডিকে। এর পরেই তাঁকে তদন্তকারী অফিসারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি চলে আসেন শুল্ক দফতরে। সেন্ট্রাল এক্সাইজ থেকেই তিনি ইডিতে গিয়েছিলেন।’’

যদিও মনোজ কুমারের আইনজীবী শ্যামল ঘোষ বুধবার বলেন,“২৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন। ওই দিন আমরা চার্জশিট হাতে পাব। চার্জশিটের কপি হাতে পেয়েই পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নির্দিষ্ট করা হবে।”

আরও পড়ুন: রাজ্যের সেরা থানার শিরোপা পেল কালিয়াগঞ্জ

(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবরআমাদের রাজ্য বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.