রাজবন্তী দাস
বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় শহরে মৃত্যু হল এক মহিলার। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ফড়িয়াপুকুরের কাছে এই ঘটনা ঘটে। মৃত মহিলার নাম রাজবন্তী দাস (৬৪)। ঘাতক বাসের চালক পলাতক, আটক করা যায়নি বাসটিকেও। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে বাসটির নম্বর জেনে চালকের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, শ্যামপুকুর থানা এলাকার বাসিন্দা রাজবন্তীদেবী এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশুদের তেল মালিশ করার কাজ করেন। এ দিন সকালে সেই কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। ফড়িয়াপুকুর মোড়ের কাছে বেপরোয়া গতিতে আসা একটি বেসরকারি বাস তাঁকে ধাক্কা মারে। বাসটি শ্যামবাজারের দিক থেকে বাসন্তীর দিকে যাচ্ছিল। মাথায় গুরুতর চোট লাগে ওই মহিলার।
এলাকায় কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই মৃত্যু হয়েছে ওই মহিলার। তাঁর দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, শ্যামবাজারের দিক থেকে ওই বেসরকারী বাসটি বেপরোয়া গতিতে যাচ্ছিল। আর একটি বাসের সঙ্গে রেষারেষির জেরে শ্যামবাজার মোড় পেরনোর পরেই বাসটির গতি আরও বেড়ে যায়। তখনই পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময়ে বাসটি পিছন থেকে ধাক্কা মারে রাজবন্তীদেবীকে। ধাক্কায় রাস্তার উপরে ছিটকে পড়েন ওই মহিলা।
স্বামী, ছেলে, পুত্রবধূ, নাতিকে নিয়ে ফড়িয়াপুকুরের কাছে এক চিলতে ঘরে থাকতেন রাজবন্তীদেবী। ঘটনার পরে রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় রাজবন্তীদেবীকে পড়ে থাকতে দেখে পাড়ার যুবকেরাই বাড়িতে খবর পাঠান। তখন বাড়িতে ছিলেন তাঁর পুত্রবধু মঞ্জু দাস। তিনিই ফোনে পরিবারের অন্য সদস্যদের এই দুর্ঘটনার খবর জানান।
রাজবন্তীদেবীর স্বামী কান্তাপ্রসাদ দাস খন্না এলাকায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। এ দিন সকালে স্ত্রীর সঙ্গেই বাড়ি কে বেরিয়েছিলেন সত্তরোর্ধ্ব কান্তাপ্রসাদ। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই দুর্ঘটনা। তিনি বলছেন, ‘‘সকালে দু’জনে এক সঙ্গে চা খেলাম। আর এখন ওর দেহ নেওয়ার জন্য থানা থেকে হাসপাতাল দৌড়োচ্ছি।’’ মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়িতে ছুটে আসেন মেয়ে ঋতা দাস। তিনি বলেন, ‘‘মা রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটছিলেন। সুস্থ একজন এ ভাবে বাসের ধাক্কায় মারা গেলেন! ভাবতে পারছি না।’’
প্রসঙ্গত, শহরের রাজপথে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো রুখতে পুলিশ এবং প্রশাসনের তরফে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-এর প্রচার চলছে। তার পরেও এক শ্রেণির চালকদের যে হুঁশ ফিরছে না, এ দিনের ঘটনা তা আরও এক বার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy