ধৃত: (বাঁ দিক থেকে) বাচ্চু দাস, শুভ চক্রবর্তী এবং শান্তনু মৃধা।
বর্ষবরণের রাতে বর্ষশেষের খুনের ঘটনার কিনারা করে ফেলল দমদম থানার পুলিশ।
গত শুক্রবার ভরসন্ধ্যায় দমদমের গোরাবাজারে ডেকরেটর্সের কর্মী গণেশ কুণ্ডুকে গুলি করে পালিয়েছিল তিন দুষ্কৃতী। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ঘটনার চার দিনের মাথায় সোমবার গভীর রাতে সুন্দরবনের ঝড়খালিতে হানা দিয়ে ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বাচ্চু দাস ও তার দুই সঙ্গী শুভ চক্রবর্তী এবং শান্তনু মৃধাকে গ্রেফতার করল দমদম থানার তদন্তকারী দল।
ঘটনার সময় দোকানের বাইরে চেয়ারে বসেছিলেন গণেশ। অভিযোগ, বাচ্চু, শুভ এবং শান্তনু বাইকে চেপে এসে গণেশের মাথার পিছনে গুলি চালিয়ে চম্পট দেয়। গণেশ নিহত হন। ওই ঘটনার পরেই গণেশের
উপরে বাচ্চুর ব্যক্তিগত আক্রোশের কথা এলাকাবাসীর মুখে উঠে এসেছিল। সেই সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর উত্তম রায়চৌধুরীর গায়ে বাচ্চুর হাত তোলার ঘটনাও চাউর
হয়ে যায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গণেশকে খুনের পিছনে সেই ব্যক্তিগত আক্রোশের কথা স্বীকার করেছে বাচ্চু।
তদন্তকারীরা জানান, ঘটনার দিন ঝড়খালির বাসিন্দা পেশায় লঞ্চ চালক শান্তনু বাইকে করে শুভ এবং বাচ্চুকে দমদম নিয়ে আসে। এর পরে অন্ধকার গলির মধ্যে বাইক দাঁড় করিয়ে গণেশকে কাছ থেকে গুলি করে বাচ্চু। তার পরে বাইক এক জায়গায় রেখে ট্রেন ধরে ক্যানিং পৌঁছয় দুষ্কৃতীরা। সেখান থেকে শান্তনু ঝড়খালিতে নিজের বাড়ি চলে যায়। বাচ্চু এবং শুভ মিনাখাঁয় এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়।
দমদম থানার অদূরে ভরসন্ধ্যায় গুলিতে এক জনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। এই পরিস্থিতিতে বাচ্চুকে ধরতে মিনাখাঁ, ভাঙড়, জীবনতলা-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন
এলাকায় হানা দেয় দমদম থানার পুলিশ। অল্পের জন্য অভিযুক্তেরা বারবার পালিয়ে নিজেদের অবস্থান বদল করছিল। ধরা পড়ার আগে শান্তনুর বাড়িতে বাচ্চু এবং শুভ গা ঢাকা দিয়েছে বলে খবর পায় তদন্তকারী দল। সেই মতো
শান্তনুর বাড়ি ঘিরে ফেলে তিন জনকে ধরে ফেলে পুলিশ। দমদমের সুভাষনগর থেকে অভিযুক্তদের বাইকটিও আটক করা হয়। বাচ্চুরা অস্ত্র কোথা থেকে পেল তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
সূত্রের খবর, সুভাষনগরের বাসিন্দা শুভ এবং লঞ্চচালক শান্তনুর বিরুদ্ধে এর আগে পুলিশের খাতায় কোনও অভিযোগ নেই। ব্যক্তিগত আক্রোশের পাশাপাশি অপরাধ জগতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতেই অভিযুক্তেরা গণেশকে খুন করেছে বলে তদন্তকারীদের অনুমান। জেরায় শুভ এবং শান্তনু পুলিশকে জানিয়েছে যে তাদের দিঘা যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। বাচ্চুর মতলব সম্বন্ধে তাদের ধারণা ছিল না বলে দাবি ওই দু’জনের। তবে পুলিশের দাবি, তাদের বিভ্রান্ত করতে এ সব বলা হচ্ছে। সবই পূর্ব পরিকল্পিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy