উপস্থিতির হার বা যোগ্যতামান— কোনওটাই ছিল না। তবু পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবি নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুগত মারজিতকে হেনস্থা করেছিলেন কয়েক জন ছাত্রী। মঙ্গলবার সেই ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্ত ওই ছাত্রীদের আগামী কয়েক বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও পরীক্ষাতেই বসতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি। পাশাপাশি, মূল দুই অভিযুক্তকে ছাত্রাবস্থায় কলেজের ছাত্র সংসদের সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ রাখতে না দেওয়ার সুপারিশও
করা হয়েছে।
কমিটি জানিয়েছে, ৫ এপ্রিল বড়িশা বিবেকানন্দ কলেজের ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দেশবন্ধু কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী টিঙ্কু দাস দু’বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও পরীক্ষায় বসতে পারবেন না। সে দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত দেশবন্ধু কলেজের আরও দুই ছাত্রী শ্রীজা সাহা ও ওয়াহিদা খাতুনকেও আগামী এক বছর পরীক্ষায় বসতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টে জানানো হয়েছে, দেশবন্ধু কলেজের এই তিন ছাত্রী ওই দিন বিক্ষোভ দেখাতে গিয়েছিলেন বড়িশা বিবেকানন্দ কলেজে। বৈদ্যুতিন মাধ্যমের ভিডিওতে উপাচার্যকে ধাক্কা দিতেও দেখা গিয়েছে দেশবন্ধু কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহকারী সম্পাদক টিঙ্কুকে। তাঁর সঙ্গেই ছিলেন শ্রীজা এবং ওই কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তথা প্রথম বর্ষের ছাত্রী ওয়াহিদা। ওই ঘটনার পরেই তাঁদের দু’জনকে দল থেকে বহিষ্কার করে টিএমসিপি। পরীক্ষায় বসতে না দেওয়ার পাশাপাশি, টিঙ্কু এবং ওয়াহিদা ছাত্রাবস্থায় যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের কোনও কাজে যুক্ত থাকতে না পারেন সে জন্য দেশবন্ধু কলেজ-কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করেছে কমিটি।
প্রসঙ্গত, উপাচার্য নিগ্রহের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল দেশবন্ধু মহিলা কলেজের মোট চার ছাত্রীর। কলেজের সিসিটিভি ফুটেজে বহিরাগত ওই চার ছাত্রীকে শনাক্ত করেন বড়িশা বিবেকানন্দ কলেজ কর্তৃপক্ষ। দেশবন্ধু কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান ওই চার জনের একজন তাঁদের প্রাক্তনী অনিমা কর। বাকি তিন জন বর্তমান পড়ুয়া। এবং তাঁরা কেউই স্নাতক স্তরের পার্ট ওয়ান পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি। আর তদন্ত কমিটির নির্দেশের পর এমনিতেই পরীক্ষায় ব্রাত্য হলেন তাঁরা।
তবে এই গোটা ঘটনায় যুক্ত ছিলেন বড়িশা বিবেকানন্দ কলেজের আরও ৯ ছাত্রী। তাঁদের আগেই এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ফুটেজে এক ছাত্রকে দেখা যায় উপাচার্যের গাড়ি আটকাতে। তাঁর নামে বেহালা থানায় অভিযোগও দায়ের করেছে বিবেকানন্দ কলেজ। তবে পুলিশ এখনও তাঁকে শনাক্তই করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন বিবেকানন্দ কলেজের অধ্যক্ষা সোমা ভট্টাচার্য। ছবি হাতে থাকা সত্ত্বেও কেন ছেলেটিকে গ্রেফতার করা গেল না সেই প্রশ্নের কোনও সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেনি পুলিশও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy