Advertisement
E-Paper

Ham Radio: হ্যাম রেডিয়োর সাহায্যে মিশন থেকে ঘরে ফেরা

পাঁচ জনের মধ্যে দু’জন এ রাজ্যের বাসিন্দা। তাঁরা হলেন শেখ আশরাব (৩৫) ও আজিজুর (২২)। আশরাবের বাড়ি হাওড়ার সাঁকরাইলে।

মিলন হালদার

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৩৯

প্রতীকী ছবি।

কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় পড়ে ছিলেন ওঁরা পাঁচ জন। সেখান থেকে অসহায় মানুষগুলির স্থান হয়েছিল পার্ক সার্কাসের চার নম্বর সেতুর কাছে মিশনারিজ় অব চ্যারিটির ‘প্রেমদান’ ক্যাম্পাসে। বেশ কয়েক বছর ধরে সেই ক্যাম্পাসই ছিল ওই পাঁচ মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির ঠিকানা। অবশেষে খোঁজ মিলেছে তাঁদের পরিজনদের। সৌজন্যে হ্যাম রেডিয়ো। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাব’-এর সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস জানান, হ্যাম রেডিয়োর প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে এক দিনে পাঁচ জনের পরিবারের খোঁজ মেলে। এমন সাফল্য এই প্রথম।

ওই পাঁচ জনের মধ্যে দু’জন এ রাজ্যের বাসিন্দা। তাঁরা হলেন শেখ আশরাব (৩৫) ও আজিজুর (২২)। আশরাবের বাড়ি হাওড়ার সাঁকরাইলে। আজিজুরের মালদহের চাঁচলে। বাকি তিন জন ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে মহেন্দ্রকুমার রবিদাসের (২১) বাড়ি ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে, সুভাষ সেনের (৬৫) বাড়ি অসমের শিলচরে ও স্বরূপকান্তি সিংহ (৪৩) অসমের করিমগঞ্জের বাসিন্দা। ইতিমধ্যেই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন আশরাব, আজিজুর ও মহেন্দ্র। সুভাষ এবং স্বরূপকান্তিও আপনজনের কাছে ফেরার অপেক্ষায়।

মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় পাঁচ জনই বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। তার পরে কী ভাবে তাঁরা কলকাতায় পৌঁছন, কেউ জানে না। মিশনারিজ় অব চ্যারিটির ‘প্রেমদান’ ক্যাম্পাসের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সমাজকর্মী দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। ক্যাম্পাসের এই রকম মানুষদের দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। দীপঙ্করবাবু জানান, ওই পাঁচ জনের মধ্যে তিন জনকে রাস্তা থেকে তুলে এনেছিলেন মিশনারিজ় অব চ্যারিটির সিস্টারেরা। বাকি দু’জনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে পুলিশ।

চিকিৎসায় সাড়া দিয়ে ওই পাঁচ মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি অনেকটাই সুস্থ হয়ে ওঠায় তাঁদের বাড়ি ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। দীপঙ্করবাবু বলেন, “ওঁদের বাড়ি ফেরানোর উদ্দেশ্যে সম্প্রতি যোগাযোগ করি হাওড়ার কদমতলায় অবস্থিত মিশনারিজ় অব চ্যারিটির ‘নবজীবন’ ক্যাম্পাসের ব্রাদার সাজন জোসেফের সঙ্গে। তাঁর কাছ থেকেই অম্বরীশবাবুর ফোন নম্বর পেয়ে যোগাযোগ করি।”

ব্রাদার সাজন জোসেফ জানান, অম্বরীশবাবু এবং হ্যাম রেডিয়োর কাজকর্ম সম্পর্কে তিনি জেনেছিলেন সংবাদপত্র থেকে। তিনি বলেন, “এর আগে হ্যাম রেডিয়োর সাহায্যে নবজীবন ক্যাম্পাসের চার জনকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। তাই দীপঙ্করবাবুকে অম্বরীশবাবুর নম্বর দিই।”

গত বুধবার বাড়ির লোক এসে নিয়ে গিয়েছেন সাঁকরাইলের বাসিন্দা আশরাবকে। তাঁর কাকিমা সাবেরা বেগম বলেন, “২০১৯ সালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল আশরাব। গত মঙ্গলবার দুপুরে হ্যাম রেডিয়োর মাধ্যমে ভিডিয়ো কলে আমাদের সঙ্গে ওর কথা হয়। মাকে দেখে চিনতে পেরে কেঁদে ওঠে ও।’’

গত বৃহস্পতিবার দিদি-জামাইবাবুর সঙ্গে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন মহেন্দ্র। তাঁর জামাইবাবু মনোজ কুমার জানান, পাঁচ-ছ’বছর ধরে নিখোঁজ ছিলেন মহেন্দ্র। কয়েক দিন আগে হ্যাম রেডিয়োর মাধ্যমে ভিডিয়ো কলে ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। আর মহেন্দ্র বলছেন, “রাস্তায় শরীর খারাপ হয়ে গিয়েছিল। সিস্টারেরা উদ্ধার করে নিয়ে যান। ওখানে এক বছর ছিলাম।’’ শনিবার আপনজনের সঙ্গে বাড়ি ফিরেছেন চাঁচলের আজিজুরও। তাঁর খুড়তুতো ভাই সানাউল্লা বলেন, “প্রায় দু’বছর ধরে আজিজুর নিখোঁজ ছিল। আমরা অনেক চেষ্টা করেও ওর সন্ধান পাইনি। এখন আজিজুরের খোঁজ পেয়ে আমরা খুবই খুশি।”

বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় শিলচরের প্রৌঢ় সুভাষবাবুও। ছেলে গুড্ডু সেন জানিয়েছেন, ২০১৮ সাল থেকে তাঁর বাবা নিখোঁজ। শীঘ্রই বাবাকে তিনি বাড়ি নিয়ে যাবেন। তবে অন্য কথা বলছেন করিমগঞ্জের বাসিন্দা স্বরূপকান্তির ভাই স্বরাজ সিংহ। তিনি বলেন, “তিন-চার বছর হল মেজদা নিখোঁজ। মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় দাদা অশান্তি করত। আমাদের ওকে ফেরানোর ইচ্ছে নেই।”

Ham Radio Missionaries of Charity
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy