বালিগঞ্জের একটি অভিজাত ক্লাবে সংস্কারের কাজ করতে গিয়ে ভারা ভেঙে পড়ার ঘটনায় জখম হলেন পাঁচ শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে দু’জন এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শুক্রবার সকালের এই ঘটনায় শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই শ্রমিকের কোমরে দড়ি বাঁধা ছিল না, পরা ছিল না হেলমেট। অন্ধকারে উজ্জ্বল দেখায়, এমন জ্যাকেট বা আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য অক্সিজেনের ব্যবস্থাও ঘটনাস্থলে ছিল না বলে পুলিশের দাবি। যদিও এই ঘটনায় রাত পর্যন্ত বালিগঞ্জ থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। পুলিশ একটি ডায়েরি করে তদন্ত চালাচ্ছে। ক্লাবের সদস্যদের অবশ্য দাবি, ১০ ফুট উঁচুতে উঠে কাজ করার সময়ে এক জন শ্রমিক কোনও ভাবে পড়ে যান। এর বেশি কিছু নয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, কয়েক দিন ধরেই ওই ক্লাবের বাইরের দিকে সংস্কারের কাজ চলছে। এর জন্য সেখানে ভারা বেঁধে ১০ ফুট উচ্চতায় উঠেছিলেন কয়েক জন শ্রমিক। এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বৃষ্টির মধ্যে হঠাৎ সেই ভারা ভেঙে নীচে থাকা শ্রমিকদের উপরে পড়ে। এতেই পাঁচ জন জখম হন। দ্রুত তাঁদের এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন জনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও ইজ়রায়েল আনসারি এবং আনোয়ার হোসেন নামে দু’জনের কাঁধে চোট লাগায় তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। যদিও ওই ক্লাবের কমিটি-সদস্য কপিল শ্রফের দাবি, ভারা থেকে নয়, সিঁড়ি থেকে এক শ্রমিক নীচে দাঁড়ানো আর এক শ্রমিকের উপরে পড়ে যান। এর ফলে দুই শ্রমিক জখম হয়েছেন।
এ দিন ওই ক্লাবে গিয়ে দেখা যায়, চলছে সংস্কারের কাজ। এক পাশে দাঁড় করানো রয়েছে একটি স্টিলের মই। বাইরের দিকের দেওয়ালে প্রায় ১০ ফুট উঁচুতে একটি পাথর খোলা। সে দিকে দেখিয়ে কপিল বলেন, ‘‘দেওয়ালের ওই পাথরটি খুলে গিয়েছিল। সেটি লাগানোর কাজ করার জন্য এক শ্রমিক স্টিলের মইয়ে উঠেছিলেন। আচমকা পড়ে যান।’’ যদিও ঘটনাস্থলে ঠিকাদার সংস্থার কাউকে দেখা যায়নি। কর্মরত শ্রমিকদের কয়েক জনকে প্রশ্ন করা হলেও তাঁরা কিছু বলতে চাননি।
শ্রমিকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল কিনা, জানতে চাওয়া হলে কপিল বলেন, ‘‘সিঁড়িতে উঠে কাজ করার জন্য কী নিরাপত্তা থাকবে? সিঁড়িতে উঠে কাজ করার জন্য কেউ কোমরে দড়ি বাঁধেন না বা হেলমেট পরেন না।’’ পুরসভা যদিও বার বার নির্দেশিকা প্রকাশ করে জানিয়েছে, উঁচুতে কাউকে কাজ করাতে ওঠানো হলে নিরাপত্তার সব বন্দোবস্ত করে তবেই পাঠাতে হবে। কিন্তু সেই নির্দেশে কাজ হচ্ছে কই? ফের উঠছে সেই প্রশ্ন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)