E-Paper

বাজির ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট, হৃদ্‌রোগ, মামলার আবেদন হাই কোর্টে

কলকাতা হাই কোর্টে একটি মামলার আবেদন করে জানানো হয়েছে, রাজ্যে প্রচলিত বাজি নিরীক্ষা ও পরীক্ষার প্রক্রিয়া কার্যত ভুয়ো। বহু বাজি ‘সবুজ বাজি’ নামে বিক্রি হচ্ছে, অথচ তার কোনও বৈজ্ঞানিক স্বীকৃতি নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:১৪

—প্রতীকী চিত্র।

উৎসবের আনন্দ ঢেকে দিচ্ছে বিষাক্ত ধোঁয়ায় দূষিত বাতাস, আর সেই ধোঁয়া ছড়াচ্ছে বাজি থেকেই। কলকাতা ও আশপাশের জেলাগুলিতে উৎসবের পরপরই শ্বাসকষ্ট, হৃদ্‌রোগ, হাঁপানি ও চোখ জ্বালার মতো সমস্যা বাড়ছে। হাসপাতালগুলিতে বাড়ছে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা ও বুকে ব্যথা নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা। এই ভয়াবহ জনস্বাস্থ্য সঙ্কটের দায় পড়ছে অবৈধ বাজি উৎপাদন ও ব্যবহারের উপরেই, এমনই অভিযোগ তুলল পরিবেশকর্মীদের সংগঠন সবুজ মঞ্চ।

সংস্থার তরফে কলকাতা হাই কোর্টে একটি মামলার আবেদন করে জানানো হয়েছে, রাজ্যে প্রচলিত বাজি নিরীক্ষা ও পরীক্ষার প্রক্রিয়া কার্যত ভুয়ো। বহু বাজি ‘সবুজ বাজি’ নামে বিক্রি হচ্ছে, অথচ তার কোনও বৈজ্ঞানিক স্বীকৃতি নেই। সেগুলি আদতে নকল সবুজ বাজি। মামলার আবেদনপত্রে বলা হয়েছে, অধিকাংশ বাজির গায়ে থাকা তথাকথিত অনুমোদন চিহ্ন (কিউআর কোড) জাল, যা পরিবেশ দূষণ রোধের নামে কার্যত ভাঁওতা।

সবুজ মঞ্চের অভিযোগ, প্রশাসন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলি এ নিয়ে তৎপর নয়। ফলে রাজ্য জুড়ে অবৈধ কারখানা, গুদাম এবং দোকানে বিপুল পরিমাণে বাজি তৈরি ও বিক্রি হচ্ছে। বহু ক্ষেত্রেই কারখানার কোনও অনুমোদন নেই, বালাই নেই নিরাপত্তা-বিধির। আর তার জেরেই বার বার ঘটছে বিস্ফোরণ ও প্রাণহানি। দত্তপুকুর, এগরা এবং বজবজের ভয়াবহ দুর্ঘটনার উল্লেখও করা হয়েছে আবেদনপত্রে।

আবেদনপত্রে দাবি করা হয়েছে, শুধুমাত্র ‘সবুজ বাজি’ বলে প্রচার করলেই তা পরিবেশবান্ধব হয় না। প্রতিটি বাজির আলাদা আলাদা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষণ ও অনুমোদন জরুরি। অথচ রাজ্যে এই পরীক্ষার কোনও স্বচ্ছ ব্যবস্থা নেই। ফলস্বরূপ, বিপুল পরিমাণে ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান— যেমন বেরিয়াম, সীসা, নাইট্রেট-সহ দূষক বাতাসে মিশে জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করছে।

আবেদনকারীরা আদালতের কাছে দাবি করেছেন, রাজ্য জুড়ে সব ধরনের অননুমোদিত বাজি উৎপাদন ও বিক্রি অবিলম্বে বন্ধ করা হোক, বাজির দোকান ও গুদামে নিয়মিত তল্লাশি চালানো হোক এবং সংশ্লিষ্ট পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের দায় নির্ধারণ করা হোক। পাশাপাশি, অভিযোগকারীদের নাম গোপন রেখে অভিযোগ নথিভুক্ত করার ব্যবস্থা করারও অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সবুজ মঞ্চের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, এই মামলা মূলত জনস্বাস্থ্যের প্রশ্নে দায়বদ্ধতার আবেদন। আদালত যদি কঠোর নির্দেশ দেয়, তা হলে অন্তত উৎসবের পরে কলকাতা ও শহরতলিতে কালো ধোঁয়া এবং বিষাক্ত গন্ধ থেকে মানুষ কিছুটা মুক্তি পেতে পারেন।

মামলাটি আজ, বৃহস্পতিবার কোর্টের শুনানির তালিকায় ওঠার কথা বলে জানা গিয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

heart disease Crackers

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy