Advertisement
০১ মে ২০২৪
Illegal Construction

অবৈধ নির্মাণ জেনেও কেন ‘নীরব’ পুর কর্তৃপক্ষ, প্রশ্ন তুলছে মৃতের পরিবার

ঘটনার পর থেকে ঘন ঘন জ্ঞান হারাচ্ছেন জাকিরের মা মেহনাজ খাতুন। জাকিরের পরিবারের তরফে আশরাফ আলি রবিবার টেলিফোনে বলেন, ‘‘বেআইনি নির্মাণই আমাদের ছেলের প্রাণ কাড়ল।”

An image of the illegal construction

এই বেআইনি নির্মাণের কারণে প্রাণ গিয়েছে একমাত্র ছেলের। ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৩ ০৬:২১
Share: Save:

বেআইনি নির্মাণের কারণে প্রাণ গিয়েছে একমাত্র ছেলের। পাড়ায় পুরনো চারতলা বাড়িতে নিয়ম ভেঙে তল বাড়ানো হচ্ছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেই কাজ চলাকালীন দড়ি ছিঁড়ে লোহার রড পড়ে মাথায় গেঁথে মৃত্যু হয় ওয়াটগঞ্জের পাথরগলির বাসিন্দা, খিদিরপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জাকির আলির।

ঘটনার পর থেকে ঘন ঘন জ্ঞান হারাচ্ছেন জাকিরের মা মেহনাজ খাতুন। জাকিরের পরিবারের তরফে আশরাফ আলি রবিবার টেলিফোনে বলেন, ‘‘বেআইনি নির্মাণই আমাদের ছেলের প্রাণ কাড়ল। কোনও পরিবারের এমন পরিণতি যেন না হয়। মেয়রের কাছে আমাদের আবেদন, বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করুন।’’ কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং দফতরও মানছে যে, ন’নম্বর বরোর অন্তর্গত একবালপুর, ওয়াটগঞ্জ এলাকায় বেআইনি নির্মাণের ভূরি ভূরি অভিযোগ রয়েছে।

কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের ন’নম্বর বরো অর্থাৎ ওয়াটগঞ্জ বা একবালপুরে বেআইনি নির্মাণের অজস্র অভিযোগ বিল্ডিং দফতরে আসে। এমন অভিযোগ সব চেয়ে বেশি আসে ওই এলাকা থেকেই। আশরাফের কথায়, ‘‘আমাদের এলাকায় বেআইনি নির্মাণ নতুন কিছু নয়। চারতলা বাড়ির উপরে যে বেআইনি ভাবে তল হচ্ছিল, তা কি পুরসভা জানত না? যে সব এলাকা থেকে দিনের পর দিন অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ যায়, পুলিশ বা পুরসভা সেখানে কেন কঠোর পদক্ষেপ করে না?’’

শনিবার বিকেলে জাকিরের বাড়িতে মেয়র ফিরহাদ হাকিম পৌঁছতে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আশরাফ-সহ বাসিন্দারা মেয়রের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, এলাকায় বেআইনি নির্মাণ ব্যাপক বেড়ে গিয়েছে। সেখানে উপস্থিতি ওয়াটগঞ্জ থানার ওসি-কে এমন নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে নির্দেশ দেন মেয়র।

উল্লেখ্য, শহরে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগের বিরাম নেই। প্রতি সপ্তাহে ‘টক টু মেয়র’-এ এই অভিযোগ শুনতে হয় ফিরহাদকে। বার বার অভিযোগ পেয়ে ক্ষুব্ধ মেয়র প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘এলাকায় যে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট বরোর বিল্ডিং দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারেরা তা জানেন না, এটা হতে পারে?’’ পাশাপাশি, এই মতও শোনা যাচ্ছে, বেআইনি নির্মাণের জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়ানো বিল্ডিং দফতরের দায়িত্বে আছেন ফিরহাদ স্বয়ং। একের পর এক এমন অভিযোগ প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাচ্ছে তাঁর ক্ষমতাকেও।

যদিও ডিজি (বিল্ডিং) উজ্জ্বলকুমার সরকারের দাবি, ‘‘আমরা প্রচুর বেআইনি নির্মাণ ভাঙছি। গত ছ’মাসে শুধু ন’নম্বর বরোতেই ৫০টি এমন নির্মাণ ভাঙা হয়েছে। বেআইনি নির্মাণের নোটিসও দিচ্ছি। ওয়াটগঞ্জের পাথরগলি এলাকায় চারতলার উপরে ওই নির্মাণও ভাঙা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE