কাজের নামে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী এক তরুণীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠল সংস্থারই অন্যতম এক মালিকের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে ওই তরুণী আনন্দপুরথানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে যৌন হেনস্থার ধারায় মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে আনন্দপুরথানার পুলিশ। সোমবার রাতেই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। অভিযুক্তের খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তরুণীর গোপন জবানবন্দি নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগকারী তরুণীর বয়স ২৬ বছর। তিনি দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা। ওই সর্বভারতীয় বিপণি সংস্থাটিতে তিনি বেশ কয়েক বছর ধরেইকর্মরত। বর্তমানে তরুণী ম্যানেজার পদে রয়েছেন। লিখিত অভিযোগে তরুণী জানিয়েছেন, গত ৫ জুলাই সংস্থার অন্যতম এক মালিককাজের নাম করে পার্ক স্ট্রিটের একটি রেস্তরাঁয় ডাকেন তাঁকে। সেখানে খাওয়া-দাওয়া করার পরে কিছু জরুরি কাজের কথা বলা হয়। এমনকি, সেই কাজের জন্য অভিযুক্ত নিজেরবাড়ি যেতে রাজি করান তরুণীকে। কাজ শেষে রাতেই গাড়িকরে তাঁকে বাড়িতে ছেড়ে দেওয়াহবে, এই প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় তরুণী রাজি হয়ে যান। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তরুণী জানিয়েছেন, সংস্থার মালিকই কাজের কথা বলায় তাঁর কোনও সন্দেহ হয়নি।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত আনন্দপুর থানা এলাকার একটি বিলাসবহুল আবাসনের বাসিন্দা। ঘটনার রাতে সেখানেই তরুণীকে নিয়ে যান অভিযুক্ত। নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে এর পরে তিনি তরুণীকে যৌন হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। এমনকি, মোবাইলে তাঁর নগ্ন ছবি তুলে রাখেন অভিযুক্ত, পুলিশকে জানিয়েছেন তরুণী। ঘটনার কথা বাইরে কাউকে জানালে ওই ছবি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়া হবে বলে অভিযুক্ত ব্ল্যাকমেল করেন বলেও তরুণীর অভিযোগ।
সূত্রের খবর, পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তরুণী দাবি করেছেন, সেই ভয়েইপ্রায় ১০ দিন তিনি থানার দ্বারস্থহননি। অভিযুক্ত প্রভাবশালী হওয়াতেও তিনি আতঙ্কে ছিলেন। তবে সোমবার পরিবারের কয়েক জনকে বিষয়টি বিস্তারিত জানান তিনি। তার পরেই পুলিশে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। সোমবার রাতে আনন্দপুর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। ওই রাতেই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানোর পাশাপাশি মঙ্গলবার তাঁর পোশাকও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
তদন্তে নেমে মঙ্গলবার অভিযুক্তের আবাসনে গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। সেখানকার সিসি ক্যামেরারফুটেজ পরীক্ষা করা হয়। কথা বলা হয়েছে আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গেও। সূত্রের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, ঘটনার রাতে তরুণীর ওই আবাসনে প্রবেশের প্রমাণ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁকে হেনস্থার বেশ কিছু প্রমাণও মিলেছে। তবে অভিযুক্তের কোনও খোঁজ পায়নি পুলিশ। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)