Advertisement
১০ অক্টোবর ২০২৪
21 July TMC Rally

দু’দিন আগে এসেও দেখা হল না সভা, আটকে হাসপাতালেই

২১ জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূলের ‘শহিদ’ সমাবেশে যোগ দেওয়ার কথা বলেছিলেন পাড়ার ‘দাদা’। কলকাতা ঘোরানোর কথা বলে দু’দিন আগে আসার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

অপেক্ষারত: এখনও চিকিৎসাধীন আলিপুরদুয়ার থেকে সভায় যোগ দিতে এসে দুর্ঘটনার কবলে পড়া তিন জন। রবিবার, এন আর এস হাসপাতালে তাঁদের পরিজনেরা।

অপেক্ষারত: এখনও চিকিৎসাধীন আলিপুরদুয়ার থেকে সভায় যোগ দিতে এসে দুর্ঘটনার কবলে পড়া তিন জন। রবিবার, এন আর এস হাসপাতালে তাঁদের পরিজনেরা। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

চন্দন বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৪ ০৬:২০
Share: Save:

বাস দুর্ঘটনায় কারও ঘাড়ের হাড় ভেঙেছে। কারও গলার কাছে গেঁথে গিয়েছে বড় কাচের টুকরো। হাসপাতালে শয্যাশায়ী কলকাতায় নিয়ে আসা ‘দাদা’ও। তাই দু’দিন আগে উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছলেও হল না একুশে জুলাইয়ের সভা দেখা। এখন ফেরাও যাচ্ছে না বাড়ি। এমনকি নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (এন আর এস) চত্বরে ব্যাগপত্তর নিয়ে থাকা আহতদের সঙ্গীরা কবে ফেরার ট্রেন ধরতে পারবেন, ঠিক নেই তার।

২১ জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূলের ‘শহিদ’ সমাবেশে যোগ দেওয়ার কথা বলেছিলেন পাড়ার ‘দাদা’। কলকাতা ঘোরানোর কথা বলে দু’দিন আগে আসার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মতো বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের চাপানি গ্রাম থেকে ‘দাদা’র সঙ্গী হয় ২৫ জনের দলটি। শুক্রবার সকালে তারা নামে শিয়ালদহ স্টেশনে। সেখান থেকে ওই কর্মী-সমর্থকদের বাসে করে সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। সেই বাসই দুর্ঘটনায় পড়ে। ইএম বাইপাসে অন্য একটি বাস এসে সজোরে তাতে ধাক্কা মারে। ছিটকে পড়েন সভায় আসা যাত্রীরা। গুরুতর জখম হন তাঁদের মধ্যে ন’জন। সকলকে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখন বেশির ভাগকে ছুটি দেওয়া হলেও দুর্ঘটনায় আহত ‘দাদা’-সহ তিন জন হাসপাতালে ভর্তি থাকায় বাকিরা কবে আলিপুরদুয়ার ফিরতে পারবেন, সেটাই অনিশ্চিত। ফেরার ব্যবস্থা কে করবেন, চিন্তা কাটছে না তা নিয়েও।

এন আর এস হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে আলিপুরদুয়ার থেকে আসা দলটির এক কিশোর সদস্য সন্দীপ দেবনাথের। বছর চোদ্দোর সন্দীপ বাবা-মায়ের সঙ্গে এসেছিল। সন্দীপের গলায় কাচের টুকরো গেঁথে গিয়েছে। মা পুতুল দেবনাথ এ দিন বলেন, ‘‘ছেলের বিপদ এখনও কাটেনি বলে জানিয়েছেন ডাক্তারেরা। কবে ছাড়বে, কিছুই জানি না। রবিবার রাতের পদাতিক এক্সপ্রেসে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু সে তো ফেরা হবে না। কবে ফিরতে পারব, জানি না।’’

ওই হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন স্বপন দেবনাথ এবং দুধকুমার রায় নামে আহত আরও দু’জন। এ দিন হাসপাতালে ছিলেন তাঁদের পরিজনেরাও। তাঁরা জানাচ্ছেন, স্বপনের কথায় সকলে কলকাতায় এসেছিলেন। সব ব্যবস্থা করেছিলেন স্বপন। কিন্তু তিনিই আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকায় অথৈ জলে বাকিরা। স্বপনের ভাই তপন দেবনাথ বলেন, ‘‘নেতা-মন্ত্রীরা হাসপাতালে এসেছিলেন। সবাই দেখা করে পাশে থাকার কথা বলেছেন। এমনকি, চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থাও করেন। কয়েক জন আহতকে ছেড়ে দেওয়ায় তাঁদের শনিবার রাতেই ফেরার ট্রেনে তুলে দিতে পেরেছি। কিন্তু বাকিদের কী হবে, সেটাই ভাবছি।’’

‘দিদি’র বক্তব্য শুনতে একুশের সভায় এসেও উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় এ দিন দলের কেউ সভাস্থলে যেতে পারেননি। হাসপাতাল চত্বরেই ব্যস্ত থেকেছেন। সুযোগ পেলে সভার ঝলক দেখতে মোবাইলে চোখ রেখেছেন। হাসপাতালে দাঁড়িয়ে রণজিৎ বিশ্বাস দাবি করেন, ‘‘১৯৯৩ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কলকাতায় যে আন্দোলন হয়েছিল, সেখানে আমিও ছিলাম। তার পর থেকে কোনও একুশে জুলাই বাদ দিইনি। এ বার এলেও সভায় যোগ দেওয়া বাদ থেকে গেল।’’

অন্য বিষয়গুলি:

21 July TMC Rally TMC Rally TMC Road Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE