জেসমিন মিত্র। ছবি: সংগৃহীত।
দক্ষিণ কলকাতার একটি বহুতলের নীচে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হল এক তরুণীর দেহ। মৃতের নাম জেসমিন মিত্র (৩০)। তাঁর বাড়ি ঠাকুরপুকুর এলাকায়। এজিসি বোস রোডের উপর মিন্টো পার্ক এলাকায় তাঁর অফিস। সেই অফিস বিল্ডিংয়ের নীচেই সোমবার সকাল সওয়া ১১টা নাগাদ জেসমিনের দেহ উদ্ধার হয়। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বিয়ের পর থেকে ওই তরুণী নিঃসন্তান। তাঁর স্বামীরও চাকরি চলে গিয়েছিল। পরে অবশ্য তাঁর স্বামী অন্য চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু এ সব নিয়েই তরুণী মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। অফিসের সিসিটিভি ফুটেজেও যেমন দেখা গিয়েছে, কাজ করার সময় আচমকাই তিনি ঝাঁপ দেন। তিনি অফিসের আট তলা থেকে ঝাঁপ মেরেছিলেন।
ওই অফিসের নিরাপত্তারক্ষীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, তখন সকাল সওয়া ১১টা বাজে। মিন্টো পার্ক সংলগ্ন এজেসি বসু রোডে তখন মানুষজন-গাড়িঘোড়ার ভিড়। হঠাৎই উপর থেকে বেশ ভারী কিছু নীচে পড়ার জোরালো আওয়াজ পান চিত্রকূট বিল্ডিংয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা। ওই বহুতলে একাধিক বেসরকারি সংস্থার অফিস। সঙ্গে সঙ্গেই নিরাপত্তারক্ষীরা দৌড়ে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এক তরুণী। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় ভবানীপুর থানায়। পুলিশ এসে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসকেরা জানান, ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: নিখোঁজ শিশুর দেহ উদ্ধার, ধৃত প্রতিবেশী যুবক
নিরাপত্তারক্ষীদের কাছ থেকেই পুলিশ জানতে পারে, ওই তরুণীর নাম জেসমিন মিত্র। চিত্রকূট বিল্ডিংয়ের আটতলায় একটি গাড়ি বিমা কোম্পানিতে কাজ করতেন তিনি। অন্য দিনের মতো এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ অফিসে এসেছিলেন জেসমিন। অফিসে যেখানে তিনি বসতেন, সেই টেবিলের উপর থেকে তাঁর মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই তলারই একটি খোলা জানলার নীচে তাঁর পায়ের জুতোও পাওয়া গিয়েছে। খোলা জুতো এবং টেবিলে রাখা মোবাইল দেখে প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের ধারণা, আটতলার ওই জানলা থেকেই নীচে ঝাঁপ মেরেছিলেন জেসমিন। কিন্তু কী কারণে ওই তরুণী নীচে ঝাঁপ মেরেছিলেন, সে বিষয়ে এখনও অন্ধকারে তদন্তকারীরা। পাওয়া যায়নি কোনও সুইসাইড নোটও।
পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে এসএসকেএমে আসেন জেসমিনের বাবা এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা। তাঁরা পুলিশকে জানিয়েছেন, ২০১২-য় জেসমিনের সঙ্গে বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা অনিরুদ্ধ মিত্রের বিয়ে হয়। আলাদা ধর্মে বিয়ে হলেও তা নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে কোনও সমস্যা ছিল না। জেসমিনের স্বামী অনিরুদ্ধও একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। তাঁকেও খবর দেওয়া হয়। পুলিশ অনিরুদ্ধের সঙ্গেও কথা বলেছে। প্রাথমিক ভাবে পারিবারিক কোনও গন্ডগোলের হদিশ পাননি তদন্তকারীরা। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে জেসমিনের অফিসের সহকর্মীদেরও। ওই তরুণী যদি আত্মহত্যা করে থাকেন, তবে কী কারণে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভবানীপুর থানার এক আধিকারিক।
আরও পড়ুন: দিদির পছন্দের মুড়িতেই পেট ভরালেন ওঁরা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy