Advertisement
E-Paper

দামি নেশা এলএসডিতে মজে শ্রীঘরে পার্ক সার্কাসের যুবক

আমেরিকার রকস্টাররা একদা ডুবে থাকতেন এই নেশায়। ঘোর লাগা অবস্থায় মাতিয়ে দিতেন দর্শক-শ্রোতাদের। এই নেশার চল ছিল হিপি-দের মধ্যেও। নেশাটার সংক্ষিপ্ত নাম এলএসডি। লাইসারজিক অ্যাসিড ডাই-ইথাইলামাইড।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৫ ০৩:৪৬

আমেরিকার রকস্টাররা একদা ডুবে থাকতেন এই নেশায়। ঘোর লাগা অবস্থায় মাতিয়ে দিতেন দর্শক-শ্রোতাদের। এই নেশার চল ছিল হিপি-দের মধ্যেও।

নেশাটার সংক্ষিপ্ত নাম এলএসডি। লাইসারজিক অ্যাসিড ডাই-ইথাইলামাইড। অত্যন্ত দামি এই মৌতাত-সামগ্রী আদতে এক ধরনের তরল। মাদক চোরাচালান রুখতে ভারত সরকারের যে-নার্কোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) রয়েছে, তাদের কর্তারা জানাচ্ছেন, সাধারণত সমাজের উচ্চবিত্ত পরিবারের যুবক-যুবতীদের মধ্যে এই মহার্ঘ নেশা করার প্রবণতা দেখা যায়।

সাম্প্রতিক অতীতে কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গে এলএসডি ব্যবহারের কথা বিশেষ শোনা যায়নি। এনসিবি-র এক কর্তা জানান, গত বেশ কয়েক বছরে এই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হেরোইন এবং অন্য নানা ধরনের মাদক ধরা পড়েছে। কিন্তু এলএসডি ধরা পড়েনি। এ বার সেই মূল্যবান মাদকদ্রব্য নিয়েই ধরা পড়লেন কলকাতার একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের এক যুবক। তাঁর বাড়ি পার্ক সার্কাস এলাকায়। বাবা ব্যবসা করেন। মা স্কুলশিক্ষিকা।

২১ বছরের ওই যুবক ম্যানেজমেন্ট পড়তে বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন। এনসিবি-র জোনাল ডিরেক্টর সুব্রত বিশ্বাস জানান, বেঙ্গালুরুতেই ওই যুবক এলএসডি-র কবলে পড়ে। তাই তাঁকে গ্রেফতার করার জন্য বেঙ্গালুরু থেকে এনসিবি অফিসারেরা কলকাতায় এসেছিলেন। ওই যুবকের কাছে এত বেশি এলএসডি পাওয়া গিয়েছে যে, অফিসারদের ধারণা, তিনি নিজে ওই নেশা তো করতেনই। সেই সঙ্গে নিয়মিত এলএসডি সরবরাহের কাজও করতেন ওই যুবক।

এনসিবি সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণত ব্লটিং পেপারের উপরে এই তরল মাদক ফেলে সেই কাগজ শুঁকে নেশা করা হয়। তা ছাড়াও সুগার কিউব-এর মধ্যে ফেলে এই নেশা করেন অনেকে। এলএসডি মাখা এক-একটি ছোট ছোট টুকরো ব্লটিং পেপারের দাম কয়েক হাজার টাকা। কলকাতার ওই যুবকের কাছে এই ধরনের ৩৮টি কাগজের টুকরো পাওয়া গিয়েছে।

এনসিবি জানাচ্ছে, এই তরল মাদক এতই মূল্যবান যে, কারও কাছে ০.০০৫ গ্রাম তরল থাকলেও তা বাণিজ্যিক কারণে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে ধরে নিতে হয়। পার্ক সার্কাসের ওই যুবকের কাছে তার চেয়ে অনেক বেশি তরল মাদক পেয়েছে এনসিবি।

ওই যুবকের বিরুদ্ধে মাদক সরবরাহের অভিযোগের কিছি প্রমাণও মিলেছে বলে এনসিবি সূত্রের খবর। মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থার কর্তা সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘ম্যানেজমেন্ট পড়ে ফিরে আসার পরেও প্রধানত দু’টি কারণে ওই যুবক নিয়মিত বেঙ্গালুরু যাতায়াত করতেন। প্রথমত, এলএসডি। দ্বিতীয়ত, দু’জন বান্ধবী। বেঙ্গালুরুতে যে-সব বাঙালি ছাত্রছাত্রী থাকেন, মূলত তাঁদেরই এলএসডি জোগান দিতেন ওই যুবক।’’

এনসিবি-র খবর, প্রধানত বেঙ্গালুরু ও মুম্বইয়ের উচ্চবিত্ত যুবক-যুবতীরা এলএসডি-র নেশা করে থাকেন। কয়েক মাস আগে ওই নেশা করার অভিযোগে বেঙ্গালুরুর একটি নৈশ আসর থেকে ১২ জন যুবক-যুবতীকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁরা সকলেই উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলে বা মেয়ে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই কলকাতার ওই যুবকের নাম জানা যায়।

তার পরে যুবকটির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালানো হয়। বিপদের আঁচ পেয়ে ওই যুবকের বাবা তাঁকে কার্যত ঘরবন্দি করে ফেলেন। কিন্তু মাস তিনেকের মধ্যেই বাবার নজরদারি এড়িয়ে বেরিয়ে আসেন ওই যুবক। আবার শুরু হয় এলএসডি। নেশা ও জোগান দেওয়া। তখনই ধরা পড়ে যান। তিনি আপাতত জেলে।

parkcircus lsd jail police America west bengal kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy