Advertisement
E-Paper

পায়ের তলায় সর্ষে নিয়েই পরিবেশ বাঁচানোর বার্তা

২০০২ সালে শুরু হয়েছিল তাঁর বিশ্ব ভ্রমণ। ২০০৯ সালের মধ্যেই ঘুরে ফেলেছিলেন ১৯৪টি দেশ।

মধুমিতা দত্ত

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২১ ০৮:০৫
মৌসিনরামে ভূপর্যটক কাশী সমাদ্দার।

মৌসিনরামে ভূপর্যটক কাশী সমাদ্দার। নিজস্ব চিত্র।

আগেই পকেটে পুরেছেন সব থেকে কম সময়ে পৃথিবীর ১৯৪টি সার্বভৌম দেশ ভ্রমণের রেকর্ড। স্বীকৃতি পেয়েছেন গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের। পাশাপাশি, ভূপর্যটক কাশী সমাদ্দার পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁর পৃথিবী পরিক্রমা।

২০০২ সালে শুরু হয়েছিল তাঁর বিশ্ব ভ্রমণ। ২০০৯ সালের মধ্যেই ঘুরে ফেলেছিলেন ১৯৪টি দেশ। তার স্বীকৃতিও পেয়েছেন। কিন্তু তাতেই থেমে থাকেননি। বিশ্বের উষ্ণায়ন থেকে শুরু করে প্লাস্টিকের ব্যবহার— পরিবেশের এমন নানা সমস্যা তাঁকে ভাবিয়ে তুলেছিল। মনে হয়েছিল, এই পৃথিবীর বহু এলাকার পরিবেশই আজ ধ্বংসের পথে। ধ্বংসের সেই প্রক্রিয়া হয়তো গোটা মানবসভ্যতাকেই এক দিন নিশ্চিহ্ন করে দেবে।

এই ভাবনার সূত্রেই মানুষকে সচেতন করতে ২০০৬ সাল থেকে তিনি পাড়ি দিয়েছেন সেই সব দেশে, যেখানে পরিবেশ সব থেকে বেশি বিপন্ন। এমনই একটি দেশ টুভলু, যেখানে প্রথমে গিয়েছিলেন তিনি। প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণে অবস্থিত ওই দেশটি পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম দেশগুলির মধ্যে চতুর্থ। সমুদ্রে ঘেরা সেই দেশের সৈকত খুব তাড়াতাড়ি ক্ষয়ে যাচ্ছে। মাত্র ২৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ওই দেশটি ধীরে ধীরে সমুদ্রের গর্ভে চলে যাচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে জলের উচ্চতা। বিশেষজ্ঞদের মতে, আর ৫০ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে টুভলুর কোনও চিহ্ন থাকবে না। প্রশান্ত মহাসাগরের অতল গহ্বরে অদৃশ্য হয়ে যাবে সেটি।

সেই টুভলু দিয়ে শুরু। এর পরে একে একে বারমুডা, গ্রিনল্যান্ড, মায়ানমার, ফারাও আইল্যান্ড, গুয়াম, ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, হাওয়াই, আইল অব ম্যান, টোঙ্গা, জাঞ্জিবার, তিব্বত-সহ গিয়েছেন পৃথিবীর বহু দেশে। বাংলাদেশের সুন্দরবন এবং ভারতের লাক্ষাদ্বীপের বাঙ্গারামেও গিয়েছেন। তাঁর ওই সফর শেষ হয়েছে গত বছরের ২৫ অক্টোবর। শেষ করেছেন পৃথিবীর সব থেকে বেশি বৃষ্টিপাতের রেকর্ড যে জায়গার, সেই মেঘালয়ের মৌসিনরামে। কাশী বললেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতিতেও দেশে দেশে যাওয়া থামাইনি। স্বাস্থ্য-বিধি মেনেই গিয়েছি। তবে অনেক ক্ষেত্রেই নানা ধরনের বিধি-নিষেধের মুখে পড়তে হয়েছে।’’

‘গো গ্রিন ব্রিদ ক্লিন’— এই স্লোগানকে সঙ্গী করেই পরিবেশের স্বার্থে ১৪ বছর ধরে ঘুরে বেড়িয়েছেন কাশী। পরিবেশ থেকে কার্বন কমানো, জল ও মাটির তলা দিয়ে আরও বেশি করে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা, বৃক্ষরোপণ, পরিবেশবান্ধব প্লাস্টিক ব্যবহার করা, জল এবং বিদ্যুত বাঁচানো— দেশে দেশে গিয়ে এ সবই তিনি বার বার বলেছেন।

আদতে কলকাতার বাসিন্দা এই ভূপর্যটক পেশাগত কারণে জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরশাহির দুবাই, চিন আর ইউরোপে। এখন ঠিকানা দিল্লি। তবে দুবাই হোক বা দিল্লি, গোটা পৃথিবীকেই নিজের ঘর বলে মনে করেন তিনি। স্বপ্ন দেখেন পাসপোর্ট, ভিসার বাধাহীন এক বিশ্বের।

এর পরের পরিকল্পনা কী? কাশী বলেন, ‘‘পরিবেশ বাঁচানোর বার্তা নিয়ে যাব আরও বহু দেশে। এর সঙ্গে ২০২৪ সালের মধ্যে ‘এক ভিসা, এক বিশ্ব’ নিয়ম চালুর প্রচার চালিয়ে যাব।’’

Environment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy