Advertisement
E-Paper

দিনের বেলা বাড়িতে ঢুকে বেঁধে লুঠপাট

দিনেদুপুরে বাড়িতে ঢুকে দশ বছরের বালিকার হাত-মুখ বেঁধে, মুখে বালিশ চাপা দিয়ে গয়না ও নগদ টাকা নিয়ে চম্পট দিল এক দুষ্কৃতী। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বেলেঘাটার চাউলপট্টি এলাকায়। ওই ঘটনায় রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:০৮
অকুস্থলে: পুলিশ কুকুর নিয়ে তদন্ত। মঙ্গলবার, বেলেঘাটায়। নিজস্ব চিত্র

অকুস্থলে: পুলিশ কুকুর নিয়ে তদন্ত। মঙ্গলবার, বেলেঘাটায়। নিজস্ব চিত্র

দিনেদুপুরে বাড়িতে ঢুকে দশ বছরের বালিকার হাত-মুখ বেঁধে, মুখে বালিশ চাপা দিয়ে গয়না ও নগদ টাকা নিয়ে চম্পট দিল এক দুষ্কৃতী। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বেলেঘাটার চাউলপট্টি এলাকায়। ওই ঘটনায় রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন বেলার দিকে ওই দোতলা বাড়ির একতলায় একাই ছিল চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী আস্থা দাস। বিছানায় শুয়ে ভিডিও গেম খেলছিল সে। বাড়ির গেট ও সদর দরজা ছিল খোলা। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ হঠাৎ এক যুবক ঘরে ঢুকে পড়ে। আস্থাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, হলুদ রঙের টি-শার্ট ও জিন্‌স পরা ওই যুবক ঘরে ঢুকেই আস্থার গলা চেপে ধরে। ভয় দেখিয়ে প্রথমে তার মুখ কাপড় দিয়ে বেঁধে দেয়। পরে দু’টি হাত পিছমোড়া করে গামছা দিয়ে বেঁধে বিছানার উপরে শুইয়ে দেয়। ওই অবস্থায় তার মুখের উপরে বালিশ চাপা দিয়ে ঘরের আলমারি খুলে নগদ প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা ও লক্ষাধিক টাকার গয়না নিয়ে চম্পট দেয় ওই যুবক।

পুলিশ জানিয়েছে, এই লুঠপাটের সময়ে নীচের তলায় কেউ না থাকলেও উপরের তলার রান্নাঘরে আস্থার মা ও জেঠিমা কাজে ব্যস্ত ছিলেন। প্রায় দশ মিনিট ধরে লুঠপাট চালিয়ে ওই যুবক চম্পট দেওয়ার পরে আস্থা হাত-মুখ বাঁধা অবস্থাতেই উপরের তলায় মায়ের কাছে যায়। মেয়েকে ওই অবস্থায় দেখে চমকে যান
গুড়িয়া দাস। তিনি মেয়ের মুখে ঘটনার কথা শুনেই আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠেন। তা শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। এর পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। বিকেলে ডিসি (ইএসডি) দেবস্মিতা দাস-সহ বেলেঘাটা থানার পুলিশ ও লালবাজারের ডাকাত দমন শাখার আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত শুরু করেন। পুলিশ কুকুর নিয়ে গোটা ঘর ও এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বেলেঘাটার চাউলপট্টি রোডে ২২ বছর ধরে বসবাস করছেন আস্থার বাবা মহেশ দাস। তিনি ঘটনার সময়ে বাড়ির কাছে নিজের কাঠের কারখানায় ছিলেন। খবর পেয়ে মহেশবাবু বাড়িতে চলে আসেন। তাঁর একমাত্র মেয়ে আস্থা এ দিন ছুটি থাকায় স্কুলে যায়নি। আস্থার মা গুড়িয়াদেবী ও বড় জেঠিমা কাঞ্চনদেবী রান্না করছিলেন। মেজ জেঠিমা অনিতা দাস ছোট ছেলেকে নিয়ে বাজারে গিয়েছিলেন। অনিতাদেবীর কথায়, ‘‘বেলা ১২টা নাগাদ বাজারে গিয়েছিলাম। দুপুর একটা নাগাদ খবর পেয়ে বাড়িতে আসি। বহু বছর ধরে এখানে বাস করছি। দিনের বেলায় এ রকম ঘটনা প্রথম ঘটল। এ বার তো এই এলাকায় থাকতেই ভয় করবে।’’ দিনের বেলায় এমন ডাকাতির ঘটনায় আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারাও। তাঁদের কথায়, ‘‘আমাদের এলাকায় এ রকম ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি।’’

বাড়িতে ঢুকে এ ভাবে লুঠপাটের ঘটনায় আতঙ্কিত দাস পরিবারের সকলেই। আস্থার জেঠতুতো দাদা বিট্টু দাস ঘটনার সময়ে কলেজে ছিলেন। বিট্টুর কথায়, ‘‘আস্থার সঙ্গে যা ঘটল, তাতে আমরা প্রত্যেকেই সন্ত্রস্ত। আমরা চাই, পুলিশ ওই অপরাধীকে খুঁজে বার করে কঠোর ব্যবস্থা নিক।’’

এলাকায় নিরাপত্তার অভাব নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা-প্রধান বিশাল গর্গ বলেন, ‘‘দিনের বেলায় এমন ডাকাতি সত্যিই বিস্ময়কর। তদন্ত চলছে। আশা করি, দুষ্কৃতী তাড়াতাড়িই ধরা পড়ে যাবে।’’

Loot Gold Ornaments Money Miscreant
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy