Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

কাউন্সিলরের সামনেই মা-মেয়েকে ‘হুমকি’

কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে এক মহিলা ও তাঁর মেয়েকে গালিগালাজ এবং তাঁদের বাড়ি ছাড়া করার জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রোমোটারের বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দমদমের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণপাড়ায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৫৮
Share: Save:

কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে এক মহিলা ও তাঁর মেয়েকে গালিগালাজ এবং তাঁদের বাড়ি ছাড়া করার জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রোমোটারের বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দমদমের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণপাড়ায়। রাতে দমদম থানায় ঘটনার কথা জানিয়ে জেনারেল ডায়েরি করেছেন ওই মহিলা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অঞ্জনা রক্ষিতের দাবি, মিথ্যা গল্প সাজিয়ে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছেন অভিযোগকারিণী। সংশ্লিষ্ট প্রোমোটারও গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ মানতে চাননি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ১৫ বছর আগে দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা রূপক ভট্টাচার্যের সঙ্গে বিয়ে হয় বেহালার সুস্মিতা দেবনাথের। তাঁদের একমাত্র মেয়ে মিমি ভট্টাচার্য এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। সুস্মিতা জানিয়েছেন, তিন বছর আগে দক্ষিণপাড়ার বাড়িটি প্রোমোটিংয়ের জন্য অর্ধেন্দু রায় নামে এক প্রোমোটারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন তাঁর শ্বশুরবাড়ির শরিকেরা। সেই মতো তাঁর সঙ্গে চুক্তি হয় রূপকেরও। সুস্মিতার অভিযোগ, তাঁর উপরে স্বামী শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। তাঁকে অন্ধকারে রেখেই প্রোমোটারকে তাঁর অংশ দেওয়ার জন্য চুক্তি করেছেন রূপক। সুস্মিতার আরও অভিযোগ, তাঁর এবং মেয়ের কী হবে জানতে চাইলে রূপক দায়িত্ব নিতে রাজি নন।

ওই মহিলার কথায়, ‘‘আমার ও মেয়ের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে বাড়ি ছাড়তে তো আপত্তি নেই। মেয়ের সামনে মাধ্যমিক। ওকে নিয়ে কোথায় যাব? মা হয়ে মেয়ের আর্থিক নিরাপত্তার কথা ভাবা কি অন্যায়? কিন্তু মহিলা হয়েও কাউন্সিলর আমার অবস্থা বুঝলেন না। উল্টে তাঁর সামনেই প্রোমোটার হুমকি দিলেন।’’ সুস্মিতা বলেন, ‘‘প্রোমোটার বাড়ি এসে যা করলেন, তার পরে তো মেয়েকে নিয়ে রাস্তায় বেরোতেই ভয় করছে।’’

সব অভিযোগ অস্বীকার করে অর্ধেন্দু বলেন, ‘‘আমি এখন ওই বাড়ির ৭৫ শতাংশের মালিক। কিন্তু, রূপকের স্ত্রী কোনও অবস্থায় বাড়ি ছাড়তে চাইছেন না। রূপক স্ত্রী ও মেয়েকে কিছু দেবে না বলেছে, তা ঠিক নয়। স্ত্রী যা চান, তা-ই দিতে রাজি রূপক। অনেক বার আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। তাই সমাধানের জন্য কাউন্সিলরকে নিয়ে গিয়েছিলাম। সব কথা রূপকের সঙ্গে হয়েছে। সুস্মিতাদেবী যা অভিযোগ করছেন, চিন্তাই করতে পারি না।’’

মহিলার অভিযোগকে ‘পাগলের প্রলাপ’ বলে মন্তব্য করেছেন কাউন্সিলর। তাঁর কথায়, ‘‘এক জন শিক্ষিত মহিলা কী ভাবে এমন আচরণ করেন বুঝি না। তিনি আর্থিক নিরাপত্তার যে কথা বলছেন, তা-ও ভিত্তিহীন। স্বামীর বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগও ঠিক নয়।’’

কিন্তু প্রোমোটার-বাড়ির মালিকের বিবাদে কাউন্সিলর যাবেন কেন?

অঞ্জনা বলেন, ‘‘প্রোমোটারের বিষয়ে জড়ানোর কোনও আগ্রহ নেই। রূপকের দাদা হীরকের চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন। প্রোমোটারও তিন বছর ধরে কাজ শুরু করতে পারছেন না। ওই পাড়ায় আমার বেড়ে ওঠা। পাড়ার মেয়ে হিসেবেই সমস্যার যাতে সুষ্ঠু সমাধান হয়, সেই চেষ্টা করি। প্রোমোটার বা আমি কেউই কটু কথা বলিনি। পাঁচ বছর পুরসভা চালিয়েছি। আমি এ সব করতে পারি?’’

পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Threat Promoter Councilor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE