Advertisement
০৯ ডিসেম্বর ২০২৪

পাঁচ টাকায় ভাত, পরিজনের পাশে ওঁরা

এই খাবার মিলবে মাত্র পাঁচ টাকায়। হাসপাতালে আসা দুঃস্থ রোগীর পরিজনদের কথা ভেবে গত তিন মাস ধরে সপ্তাহে এক দিন এই পরিষেবা দিচ্ছে ঠাকুরপুকুর এলাকার একটি পুজো কমিটি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শুভাশিস ঘটক
শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৮ ০৩:১৫
Share: Save:

ফুটপাতে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষারত অনেকে। কয়েক জন যুবক-যুবতী তাঁদের হাতে তুলে দিচ্ছেন ভাত-ডাল-তরকারির থালা। কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগের উল্টো দিকের ফুটপাতে প্রতি বৃহস্পতি বা শুক্রবার দুপুরে দেখা যায় এই ছবিই।

এই খাবার মিলবে মাত্র পাঁচ টাকায়। হাসপাতালে আসা দুঃস্থ রোগীর পরিজনদের কথা ভেবে গত তিন মাস ধরে সপ্তাহে এক দিন এই পরিষেবা দিচ্ছে ঠাকুরপুকুর এলাকার একটি পুজো কমিটি। ঠাকুরপুকুরে কমিটির রান্নাঘরেই তৈরি হচ্ছে খাবার। প্রায় ৩৫০ লোকের জন্য রান্না খাবার হাসপাতালে আনা হয় গাড়িতে। মাসে খরচ ৫০ হাজার টাকা, পুজো কমিটির তরফে জানালেন সঞ্জয় মজুমদার।

হঠাৎ এমন উদ্যোগ? কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘এক বন্ধুর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ক’দিন কাটিয়েছিলাম। দেখেছি, বহু রোগীর পরিজন বিস্কুট বা কলা-পাঁউরুটি খেয়ে কাটান। ঠিক করি, কিছু করতে হবে।” স্থির হয়, সপ্তাহে এক দিন পুজো কমিটির তহবিল থেকে ওঁদের জন্য দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা হবে।

এগিয়ে এসেছেন কয়েক জন ব্যবসায়ী বন্ধুও। এক জন প্রতি সপ্তাহে এক বস্তা আলু ও কিছু আনাজ পৌঁছে দেন। এলাকারই কয়েক জন ন্যূনতম মজুরিতে রান্না করে দিচ্ছেন। শালপাতা বা থার্মোকলের থালায় বিতরণ করা হয় খাবার। আশপাশ যাতে নোংরা না হয় সে জন্য পাতা বা থালা ভ্যাটে ফেলারও ব্যবস্থা রয়েছে। পুলিশের অনুমতি নিয়ে ফুটপাতে চলে পরিবেশন।

দুপুরে খাবারের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন মেদিনীপুরের প্রদীপ জানা। তাঁর দাদা হাসপাতালে ভর্তি। প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘এই ব্যবস্থায় সুবিধা হচ্ছে। দিনে তিন বার খেতে দেড়শো টাকা লাগে। সেখানে পাঁচ টাকায় এত কিছু! সপ্তাহের অন্য দিনেও এমন ব্যবস্থা হলে ভাল হত|’’ দায়িত্বে থাকা এক পুলিশকর্মীর কথায়, অনেকেই আমাদের কাছে ওই খাবার পরিবেশনের ব্যাপারে খোঁজ করে যান। তাঁদের পুজো কমিটির নম্বর দিয়ে দিই|

পাঁচ টাকাই বা কেন নেওয়া হবে? তাঁদের ‘দয়া’ নয়, সাহায্য করা হচ্ছে, এটা বোঝাতেই ন্যূনতম মূল্য স্থির হয়েছে বলে জানাচ্ছে কমিটি। ছেলের চিকিৎসা করাতে খাতরা থেকে এসেছেন ভাগচাষি রাজকুমার বিষয়ী। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতায় তো অনেক পুজো হয়। তাদের কয়েকটি যদি সপ্তাহে এক দিন করে এমন ব্যবস্থা রাখত!’’

এই আবেদন যে আসছে, তা মানছেন সদস্যেরা। সঞ্জয়বাবুর কথায়, ‘‘আমাদের একার পক্ষে তা সম্ভব নয়। তবে এ কাজে অন্য পুজো কমিটি এগিয়ে আসতে চাইলে আমরা তাদের পাশে আছি। সে ক্ষেত্রে পুরো বিষয়টা যাতে সুষ্ঠু পরিকল্পনা করে হয়, সেটাই সকলের লক্ষ্য থাকা উচিত।”

অন্য বিষয়গুলি:

Puja committee SSKM Patient Food Service
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy