—প্রতীকী চিত্র।
স্কুলের কাছে গ্যারাজ করা ছিল স্কুলবাস। তার ভিতর থেকে আসছিল একটি বাচ্চার কান্নার আওয়াজ। তা শুনে পথচলতি মানুষজন এসে দেখেন, স্কুলবাসের ভিতরে আটকে রয়েছে এক খুদে পড়ুয়া। বাসের দরজা লক করা। শিশুটি বাসের জানলায় ধাক্কা মারতে মারতে বলছে, ‘‘আমাকে বার করো।’’ শেষে কর্তব্যরত দুই ট্র্যাফিক সার্জেন্টের সহায়তায় ওই খুদে পড়ুয়াকে উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে খিদিরপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই পড়ুয়ার নাম মনুশ্রী রায়। তার বাড়ি শিবপুরের রামমোহন মুখার্জি লেনে। সে খিদিরপুর এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলে প্রি-কেজিতে পড়ে। রোজ স্কুলবাসে করেই যাতায়াত করে মনুশ্রী।
ঘটনার পরে এ দিন বিকেলে রামমোহন মুখার্জি লেনের ফ্ল্যাটে বসে মনুশ্রীর মা দেবশ্রী রায় বলেন, ‘‘অন্য দিনের মতো এ দিনও সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ শিবপুর মন্দিরতলায় মেয়েকে স্কুলবাসে তুলে দিয়ে এসেছিলাম। শুনেছি, বাসের মধ্যেই ও নাকি ঘুমিয়ে পড়েছিল। স্কুলের উল্টো দিকে বাসটি গ্যারাজ করে, দরজা লক করে দিয়ে চলে যান বাসচালক। ঘুম ভেঙে গিয়ে যখন মেয়ে দেখে বাসে কেউ নেই, তখন ও কাঁদতে শুরু করে। এক মহিলা সেই কান্নার আওয়াজ শুনে পুলিশে খবর দেন। এর পরে পুলিশ এসে মেয়েকে উদ্ধার করে।’’
দেবশ্রী জানান, তাঁকে স্কুল থেকে ফোন করে সব কথা জানানো হয়। বাস থেকে উদ্ধার করার পরে অবশ্য এ দিন ক্লাস করেছে মনুশ্রী। এখন অনেকটাই ঠিক আছে সে। তবে দেবশ্রীর কথায়, ‘‘বাসচালকদের ভরসায় মেয়েকে স্কুলে পাঠাই। সেখানে এমন ঘটলে তো মুশকিল। আরও বড় কোনও অঘটনও তো ঘটতে পারত।’’
পুলিশ জানিয়েছে, অরিত্র মুখোপাধ্যায় ও পলাশ হালদার নামে বিদ্যাসাগর ট্র্যাফিক গার্ডের দুই অফিসার ওই পড়ুয়াকে উদ্ধার করেন। দরজা লক থাকায় সেটি খোলা যাচ্ছিল না। শেষে জানলার কাচ কোনও রকমে তুলে সেখান দিয়ে বার করে আনা হয় মনুশ্রীকে। প্রায় আধ ঘণ্টা বাসে আটকে ছিল সে।
কিন্তু একটি শিশু বাসের মধ্যে থেকে গেল, সেটা চালকের চোখে পড়ল না? বাসচালক বলেন, ‘‘গত ২০ বছর ধরে এই কাজ করছি। কোনও দিন এমন ভুল হয়নি। বাচ্চাটা ঘুমিয়ে পড়েছিল। খেয়াল করিনি। ভবিষ্যতে এমন ভুল আর হবে না।’’ স্কুলের অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, বাসমালিকের থেকে ঘটনার রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy